বাংলাদেশ সরকার যুক্তরাজ্যের গ্লাসগোতে চলমান বিশ্ব জলবায়ু সম্মেলেনে গ্লাসগো লিডার্স ডিক্লারেশন অন ফরেস্ট এণ্ড ল্যান্ড ইউজ নামক ঘোষণাপত্রে স্বাক্ষর করেছে।
উক্ত সম্মেলনে বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলের সদস্য এবং সরকারের পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মোস্তফা কামাল গতকাল ৮ নভেম্বর স্বাক্ষরের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, ‘এনডিসি গত ২৬ আগষ্ট ২০৩০ সালের মধ্যে বন রক্ষা, বনায়ন ও বন বৃদ্ধিকরণে বাংলাদেশ সরকারের অঙ্গীকার সম্বলিত একটি সম্মতিপত্র জাতিসংঘের ফ্রেমওয়ার্ক কনভেনশন অন ক্লাইমেট চেঞ্জ-এর ওয়েবসাইটে তুলে দিয়েছিল। কিন্তু সেটা ঠিক সময়ে আপলোড হয়নি, সেকারণে বাংলাদেশ বন বিনাশ প্রক্রিয়া বন্ধে আন্তর্জাতিক উদ্যোগের সাথে নেই বলে রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছে, যা আদতে সত্য নয়।’
তিনি বলেন, যেহেতু অন্য দেশগুলো এ ব্যাপারে ঐক্যমতে পৌঁছেছে, তাই বাংলাদেশ তার সাথে সংহতি প্রকাশ করেছে। সিস্টেম জনিত ক্রটির জন্য ইউএনএফসিসি-র ওয়েবসাইটে প্রকাশিত স্বাক্ষরকারী দেশগুলোর প্রথম তালিকায় বাংলাদেশের নাম ওঠেনি।
ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ) নেতা সচিব চাকমা গ্লাসগো লিডার্স ডিক্লারেশন অন ফরেস্ট এণ্ড ল্যাণ্ড ইউজ-এ স্বাক্ষর করার জন্য বাংলাদেশ সরকারকে সাধুবাদ জানিয়েছেন।
তিনি আশা প্রকাশ করে বলেন, সরকার পার্বত্য চট্টগ্রামে বন, পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য রক্ষায় কার্যকর ভূমিকা পালন করবে এবং বন ও প্রাকৃতিক পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর রাস্তা তৈরি থেকে বিরত থাকবে।
বিশেষ করে পানছড়ি থেকে নাড়েইছড়ি এবং বাবুছড়ার ধনপাদা থেকে নাড়েইছড়ি এবং অন্যান্য সীমান্ত সংলগ্ন এলাকায় যেসব রাস্তা এখন তৈরি করা হচ্ছে সেগুলো বনের জন্য অত্যন্ত ক্ষতির কারণ হবে। এ রাস্তাগুলো হলে কাচালং রিজার্ভ এবং অন্যান্য বনগুলো আর থাকবে না। কারণ অভিজ্ঞতায় দেখা গেছে যে, যেদিকে পাকা সড়ক নির্মাণ করা হয়েছে, সেদিকের বন কয়েক বছরের মধ্যেই উজার হয়ে গেছে। এজন্য এসব এলাকায় রাস্তা নির্মাণ সম্পূর্ণ বন্ধ রাখতে হবে।
ইউপিডিএফ নেতা বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে একমাত্র তাদের দলই বন রক্ষা করতে সক্রিয়ভাবে কাজ করছে।
বন রক্ষা করতে গিয়ে অনেক সময় সাধারণ জনগণের সাথেও তাদের বেশ ভুল বোঝাবুঝি হয় বলে তিনি জানান। এ প্রসঙ্গে তিনি গত কয়েক বছর আগে মাটিরাঙ্গায় কয়েক পরিবার পাহাড়িকে জুম চাষ না করে বিভিন্ন ফলদ বাগান করতে উৎসাহিত করার পার্টিগত উদ্যোগের বিষয়টি উল্লেখ করেন।
‘অথচ তারা পার্টিকে ভুল বোঝে, অথবা তাদেরকে একটি মহল রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার করে পার্টির বিরুদ্ধে উস্কে দেয়। এমনকি সরকারের কিছু সংস্থার লোকও এতে জড়িত ছিল’ বলে তিনি উল্লেখ করেন।
সচিব চাকমা বলেন, সরকার যদি আন্তরিকভাবে চায় এবং সহযোগিতা দেয় তাহলে পার্বত্য চট্টগ্রামে বন রক্ষা কঠিন হবে না।
সেগুনের মতো পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর বাগান সৃজনে লোকজনকে উৎসাহিত না করতে প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, সরকারের বিভিন্ন মহলের কিছু কিছু কাজ বন রক্ষার বদলে বন ধ্বংসে ভুমিকা রাখে, সে সব বন্ধ করতে হবে।