
নিজস্ব প্রতিবেদক।। সংবিধানের বিতর্কিত পঞ্চদশ সংশোধনী বাতিলের দাবিতে খাগড়াছড়ির মানিকছড়িতে বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।
আজ ৩০ জুন ২০২২, বৃহস্পতিবার সকালে পঞ্চদশ সংশোধনী আইন পাসের ১১ বছরপূর্তিতে ইউপিডিএফ, ডিওয়াইএফ ও পিসিপি ব্যানারে মানিকছড়ি উপজেলা সদরে এই বিক্ষোভের আয়োজন করা হয়।
“দমন পীড়নের পরিণাম, পার্বত্য চট্টগ্রাম হবে ভিয়েতনাম, সেনা অভিযান বন্ধ কর, বসতভিটা থেকে সেনা ক্যাম্প তুলে না্ও” এই শ্লোগানে বিক্ষোভ মিছিল পরবর্তী সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
সমাবেশে পিসিপি’র মানিকছড়ি থানা শাখার সাধারণ সম্পাদক অংক্য মারমার সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন গণতান্ত্রিক যুব ফোরাম (ডিওয়াইএফ)-এর মানিকড়ি উপজেলা শাখার সভাপতি অংচাই রোয়াজা, পিসিপি’র মানিকছড়ি থানা শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক অংসালা মারমা ও সদস্য আনু মারমা।
বক্তারা বলেন, বর্তমান ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকার উগ্র বাঙালি জাতীয়তা চাপিয়ে দিয়ে ২০১১ সালে পঞ্চদশ সংবিধান সংশোধনী আইন পাস করেছে। পার্বত্য চট্টগ্রামসহ দেশের সংখ্যালঘু জাতিসত্তাগুলোর আপত্তি ও প্রতিবাদ সত্ত্বেও সরকার আজো এই সংশোধনী বাতিল বা সংশোধন করেনি। ফলে দেশের বাঙালি ভিন্ন অন্ন জাতিসত্তাগুলোর অস্তিত্ব হুমকির সম্মুখীন হয়ে পড়েছে।
বক্তারা আরো বলেন, বাংলাদেশ কোন এক জাতির রাষ্ট্র নয়। এদেশের বাঙালি ছাড়াও আরো প্রায় ৫০টির মতো জাতিসত্তার বসবাস রয়েছে। কিন্তু সরকার একক বাঙালি জাতির রাষ্ট্র কায়েমের লক্ষ্যে পঞ্চদশ সংশোধনীতে উগ্র বাঙালি জাতীয়তা চাপিয়ে দিয়েছে।

বক্তারা বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামের পাহাড়ি জনগণ চাপিয়ে দেওয়া বাঙালি জাতীয়তা কখনো মেনে নেবে না। যে সংবিধান বাঙালি বানায় সে সংবিধান আমরা মানতে পারি না। একজন বাঙালি যেমন পাহাড়ি হতে পারে না, তেমনি একজন পাহাড়ি কিংবা অন্য কোন ভিন্ন জাতি বাঙালি হতে পারে না।
বক্তারা অভিযোগ করে বলেন, সরকার পার্বত্য চট্টগ্রামে সেনাশাসনের মাধ্যমে দমন-পীড়ন জারি রেখে পাহাড়ি জনগণকে নিশ্চিহ্ন করে দেয়ার ষড়যন্ত্র করছে। যার কারণে ভূমি বেদখল, বসতভিটা থেকে উচ্ছেদ, অন্যায় গ্রেফতার, জেল-জুলুম, ঘরবাড়ি তল্লাশি, বিচার বহির্ভুত হত্যা, নারী নির্যাতন—ইত্যাদি ঘটনা প্রতিনিয়ত ঘটিয়ে চলেছে।
বক্তারা শাসকগোষ্ঠির অন্যায়-অবিচারের বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে ও রুখে দাঁড়াতে ছাত্র-যুব সমাজের প্রতি আহ্বান জানান।
সমাবেশ থেকে বক্তারা আর কালক্ষেপণ না করে অবিলম্বে বিতর্কিত পঞ্চদশ সংশোধনী বাতিল করে সকল জাতিসত্তার সাংবিধানিক স্বীকৃতি এবং পার্বত্য চট্টগ্রামে অন্যায় দমন-পীড়ন, ভূমি বেদখল-উচ্ছেদ বন্ধের দাবি জানান।