ধর্ষণের ৭২ ঘন্টা পর মামলা না নেওয়ার আদালতের নির্দেশনা বাতিল করতে হবে- হিল উইমেন্স ফেডারেশন

রাজধানী বনানীর রেইনট্রি হোটেলে দুই ছাত্রী ধর্ষণ মামলায় গতকাল (১১ নভেম্বর ২০২১) ঢাকার একটি আদালত রায় দিয়েছে। রায়ে অভিযুক্ত ৫ আসামিকে বেকসুর খালাস দেয়ার পাশাপাশি আদালত ধর্ষণের ৭২ ঘন্টা পর মামলা না নিতে পুলিশকে নির্দেশনাও দিয়েছে।

পার্বত্য চট্টগ্রামে আন্দোলনকারী নারী সংগঠন হিল উইমেন্স ফেডারেশন আদালতের উক্ত রায় ও নির্দেশনার তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে।

আজ শুক্রবার (১২ নভেম্বর ২০২১) হিল উইমেন্স ফেডারেশনের সভাপতি নিরূপা চাকমা সংবাদ মাধ্যমে দেওয়া এক বিবৃতিতে আদালতের রায় ও নির্দেশনার প্রতিবাদ জানিয়ে বলেন, বাংলাদেশে বিচারহীনতা চরমে পৌঁছেছে। রেইনট্রি হোটেলে দুই ছাত্রী ধর্ষণ মামলায় অভিযুক্ত আপন জুয়েলার্সের মালিকের ছেলেসহ পাঁচ আসামিকে আদালত যেভাবে বেকসুর খালাস ও ধর্ষণের ৭২ ঘন্টা পর মামলা না নিতে পুলিশকে নির্দেশনা দিয়েছে এর মাধ্যমে দেশের বিচারকার্য প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে পড়েছে।

তিনি বলেন, আইন-আদালতের মাধ্যমে সরকার একদিকে বিত্তশালীদের রক্ষা করছে, অন্যদিকে নারী, শিশু, সংখ্যালঘু ও দুর্বল প্রান্তিক জনগোষ্ঠীদের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হচ্ছে।

বিবৃতিতে তিনি উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, আদালত ধর্ষণের ৭২ ঘন্টা পর মামলা না নেওয়ার যে নির্দেশনা দিয়েছে তা নারীদের সুষ্ঠু বিচার পাওয়ার ক্ষেত্রে আরো বেশি অন্তরায় সৃষ্টি করবে। এমনিতে দেশে নারী নির্যাতনের অধিকাংশ ঘটনারই কোন সুষ্ঠু বিচার হয় না। আদালতের এ নির্দেশনার ফলে দেশে ধর্ষণের ঘটনা আরো বহুগুণে বেড়ে যাবে এবং দেশটি ধর্ষকের আখড়ায় পরিণত হবে বলেও তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেন।

তিনি পার্বত্য চট্টগ্রামে ধর্ষণের মেডিক্যাল রিপোর্ট দেওয়ার ক্ষেত্রে সরকারের গোপন নিষেধাজ্ঞা জারি থাকার কথা উল্লেখ করে বলেন, আদালতের এই নির্দেশনা বাস্তবায়ন হলে সবচেয়ে বেশি ধর্ষণ-নির্যাতন ও বিচারহীনতার মুখে পড়বে পার্বত্য চট্টগামের পাহাড়ি নারীরা। এমনিতে গোপন নিষেধাজ্ঞার কারণে সেখানে পাহাড়ি নারীরা ধর্ষণের কোন সুষ্ঠু বিচারই পায় না। এ যাবত যত ধর্ষণ ও ধর্ষণের পর খুনের ঘটনা ঘটেছে কোন ঘটনারই সুষ্ঠু বিচার হয়নি।

বিবৃতিতে নিরূপা চাকমা বলেন, অবিলম্বে আদালতের দেওয়া ধর্ষণের ৭২ ঘন্টা পর মামলা না নেওয়ার নির্দেশনা বাতিল করতে হবে এবং রেইনট্রি হোটেলে ধর্ষণ মামলা পূনঃ তদন্ত সাপেক্ষে সুষ্ঠু বিচার করতে হবে। 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *