দীঘিনালা ইউনিয়নে ইউপিডিএফ’র ছাত্র-যুব সম্মেলন

দীঘিনালা ইউনিয়নে ইউপিডিএফ’র ছাত্র-যুব সম্মেলন
আদিবাসীর নিউজ
সোমবার,২২ ফেব্রুয়ারি ২০২১
দীঘিনালা প্রতিনিধি।।
 খাগড়াছড়ির দীঘিনালা ইউনিয়নে ছাত্র-যুব সম্মেলন করেছে ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট(ইউপিডিএফ)।
আজ সোমবার (২২ ফেব্রুয়ারি ২০২১) ইউপিডিএফ’র দীঘিনালা ইউনিট এই সম্মেলনের আয়োজন করে।
অধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে আত্মবলিদানকারী শহীদদের স্মরণে দাড়িয়ে ১ মিনিট নিবরতা পালনের পর সংগ্রামী গান পরিবেশনের মাধ্যমে সকাল সাড়ে ১১টায় সম্মেলন শুরু হয়।

‘জাতির দূর্দিনে যে তরুণ নিষ্কর্মা হয়ে থাকে সে তরুণ নয়, আসুন অস্তিত্ব রক্ষার মূলমন্ত্র পূর্ণস্বায়ত্তশাসন প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়ি’ এই শ্লোগানে অনুষ্ঠিত সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন ইউপিডিএফ’র দীঘিনালা ইউনিটের সমন্বয়ক মিল্টন চাকমা। এতে প্রধান আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইউপিডিএফ’র কেন্দ্রীয় সদস্য সচিব চাকমা।

সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে আরো বক্তব্য রাখেন গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক জিকো ত্রিপুরা, হিল উইমেন্স ফেডারেশনের খাগড়াছড়ি জেলা আহ্বায়ক এন্টি চাকমা, গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের দীঘিনালা উপজেলা শাখার সভাপতি রিটেন চাকমা ও বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের দীঘিনালা উপজেলা শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক গৌতম চাকমা।
সম্মেলনে প্রধান আলোচক সচিব চাকমা বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে বর্তমানে এক ক্রান্তিকাল চলছে। শাসকগোষ্ঠীর নিপীড়ন-নির্যাতন আগের চেয়ে আরো ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। ভূমি বেদখল, নারী নির্যাতন, অন্যায়ভাবে গ্রেফতার করে মিথ্যা মামলা দিয়ে জেলে প্রেরণ, বিচার বহির্ভুত হত্যা, তল্লাশির নামে হয়রানি ইত্যাদি এখন পার্বত্য চট্টগ্রামে নিত্যদিনের ঘটনায় পরিণত হয়েছে। এর থেকে মুক্তির জন্য আন্দোলনের কোন বিকল্প নেই। আর আন্দোলনে ছাত্র-যুব সমাজকে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করতে হবে।
তিনি পাহাড়িদের অস্তিত্ব রক্ষার জন্য পূর্ণস্বায়ত্তশাসনের কোন বিকল্প নেই উল্লেখ করে বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামের সমস্যা একটি রাজনৈতিক সমস্যা। পার্বত্য চুক্তির মাধ্যমে এই সমস্যার সমাধান না হয়ে বরং আরো জটিল আকার ধারণ করেছে। এখন সরকার চুক্তিকে পাশ কাটিয়ে কথিত উন্নয়নের নামে পাহাড়িদের ভূমি বেদখলের মহোৎসবে মেতে উঠেছে।
তিনি পূর্ণস্বায়ত্তশাসন প্রতিষ্ঠার আন্দোলনকে আরো গতিশীল ও জোরদার করার জন্য ছাত্র-যুব সমাজকে এই আন্দোলনে সামিল হওয়ার আহ্বান জানান।
জিকো ত্রিপুরা বলেন, একটা আন্দোলন এগিয়ে নেয়ার জন্য ছাত্র-যুব সমাজের অংশগ্রহণ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বিশ্বের প্রতিটি সফল আন্দোলনে ছাত্র-যুবকরাই সামনের সারিতে ছিলেন। পার্বত্য চট্টগ্রামে চলমান পূর্ণস্বায়ত্তশাসন আন্দোলনেও ছাত্র-যুব সমাজকে এগিয়ে আসতে হবে।

তিনি বলেন, শাসকগোষ্ঠী ছাত্র-যুব সমাজকে বিপথে পরিচালিত করতে নানা ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছে। ইয়াবাসহ বিভিন্ন মাদকদ্রব্য সরবরাহ করে আনন্দ-স্ফুর্তিতে মাতিয়ে রেখে তারা যুব সমাজকে আন্দোলন বিমুখ করার পাঁয়তারা চালাচ্ছে। এর থেকে ছাত্র-যুব সমাজকে সজাগ ও সতর্ক থাকতে হবে।
এন্টি চাকমা বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে নারী ধর্ষণ-নির্যাতনকে জাতীয় নিপীড়নের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে শাসকগোষ্ঠী। ফলে এখানে নারী ধর্ষণের ঘটনায় কোন বিচার হয় না। তিনি নারীদেরও আন্দোলনে সক্রিয় অংশগ্রহণের আহ্বান জানান।
বক্তারা পার্বত্য চট্টগ্রামে অন্যায় দমন-পীড়ন, ভূমি বেদখল ও নারী নির্যাতন বন্ধ করে সুষ্ঠু গণতান্ত্রিক পরিবেশ নিশ্চিত করার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *