নিজস্ব প্রতিবেদক।। তিন পার্বত্য জেলার বিভিন্ন স্থানে সেনাবাহিনী কর্তৃক কমপক্ষে ৪ জন নিরীহ জুম্মকে গ্রেফতার, জুম্মদের ২টি বাড়ি তল্লাসী ও ৩ জন জুম্মকে মারধরের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এছাড়া বান্দরবান জোনে অনুষ্ঠিত এক গোপন বৈঠকে পার্বত্য চুক্তি বাস্তবায়নের দাবিতে আন্দোলনরত ব্যক্তিবর্গ ও জনসংহতি সমিতির সদস্যদের বিরুদ্ধে মগপার্টিকে লেলিয়ে দেয়ার সিদ্ধান্ত হয় বলে জানা গেছে।
দীঘিনালায় ২ জনকে প্রহার
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে যে, আজ শুক্রবার (৪ ফেব্রুয়ারি) সকাল ৫:৩০ ঘটিকায় খাগড়াছড়ি জেলার দীঘিনালা উপজেলা বাবুছড়া ইউনিয়নের উল্টাছড়ি দজর পাড়ায় কথিত সন্ত্রাসী লেবাস দিয়ে একজন জুম্ম গ্রামবাসীর বাড়িকে লক্ষ্য করে সেনাবাহিনী অতর্কিতভাবে ১০-১৫ রাউন্ড গুলি ছুড়ে।
উল্লেখ্য যে, উল্টাছড়ি দজর পাড়ায় সেনাবাহিনী কর্তৃক অতর্কিত ব্রাশ ফায়ারের পর পরই উক্ত এলাকা থেকে রীনা বাপ ওরফে রিপন চাকমা (৪৫) এবং তার ছেলে কালায়্যা চাকমা (১৯)-কে আটক করে বেদম প্রহার করা হয়েছে। কালায়্যা চাকমা সবেমাত্র এসএসসি পরীক্ষা দিয়েছে বলে জানা গেছে।
এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত সেনাবাহিনী সেখানে অবস্থান করছে বলে জানা গেছে। ফলে উক্ত এলাকার জনমনে ব্যাপক আতঙ্ক বিরাজ করছে।
বাবুছড়া আর্মি ক্যাম্প সাবজোন কমাণ্ডার ওয়ারেন্ট অফিসার এনাম, জারুলছড়ি ক্যাম্প কমাণ্ডার ওয়ারেন্ট অফিসার ইমাম-এর নেতৃত্বে ঘটানাটি সংগঠিত হয়েছে বলে জানা গেছে।
জুরাছড়িতে ২টি বাড়ি তল্লাসী ও ১ জনকে মারধর
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে যে, গত বুধবার (২ ফেব্রুয়ারি) রাঙ্গামাটির জুরাছড়ি উপজেলাধীন বনযোগীছড়া জোনের অধীনে যক্ষা বাজার আর্মি ক্যাম্প, শিলছড়ি ক্যাম্প ও জোন সদর হতে একদল সেনা সদস্য যৌথভাবে জুরাছড়ির চকপতিঘাট, চুমাচুমি, ঘিলাতুলি ও সামিড়া এলাকায় টহল অভিযান পরিচালনা করে।
পরে সেনা সদস্যরা জুরাছড়ি ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের সামিড়া গ্রামে রাত আনুমানিক ৮.২৫ ঘটিকায় জ্যোতি রঞ্জন চাকমা, পিতা দয়াধন চাকমা ও সাবেন্দ্র চাকমা, পিতা অজ্ঞাত-এর বাড়ি ব্যাপক তল্লাশী করে। এরপর সেনা সদস্যরা একই গ্রামে রূপেন্টু চাকমা, পিতা বলুক্কে চাকমাকে ব্যাপক মারধর করে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
রাঙ্গামাটির সমতাঘাটে ৪ জনকে আটক
স্থানীয় সূত্রে জানা যায় যে, গত মঙ্গলবার (১লা ফেব্রুয়ারি) সকাল ৭:২০ ঘটিকার সময় সেনাবাহিনী কর্তৃক রাঙামাটি শহরের সমতাঘাট এলাকায় এক চা দোকান হতে ৪ ব্যক্তিকে আটক করা হয় বলে অভিযোগ পাওয়া যায়।
আটককৃতদের মধ্যে শশীদেয়ান পাড়ার ফুলেশ্বর চন্দ্র চাকমা নামে একজন প্রধান শিক্ষকের নাম পাওয়া গেছে। তবে বাকি তিনজনের মধ্যে রিজার্ভ বাজার থেকে শুকর ব্যবসায়ী জনৈক ত্রিপুরা, বাঘাছোলা মৌজার হেডম্যানের ছেলে বলে জানা গেছে।
তাদেরকে আটক করে ক্যাম্পে নিয়ে যাওয়া হয় এবং জিজ্ঞাসাবাদের পর ক্যাম্প থেকে পরে ছেড়ে দেয়া হয় বলে জানা গেছে।