
নিজস্ব প্রতিবেদক।। ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ) বান্দরবানের লামা উপজেলার সরই ইউনিয়নে লামা রাবার ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড নামের কোম্পানি কর্তৃক লাগানো আগুনে জুমের জমি, বাগান-বাগিচা ও জুমের খেত পুড়ে গিয়ে চরম ক্ষতিগ্রস্ত ও খাদ্য সংকটে থাকা ৩৭ ম্রো ও ত্রিপুরা পরিবারকে নগদ ১ লাখ ৮৫ হাজার টাকা সহায়তা প্রদান করেছে।
আজ শুক্রবার (১৩ মে ২০২২) ইউপিডিএফ’র বান্দরবান জেলা ইউনিটের প্রধান সমন্বয়ক ছোটন কান্তি তঞ্চঙ্গ্যার নেতৃত্বে ৭ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল ঘটনাস্থলে গিয়ে এ নগদ অর্থ সহায়তা প্রদান করেন। এ সময় প্রতিনিধি দলটি ক্ষতিগ্রস্ত গ্রামবাসীদের সাথে কুশল বিনিময় করেন এবং তাদের বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে খোঁজ খবর নেন।
রেংয়াঙ ম্রো পাড়ার কার্বারী রেংয়াঙ ম্রো ও জয়চন্দ্র ত্রিপুরা পাড়ার কার্বারী জয়চন্দ্র ত্রিপুরার উপস্থিতিতে ক্ষতিগ্রস্ত ৩৭ পরিবারের প্রত্যেককে ৫,০০০ টাকা করে মোট ১ লাখ ৮৫ হাজার টাকা প্রদান করা হয়।


এ সময় উপস্থিত দুই কার্বারী ও ক্ষতিগ্রস্তরা ইউপিডিফকে ধন্যবাদ জানান। তারা রাবার কোম্পানি কর্তৃক তাদের জুমের জমি, বাগান-বাগিচা, খেত পুড়িয়ে দেয়ার ঘটনা তুলে ধরেন এবং তাদের দুঃখ-দুর্দশার কথা ইউপিডিএফ’র প্রতিনিধি দলকে অবহিত করেন।
ইউপিডিএফ নেতা ছোটন কান্তি তঞ্চঙ্গ্যা বলেন, আমাদের পার্টি ভূমি বেদখল ও অন্যায় অবিচারের বিরুদ্ধে সর্বদা সোচ্চার রয়েছে। লামা রাবার ইন্ডাস্ট্রিজের এই অমানবিক কাজের জন্য আমরা ধিক্কার জানাই।

তিনি ঐক্যবদ্ধভাবে ভূমি দস্যুদের মোকাবিলা করার আহ্বান জানান এবং ইউপিডিএফ সবসময় তাদের পাশে থাকবে বলে ক্ষতিগ্রস্তদের আশ্বস্ত করেন।
ছোটন কান্তি তঞ্চঙ্গ্যা অবিলম্বে রাবার ইন্ডাস্ট্রিজের সকল কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়া ও জুম ভূমিতে আগুন দেয়ার ঘটনায় জড়িত সকলকে গ্রেফতার ও শাস্তির দাবি করেন।
প্রতিনিধি দলে আরো ছিলেন পার্বত্য চট্টগ্রাম নারী সংঘের চট্টগ্রাম মহানগর সভাপতি রেশমি মারমা, পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের কেন্দ্রীয় অর্থ সম্পাদক সমর চাকমা, হিল উইমেন্স ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সদস্য দয়া সোনা চাকমা ও জেসি চাকমা এবং গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের কেন্দ্রীয় সদস্য মংপ্রু হ্লা মারমা ও মন্টু মারমা।

উল্লেখ্য, গত ২৬ এপ্রিল ২০২২ লামা রাবার ইন্ডাস্ট্রিজের লোকজন বহিরাগত শ্রমিক নিয়ে এসে লামা উপজেলার সরই ইউনিয়নের ল্যাংকম কার্বারী পাড়া, জয়চন্দ্র কার্বারী পাড়া এবং রেংয়াঙ ম্রো কার্বারী পাড়ায় বসবাসরত ম্রো ও ত্রিপুরা গ্রামবাসীদের বংশপরম্পরায় ভোগদখলীয় জুমের জমিতে আগুন লাগিয়ে দেয়। এতে গ্রামবাসীদের বাগান-বাগিচা, জুমের খেত, বাগান বাগিচা, প্রাকৃতিক বন, বন্য প্রাণী পুড়ে যায়। এর ফলে উক্ত গ্রামবাসীরা বর্তমানে চরম খাদ্য সংকটে ভুগছেন।
এছাড়া কোম্পানির লোকজন ছড়ার পানিও নষ্ট করে দেয়, ফলে সেখানে পানি সংকটও তীব্র আকার ধারণ করেছে।
এর আগে ৯ এপ্রিল কোম্পানির লোকজন উক্ত জমিতে লাঠিসোটা ও ধারালো অস্ত্রশস্ত্রসহ বহিরাগত লোকজন নিয়ে এসে জোরপূর্বকভাবে জঙ্গল পরিষ্কার করে।