
নিজস্ব প্রতিবেদক।। পার্বত্য চট্টগ্রাম আন্তর্জাতিক কমিশন (সিএইচটি কমিশন) লামা রাবার ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড কর্তৃক বান্দরবান জেলার লামা উপজেলায় ল্যাংকম কার্বারী পাড়ায় ম্রো জাতিসত্তার জনগণের ১০০ একর পরিমাণ জুমক্ষেতে আগুন দেওয়ার ঘটনার সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছে।
পার্বত্য চট্টগ্রাম আন্তর্জাতিক কমিশন (সিএইচটি কমিশন) লামা রাবার ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড কর্তৃক বান্দরবান জেলার লামা উপজেলায় ল্যাংকম কার্বারী পাড়ায় ম্রো জাতিসত্তার জনগণের ১০০ একর পরিমাণ জুমক্ষেতে আগুন দেওয়ার ঘটনার সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছে।
গতকাল ৩০ এপ্রিল ২০২২ এক বিবৃতিতে সংগঠনটির কো-চেয়ারপার্সন সুলতানা কামাল, এলসা স্ট্যামাটোপৌলো এবং মিরনা কানিংহ্যাম কেইন এই দাবি জানান।
তারা ঘটনার ব্যাপারে উদ্বেগ প্রকাশ করেন এবং অনতিবিলম্বে নিরপেক্ষ তদন্ত এবং ম্রো জাতিগোষ্ঠী ও তাদের জুমভূমির সুরক্ষা প্রদানের দাবি জানান।
কমিশন নেতৃবৃন্দ আরো বলেন, ‘সংবাদ মাধ্যমের বিবরণ মতে, গত ২৬ এপ্রিল লামা রাবার ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড-এর সাথে যুক্ত ব্যক্তিরা ম্রোদের জমি দখলের কৌশল হিসেবে তাদের আনুমানিক ১০০ একর জুমের ধান ক্ষেত ও ফলের বাগানে আগুন লাগিয়ে দেয়।
‘সাক্ষাতকারের ভিত্তিতে ডেইলী স্টার জানায় যে, লামা রাবার ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড দীর্ঘদিন ধরে বান্দরবানের লামা উপজেলাধীন সরই ইউনিয়নে ল্যাংকম কার্বারী পাড়া, জয়চন্দ্র ত্রিপুরা কার্বারী পাড়া এবং রনজেন কার্বারী পাড়া থেকে স্থানীয় ম্রো জনগণকে উচ্ছেদের চেষ্টা চালিয়ে আসছে। কোম্পানিটি ইতিমধ্যে ম্রোদের মালিকানাধীন ৩০০ একর জমি বেদখল করেছে বলে অভিযোগ রয়েছে এবং ম্রোরা প্রতিবাদ জানালে তাদের বিরুদ্ধে বেশ কিছু মামলা দেওয়া হয়েছে। প্রতিকারের জন্য গত ২০ মার্চ ২০২২ উপরোল্লেখিত এলাকার একদল ম্রো বান্দরবান জেলা প্রশাসকের অফিসের সামনে মানববন্ধনের আয়োজন করে তাদের ভূমি ও জীবিকা রক্ষার জন্য প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপের দাবি জানায়। ল্যাংকম ম্রো কার্বারী সাংবাদিকদের জানান যে, ম্রো সম্প্রদায়ের নেতারা পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রী বীর বাহাদুর উচৈচিং-এর সাথেও সাক্ষাত করেন এবং তাদের সুরক্ষা ও নিরাপত্তা প্রদানের দাবি জানান। তবে স্থানীয় প্রশাসন ম্রো জনগণ ও তাদের জমি রক্ষার জন্য কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি।’

পার্বত্য চট্টগ্রামে কর্পোরেট সংস্থা কর্তৃক অব্যাহত ও ব্যাপক ভূমি বেদখল এবং অগ্নি হামলাসহ সহিংস কর্মকান্ডে এবং আদিবাসী জনগণকে সুরক্ষা ও নিরাপত্তা প্রদানে সরকারের বারংবার ব্যর্থতায় পার্বত্য চট্টগ্রাম কমিশন উদ্বেগ জানিয়েছে।
বিবৃতিতে তারা বলেন, ‘পার্বত্য চট্টগ্রামে প্রভাবশালী মহল কর্তৃক প্রতিনিয়ত ভূমি বেদখলের ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে দেশের ২৪ জন প্রখ্যাত নাগরিক সম্প্রতি জানিয়েছেন যে, গত তিন দশকে পার্বত্য চট্টগ্রামে আদিবাসী সম্প্রদায়ের জমির মালিকানা ৫১ শতাংশ কমেছে।’
কমিশন পার্বত্য চট্টগ্রামে ভূমি বেদখল বন্ধে তড়িৎ পদক্ষেপ গ্রহণ, লামা রাবার ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড-এর বিরুদ্ধে ম্রোদের জমি দখলের অভিযোগের নিরপেক্ষ তদন্ত শুরু করা এবং জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবী জানিয়েছে।
কমিশন জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যানের প্রতিও এই মর্মে আহ্বান জানায় যে, কমিশন যাতে আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে অবিলম্বে খাদ্য সাহায্য ও ক্ষতিপূরণ দিতে সরকারকে অনুরোধ করে।