গতকাল শনিবার (০৯ মে) রাঙামাটির লংগদুতে পাাহড়িদের উপর হামলার ঘটনায় ১০ জনের বিরুদ্ধে মামলা এবং তাদের মধ্যে ৩ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে জানা গেছে।
অন্যদেরকে আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে আদালতে সারেন্ডার করতে বলা হয়েছে। এছাড়া হামলায় ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ প্রদানের সিদ্ধান্তও গ্রহণ করা হয়েছে।
আজ রবিবার সকাল সাড়ে দশটায় লংগদুতে ভাইবোনছড়া এপিবিএন ক্যাম্পে এক সালিশী বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত হয় বলে জানা গেছে।
এতে লংগদু উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা মাইনুল আবেদীন, স্থানীয় জোনের টু-আইসি মেজর হাসান, ওসি মোহাম্মদ নূর, ভাইবোনছড়া ইউপি চেয়ারম্যান কলিন মিত্র চাকমা, বাঙালি মুরুব্বী মো: সুলতান পিসি, মো: মোমিন, ৪ নং ওয়ার্ড মেম্বার মো: হাবিব, পান্না পিচ্চি, ভাইবোনছড়া বাজার কমিটির সভাপতি মো: নাসির, সংরক্ষিত মহিলা আসনের মেম্বার (৪,৫,৬ নং) চম্পা চাকমা, ৩, ৫ নং ওয়ার্ড মেম্বার অজয় বিকাশ চাকমা, প্রাক্তন মেম্বার দিগন্ত চাকমা (৫ নং ওয়ার্ড), বিমল চন্দ্র কার্বারী, সোনাময় চাকমা, ধন্যমনি চাকমা ও বীরেন্দ্র চাকমা উপস্থিতি ছিলেন।
বৈঠকে আরও সিদ্ধান্ত হয়ে যে, হামলায় ক্ষতিগ্রস্তদেরকে ২ লক্ষ ৭৫ হাজার টাকা ক্ষতিপূরণ দেয়া হবে। আগামী ১০ দিনের মধ্যে উক্ত টাকা সেটলার মুরুব্বীরা চেয়ারম্যান কলিন মিত্র চাকমার কাছে জমা দেবেন।
আগামী এক বছরের মধ্যে আর এ ধরনের ঘটনা ঘটবে না বলে গ্যারান্টি দেয়া হয় এবং এ হামলার ঘটনায় আহত কোন সেটলার কোন মামলা দিতে পারবে না বলেও সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
উপরোক্ত সিদ্ধান্তে ও হামলাকারীদের বিরুদ্ধে প্রশাসনের পক্ষ থেকে তড়িৎ ব্যবস্থা গ্রহণ করায় ইউপিডিএফ সন্তোষ প্রকাশ করেছে।
আজ এক বিবৃতিতে ইউনাইটেড পিপল্স ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ) রাঙামাটি জেলা ইউনিটের সংগঠক সচল চাকমা লংগদুর স্থানীয় প্রশাসনকে ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, আজ যেভাবে স্থানীয় মুরুব্বীদের সাথে আলোচনার মাধ্যমে স্থানীয় সামরিক ও বেসামরিক প্রশাসন গতকালের হামলার ঘটনার মীমাংসা করে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন, সেভাবে যদি সরকার ও প্রশাসনের সদিচ্ছা থাকে তাহলে পার্বত্য চট্টগ্রামে সংঘটিত অন্য সকল সহিংস ঘটনারও ন্যায়বিচার পাওয়া সম্ভব হবে।
তিনি বলেন, বিনা কিংবা ঠুনকো অজুহাতে এক শ্রেণীর বহিরাগত সেটলার কর্তৃক পাহাড়িদের উপর শারীরিকভাবে হামলা করা যেন একটি রেওয়াজে পরিণত হয়েছে, যা সভ্য সমাজে কোনভাবেই মেনে নেয়া যায় না।
আন্তঃজাতিগত, আন্তঃসম্প্রদায়গত বা আন্তঃপার্টিগত কোন ভুল বোঝাবুঝি কিংবা সমস্যা সৃষ্টি হলে তা পারস্পরিক আলাপ আলোচনার মাধ্যমে নিরসন করা উচিত বলে মন্তব্য করে তিনি বলেন, এ ক্ষেত্রে সরকারের ভূমিকা হলো সবচেয়ে বেশী।
ইউপিডিএফ নেতা আশা প্রকাশ করেন, খাগড়াছড়ির দীঘিনালা প্রশাসনও লংগদুর স্থানীয় প্রশাসনের সমস্যা মীমাংসা করার পদ্ধতি থেকে শিক্ষা নিয়ে সন্ত্রাসীদের মদদ দেয়া বন্ধ করবে এবং সম্প্রতি সেখানে বানছড়া গ্রামে ইউপিডিএফ সদস্য খুনের ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদান করবে।