২৮ এপ্রিল ঐতিহাসিক লোগাঙ পদযাত্রা দিবস

পার্বত্য চট্টগ্রামে আন্দোলনের ইতিহাসে এই দিন

পদযাত্রা শুরুর দিকে,২৮ এপ্রিল ১৯৯২, কড়ইতলা, খাগড়াছড়ি। ফাইল ছবি


নিউজ ডেস্ক ।।
আজ ২৮ এপ্রিল পার্বত্য চট্টগ্রামের আন্দোলনের ইতিহাসে এক অবিস্মরণীয় দিন। ঐতিহাসিক লোগাঙ পদযাত্রা দিবস। ১৯৯২ সালের এই দিনে লোগাঙ গণহত্যার প্রতিবাদে খাগড়াছড়ি সদর থেকে লোগাঙ অভিমুখে ঐতিহাসিক মৌন পদযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়। পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের নেতৃত্বে এ পদযাত্রায় হাজার হাজার ছাত্র-জনতা অংশ নেন।

লোগাঙ গণহত্যার প্রতিবাদ ও শহীদদের প্রতি সম্মান জানাতে ১৯৯২ সালের ২৮ এপ্রিল খাগড়াছড়ি সদরের কড়ইতলা (খাগড়াছড়ি সরকারি কলেজ প্রাঙ্গন) থেকে শুরু হয় লোগাঙ অভিমুখে এই পদযাত্রা। তিন পার্বত্য জেলার হাজার হাজার ছাত্র-জনতা এই পদযাত্রায় সামিল হন। ঢাকা থেকে আগত প্রগতিশীল রাজনৈতিক দলের নেতা, ছাত্র নেতা, সাংবাদিক, মানবাধিকার কর্মি ও লেখকরাও জুম্ম জনগণের আন্দোলনের সাথে সংহতি জানিয়ে এই পদযাত্রায় অংশ নেন। তাদের এই অংশগ্রহণ জুম্ম জনগণের মনে আরো বেশী শক্তি ও সাহস সঞ্চার করে।

পদযাত্রা এগুচ্ছে। ছবিটি ভকেশনাল ইন্সটিটিউটের সন্নিকট থেকে তোলা,২৮ এপ্রিল ১৯৯২। ফাইল ছবি

সেদিন সকল রক্ত চক্ষু ও বাধা-বিপত্তি উপেক্ষা করে ছাত্র-জনতা পদযাত্রা সহকারে হত্যাযজ্ঞস্থল লোগাঙ পোড়া ভিটায় গিয়ে অস্থায়ী স্মৃতিসৌধ নির্মাণ করে পুস্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে শহীদদের প্রতি সর্বোচ্চ সম্মান জানায় এবং ধর্মীয় বিধান মতে শহীদদের শেষকৃত্য সম্পন্ন করে দেয়। এতে পার্বত্য চট্টগ্রামের লড়াই সংগ্রাম এক নতুন মাত্রা লাভ করে।

পদযাত্রার খাগড়াছড়ি সদরের স্বনির্ভর এলাকা অতিক্রম করছে। ফাইল ছবি

প্রসঙ্গত, ১৯৯২ সালের ১০ এপ্রিল রাষ্ট্রীয় বিভিন্ন বাহিনীর প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় সেটলার বাঙালিরা খাগড়াছড়ির পানছড়ি উপজেলার লোগাঙ গুচ্ছগ্রামে পাহাড়িদের ওপর বর্বর গণহত্যা সংঘটিত করে। সেটলাররা দা, বটি, কুড়াল দিয়ে পাহাড়িদের উপর আক্রমণ করে এবং রাষ্ট্রীয় বাহিনীর সদস্যরা জুম্মদের উপর নির্বিচারে গুলিবর্ষণ করে। এতে কয়েকশত পাহাড়ি হতাহত হয়। অনেকে নিঁখোজ হয়ে যায়। সেদিন শিশু, বৃদ্ধ, নারী কেউই রেহাই পায়নি। অগ্নিসংযোগ করে ছাই করে দেওয়া হয় পাহাড়িদের ৭ শতাধিক ঘরবাড়ি। দীর্ঘ তিন দশকেও এ গণহত্যার বিচার হয়নি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *