কাপ্তাইয়ে সেনা কম্যান্ডার কর্তৃক অস্ত্র গুঁজে দিয়ে নিরীহ জুম্মকে আটকের চেষ্টা, এ নিয়ে কম্যান্ডার ও সেনা সদস্যদের মধ্যে ঝগড়া
২৬ আগস্ট ২০২১, রাঙ্গামাটি:
আজ রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলাধীন কাপ্তাই উপজেলার রাইখালী ইউনিয়নে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর এক কম্যান্ডার কর্তৃক এক নিরীহ জুম্মকে অস্ত্র গুঁজে দিয়ে আটকের চেষ্টা করার অভিযোগ পাওয়া যায়। তবে ওই ব্যক্তির পরিবারের সদস্য ও প্রতিবেশীরা প্রতিবাদ করলে এবং বিশেষ করে সেনাদলটির অন্যান্য সদস্যরাও কম্যান্ডারের সাথে দ্বিমত পোষণ করলে কম্যান্ডার ওই ব্যক্তিকে ছেড়ে দিতে বাধ্য হন। কিন্তু এসময় ওই সেনা কম্যান্ডার ও সেনাসদস্যদের মধ্যে ব্যাপক বাকবিতন্ডা ও ধস্তাধস্তি হয় বলে জানা গেছে।
আটকের চেষ্টার শিকার ওই জুম্ম গ্রামবাসী হলেন মংজিক্যে মারমা (৩৫), পীং-মৃত অংচাপ্রু মারমা, গ্রাম-ডুলুছড়ি পাড়া, রাইখালী ইউনিয়ন। তিনি পেশায় একজন স্থানীয় কাঠব্যবসায়ী।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, আজ ২৬ আগস্ট ২০২১ ভোর আনুমানিক ৪:৩০ টার দিকে কাপ্তাই সেনা জোনের অধীন রাইখালী ইউনিয়নের নারানগিরি মুখ পাড়া নামক স্থানে নতুন স্থাপিত সেনা ক্যাম্পের দায়িত্বরত সুবেদার মো: নাজমুল এর নেতৃত্বে ২০ জনের একটি সেনাদল পার্শ্ববর্তী ডুলুছড়ি পাড়া গ্রামে টহল অভিযানে যায়।
এসময় সেনাদলটি মংজিক্যে মারমার বাড়ি ঘেরা করে বাড়িতে ব্যাপক তল্লাশি চালায়। বাড়িতে অবৈধ কোনোকিছু না পেয়েও সুবেদার মো: নাজমুলের নির্দেশে সেনা সদস্যরা মংজিক্যে মারমাকে আটক করে তার দুই হাত রশি দিয়ে বাধে। এতে মংজিক্যে মারমার পরিবারের লোকজন ও প্রতিবেশীরা সেনা সদস্যদের উদ্দেশ্য করে ‘সাধারণ নিরীহ নিরপরাধ মানুষকে আপনারা কেন আটক করছেন’ বলে প্রতিবাদ করেন।
তখনই সুবেদার মো: নাজমুল তাড়াহুড়ো করে নিজের ব্যাগ থেকে দেশীয় তৈরি একটি এল জি (পাইপ গান) বের করে সেটাসহ আবারও তল্লাশি চালানোর নামে বাড়ির ভেতরে প্রবেশ করতে উদ্যত হন। ঐ বন্দুক গুঁজে দিয়ে মংজিক্যে মারমাকে গ্রেপ্তার করার পরিকল্পনা ধরতে পেরে গ্রামবাসীরা যেমনি প্রতিবাদ করেন, তেমনি অন্যান্য সেনা সদস্যরাও তা প্রতিবাদ করে সুবেদার মো: নাজমুলকে নিবৃত্ত করার চেষ্টা করেন। এসময় সুবেদার মো: নাজমুল প্রতিবাদকারী সেনা সদস্যদের উপর চটে গিয়ে তাদের গালিগালাজ করেন এবং এক পর্যায়ে উভয়পক্ষ বাকবিতন্ডায় জড়িত হয়ে তুমুল ঝগড়া ও ধস্তাধস্তি করেন। এরপর সেনা সদস্যরা আটককৃত ব্যক্তিকে ছেড়ে সেনা ক্যাম্পে ফিরে যায়।
আরো জানা গেছে, সুবেদার মো: নাজমুল এর নেতৃত্বে টহল অভিযানে যাওয়া সেনা সদস্যরা পরে কাপ্তাই সেনা জোনের জোন কম্যান্ডারকে ফোন করে বিষয়টি অবহিত করেন। এর পরপরই দুপুর ২:০০ টার দিকে সেনাবাহিনীর একটি গাড়ি এসে সুবেদার মো: নাজমুলকে জোন হেডকোয়ার্টারে নিয়ে গেছে বলে জানা যায়।