পার্বত্য চট্টগ্রামের চার গণতান্ত্রিক সংগঠন আজ বুধবার (২৯ এপ্রিল ২০২০) এক বিবৃতিতে দীঘিনালা উপজেলার বাবুছড়া বাজারে অবস্থানরত সশস্ত্র সন্ত্রাসী ও গতকাল বানছড়া গ্রামে ইউপিডিএফ সদস্যসহ দুই ব্যক্তিকে হত্যার ঘটনার সাথে জড়িতদের অবিলম্বে গ্রেফতার করে তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়ার জন্য সরকারের প্রতি দাবি জানিয়েছেন।
ইউনাইটেড ওয়ার্কার্স ডেমোক্রেটিক ফ্রন্টের সভাপতি সচিব চাকমা, গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের সভাপতি অংগ্য মারমা, হিল উইমেন্স ফেডারেশনের সভাপতি নিরূপা চাকমা ও পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের সভাপতি বিপুল চাকমা উক্ত যৌথ বিবৃতিতে আরও বলেন, ‘গত ১৮ মার্চ থেকে ১০-১২ জনের একটি সশস্ত্র সন্ত্রাসী দল বাবুছড়া বাজারে জনৈক সেটলার বাঙালির বাসায় অবস্থান করে আসছে। তারা সেখানে বসে বিভিন্ন জনকে হুমকি দিযে ডেকে মোটা অংকের টাকা আদায় করছে। মাত্র কয়েক দিনে তারা এভাবে আনুমানিক ২০-২৫ লক্ষ টাকা আদায় করেছে।’
একটি বিশেষ স্বার্থান্বেষী মহল রাজনৈতিক হীন উদ্দেশ্যে এই কুখ্যাত খুনী সন্ত্রাসীদের মদদ দিচ্ছে অভিযোগ করে নেতৃবৃন্দ বলেন, ‘সন্ত্রাসীরা যেখানে থাকে সেখান থেকে মাত্র কয়েক শ’ গজ দূরে একটি সেনা চেকপোস্ট ও একটি পুলিশ ক্যাম্প রয়েছে।’
কিন্তু তারপরও সন্ত্রাসীরা কিভাবে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের নাকের ডগায় বেপরোয়া চাঁদাবাজি, প্রকাশ্য হুমকি ও সশস্ত্র মহড়া এবং খুনের ঘটনা ঘটাতে পারে নেতৃবৃন্দ সরকার ও প্রশাসনের কাছে সে প্রশ্ন করেন।
তারা সন্ত্রাসীদের আশ্রয়-প্রশ্রয়দাতা উক্ত সেটলারকে (তিনি বাবুছড়ায় কম্পিউটার মেরামত করেন) গ্রেফতারপূর্বক তার বিরুদ্ধেও আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান।
গতকালের বানছড়া হত্যাকাণ্ডের দায় অবশ্যই স্থানীয় সামরিক ও বেসামরিক প্রশাসনসহ সরকারকে নিতে হবে মন্তব্য করে চার সংগঠনের নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, ‘বাবুছড়ায় সন্ত্রাসীদের আশ্রয়-প্রশয় ও মদদ দেয়া না হলে তারা উক্ত হত্যাকাণ্ড ঘটাতে পারতো না।’
তারা পার্বত্য চট্টগ্রামে চলমান অশান্তি, রক্তাক্ত সংঘাত ও সহিংসতার জন্য কায়েমী স্বার্থান্বেষী মহলকে দায়ি করেন এবং বলেন, তারা একদিকে ‘সন্ত্রাস ও চাঁদাবাজীর’ বিরুদ্ধে গলা ফুলিয়ে চিৎকার করে জনগণের অধিকারের জন্য আন্দোলনরত গণতান্ত্রিক সংগঠনগুলোর নেতাকর্মী ও সমর্থকদের ওপর ফ্যাসিস্ট কায়দায় বর্বর দমনপীড়ন চালাচ্ছে, অন্যদিকে রাজনৈতিক হীন উদ্দেশ্যে সশস্ত্র সন্ত্রাসী ও খুনীদের আশ্রয় ও মদদ দিয়ে যাচ্ছে।
নেতৃবৃন্দ অভিযোগ করে বলেন, ‘দীঘিনালায় পাহাড়িদের নিজেদের মধ্যে সংঘাত বাঁধিয়ে দিয়ে ব্যস্ত রেখে সেই ফাঁকে সাধনাটিলার জমি বেদখলের হীন উদ্দেশ্যে সশস্ত্র সন্ত্রাসীদেরকে বাবুছড়া বাজারে নিয়ে আসা হয়েছে।’
ইতিপূর্বে অনেকবার উক্ত জমি বেদখলের ষড়যন্ত্র ও চেষ্টা ব্যর্থ হওয়ার পর কায়েমী স্বার্থবাদী মহলটি বর্তমানে এই পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে বলে তারা মন্তব্য করেন।
নেতৃবৃন্দ সাধনাটিলার জমি বেদখল ও সেখানে থাকা বনবিহার ধ্বংসের নতুন ষড়যন্ত্র সম্পর্কে বিহারের দায়ক-দায়িকাসহ এলাকার সকল স্তরের জনগণকে সতর্ক থাকার অনুরোধ জানান।