মানিকছড়িতে ইউপিডিএফের ছাত্র-যুব সম্মেলন

খাগড়াছড়ির মানিকছড়িতে ইউপিডিএফের স্থানীয় ইউনিটের উদ্যোগে ছাত্র-যুব সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে।

মঙ্গলবার (১২ জানুয়ারি ২০২১) মানিকছড়ি ইউনিয়নে এ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এতে বিভিন্ন এলাকার শত শত ছাত্র-ছাত্রী ও যুবক-যুবতী অংশগ্রহণ করেন।

‘জাতির দু্র্দিনে যে তরুণ নিষ্কর্মা হয়ে থাকে সে তরুণ নয়’ এই শ্লোগানে এবং ‘আসুন অস্তিত্ব রক্ষার মূলমন্ত্র পূর্ণস্বায়ত্তশাসন প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে ঝঁপিয়ে পড়ি’ এই আহ্বানে অনুষ্ঠিত ছাত্র-যুব সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন ইউপিডিএফ’র দীঘিনালা ইউনিটের প্রধান সংগঠক মিল্টন চাকমা।

ইউপিডিএফ সংগঠক সুজয় চাকমার সঞ্চালনায় সম্মেলনে আরও বক্তব্য রাখেন ইউপিডিএফের কেন্দ্রীয় সদস্য সচিব চাকমা, পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের সাবেক সভাপতি ও ইউপিডিএফ সংগঠক সুমেন চাকমা, পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের জেলা কমিটির দপ্তর সম্পাদক সুমন চাকমা ও মানিকছড়ি থানা শাখার সভাপতি অনন্ত চাকমা এবং ডিওয়াইএফ থানা কমিটির সভাপতি রিটেন চাকমা।

সুমেন চাকমা বলেন, একটি জাতির ছাত্র-যুবকরা হলো সবচেয়ে মুল্যবান সম্পদ। যে জাতির ছাত্র যুব সমাজ রাজনৈতিক, সামাজিকভাবে সচেতন হয়, জাতির প্রয়োজনে ঝঁপিয়ে পড়তে সদপ্রস্তুত থাকে সেই জাতিকে কেউ দমিয়ে রাখতে পারে না।

তিনি বলেন, আজকে শাসকগোষ্ঠী ও তাদের পদলেহী চরেরা জুম্ম জাতির বিরুদ্ধে যেভাবে কাজ করছে তার জন্য তাদেরকে অবশ্যই জনগণের কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হবে। ৪০ বছর পরও যদি বাংলাদেশে রাজাকারদের ফাঁসি হতে পারে তাহলে পার্বত্য চট্টগ্রামের নব্য রাজাকারদেরও  বিচার হবে।

তিনি আরও বলেন, যুব সমাজ আজ মদ গাজা ইয়াবা আসক্ত হয়ে ধ্বংসের পথে। সুকৌশলে সরকার আমাদের ছাত্র-যুব সমাজকে মাদকাসক্ত করে ভবিষ্যত প্রজম্মকে নষ্ট করে দেয়ার গভীর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে। সরকার চাই আমরা যেন কোন প্রতিবাদ না করি। রাজনৈতিক ভাবে সচেতন হতে না পারি। তাই যুব সমাজকে সর্তক থাকতে হবে। 

তিনি উপস্থিত ছাত্র-যুবকদের উদ্দেশ্যে বলেন, সমাজ, দেশ-জাতির জন্য কাজ করতে পারাই পৃথিবীর সর্বোৎকৃষ্ট কাজ এবং আমরা তাই করবো।

ইউপিডিএফের কেন্দ্রীয় নেতা সচিব চাকমা তার বক্তব্যে বলেন, মানব জীবনের বয়স একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। তার মধ্যে ছাত্র জীবন ও যৌবন কালই বেশী গুরুত্বপূর্ণ। এই সময়ে যা ইচ্ছা তাই করা যায়। অসাধ্যকে সাধন করা সম্ভব। নিজের মাতৃভূমিকে রক্ষা করা, মা-বোনদের ইজ্জত রক্ষা করা আমাদের নৈতিক দায়িত্ব। আর এক্ষেত্রে ছাত্র যুব সমাজকেই অগ্রগামী হয়ে এগিয়ে আসতে হবে।

তিনি ছাত্র-যুবকদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে জুম্ম জনগণের উপর সকল অন্যায়-অবিচারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ-প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। বিনা প্রতিবাদে, বিনা প্রতিরোধে আমরা যেন কোন কিছুকে ছেড়ে না দিই।

সচিব চাকমা আরও বলেন, সাধনা টিলা, চিম্বুক, সাজেক কেড়ে নেয়ার পাঁয়তারা চলছে। এর বিরুদ্ধে গণপ্রতিরেধ গড়ে তুলতে হবে। আমাদের পার্টিতে ছাত্রদের জন্য পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ, যুবকদের জন্য গণতান্ত্রিক যুব ফোরাম রয়েছে। এই সংগঠনের সাথে যুক্ত হয়ে পার্টিকে শক্তিশালী করে বৃহত্তর আন্দোলনের জন্য প্রস্তুত হতে হবে।

এ সময় তিনি উপস্থিত ছাত্র-যুবকদেরকে মুষ্টিবদ্ধ হাতে নিজেদের ভিটেমাটি রক্ষা এবং মা-বোনদের ইজ্জত-সম্ভ্রম রক্ষার শপথ বাক্য পাঠ করান।

সভাপতি মিল্টন চাকমা তার বক্তব্যে বলেন, সম্মেলনে ব্যানার-ফেস্টুনের শ্লোগানগুলো ধারণ করে আমরা যদি কাজ করতে পারি তাহলে আমাদেরকে কেউ রুখতে পারবে না। তিনি জাতীয় অস্তিত্ব রক্ষার আন্দোলনে সক্রিয় অংশগ্রহণের জন্য উপস্থিত ছাত্র-যুবকদের প্রতি আহ্বান জানান।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *