খাগড়াছড়ির পানছড়ি উপজেলার ভারত সীমান্তবর্তী এলাকায় বন-পাহাড় ধ্বংস করে সীমান্ত সড়ক নির্মাণ ও শনখোলা পাড়ায় জুম্মোদের জায়গায় সেনা ক্যাম্প স্থাপনের নামে ভুমি বেদখলের প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে পানছড়ি এলকাবাসী।
আজ রবিবার (২৯ মে ২০২২) সকাল ১০টার সময় ২নং চেংঙ্গী ইউনিয়ন এলাকায় এই মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
“জুম্মোদের ঘেরাও করে মারার সীমান্ত সড়ক চাই না, সেনা ক্যাম্প স্থাপনের নামে ভূমি বেদখল অবিলম্বে বন্ধ কর” এই শ্লোগানে মিছিল পরবর্তী অনুষ্ঠিত সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন ভারতবর্ষ পাড়ার তরুণ জ্যোতি কার্বারী। প্ররনীতা চাকমার সঞ্চালনায় এতে আরো বক্তব্য রাখেন ভুমি মালিক অমিত বিক্রম চাকমা ও জামিনী কান্ত চাকমা। এতে সংহতি জানিয়ে বক্তব্য রাখেন বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ (পিসিপি)-এর সাবেক কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি বিপুল চাকমা।
সমাবেশ চলাকালে একদল বিজিবি সদস্য এসে বাধা দেয়ার চেষ্টা চালায় বলে বিক্ষোভকারীরা অভিযোগ করেছেন।
সমাবেশে ভূমি মালিক জামিনী কান্ত চাকমা বলেন, সেনাবাহিনীর সদস্যরা জোর করে আমার বাগানে ক্যাম্প স্থাপন করছে। এর ফলে আমার জায়গা-বাগানসহ আরো অনেকের প্রায় ২৫ একর জায়গা হারাতে হবে। আমি সেখানে কোন সেনা ক্যাম্প চাই না।
সংহতি বক্তব্যে বিপুল চাকমা বলেন, ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় পার্বত্য চট্টগ্রামের পাহাড়িরাও কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে পাকিস্তানিদের বিরুদ্ধে লড়াই করেছে। এ অঞ্চলে বসবারসরত পাহাড়ি জনগণ ভেবেছিল স্বাধীনতার পর সবাই স্বাধীন রাষ্ট্রে যার যার অধিকার নিয়ে বেঁচে থাকতে পারবে। কিন্তু স্বাধীনতার পর থেকেই পাহাড়িরা এদেশের শাসকগোষ্ঠি কর্তৃক পাকিস্তানীদের কায়দায় দমন-পীড়ন, হত্যা, সাম্প্রদায়িক হামলাসহ নানা বৈষম্যমূলক আচরণের শিকার হয়ে এসেছে। স্বাধীনতার ৫০ বছরে এ নিপীড়নের মাত্রা আরো বৃদ্ধি পেয়েছে। কখনো উন্নয়নের নামে, কখনো সেনা ক্যাম্প স্থাপনের নামে, কখনো পর্যটনের নামে, কখনো সড়ক নির্মাণের নামে প্রতিনিয়ত পাহাড়িদের ভূমি বেদখল ও উচ্ছেদ করা হচ্ছে। এ অবস্থা আর চলতে দেয়া যায় না। সবাইকে এর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে।
সমাবেশ চলাকালে ধুধুকছড়া থেকে একদল বিজিবি সদস্য এসে বাধা দিতে চাইলে বিপুল চাকমা তাদের উদ্দেশ্য করে বলেন, আমরা পাহাড়িরা আপনাদের শত্রু নয়, যেখানে জনগণকে আপনাদের নিরাপত্তা দেয়ার কথা, সেখানে আপনারা যুদ্ধাংদেহি অবস্থান নিয়েছেন, জনগণকে সমাবেশ করতে বাধা দিচ্ছেন। আপনারা সমাবেশে বাধা দেবেন না। জনগণের অভিযোগ-অনুযোগগুলো শুনুন। তাদের মনোকষ্ট জানুন।
বক্তারা জায়গা-জমি বেদখল ও বন-পাহাড় ধ্বংস করে সীমান্ত সড়ক নির্মাণ ও শনখোলা পাড়ায় পাহাড়িদের জায়গায় জোরপূর্বক ক্যাম্প স্থাপন কার্যক্রম বন্ধের দাবি জানান।
* ভিডিও chtnews blog: সমাবেশে বাধা দিচ্ছে বিজিবি’র সদস্যরা