রাঙামাটির লংগদু উপজেলার বগাচতর ইউনিয়নে বাঙালি সেটেলারা মহেন্দ্র চাকমা নামে এক পাহাড়ির ৩ একর পরিমাণ জায়গা বেদখলের চেষ্টা চালাচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
ইতোমধ্যে সেটলাররা সদলবলে জোরপূর্বকভাবে মহেন্দ্র চাকমার ভোগদখলীয় জায়গায় জঙ্গল পরিষ্কার করেছে এবং বাধা দিতে গেলে উল্টো জায়গার মালিককে গালিগালাজ ও হুমকি প্রদান করেছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত শনিবার (১১ জুলাই ২০২০) সকাল আনুমানিক ৮ টায় বগাচতর ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ড মেম্বার মোঃ নজরুল ইসলাম ওরফে সেন্টুর নেতৃত্বে ৫-৬ জনের এক দল সেটলার ১১নং পেটান্যামাছড়া মৌজার অন্তর্গত রনজিত পাড়ার বাসিন্দা মহেন্দ্র চাকমা, পিতা-বিক্রম কুমার চাকমার মালিকানাধীন জায়গায় হঠাৎ জঙ্গল পরিষ্কার করা আরম্ভ করে।
নিজের জায়গায় জঙ্গল পরিষ্কার করার খবর পেয়ে মহেন্দ্র চাকমা ঘটনাস্থলে ছুটে যান এবং জঙ্গল কাটারত সেটেলারদের জঙ্গল কাটতে নিষেধ করেন। কিন্তু দখলবাজ মেম্বার মোঃ নজরুল ইসলাম উল্টো মহেন্দ্র চাকমাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ ও হুমকি প্রদান করেন এবং জায়গাটি তার বলে দাবি করেন।
জায়গার মালিক মহেন্দ্র চাকমা ও প্রতিবেশীরা বিষয়টি সংশ্লিষ্ট মৌজার হেডম্যান নিউটন চাকমাকে অবহিত করেছেন বলে জানা গেছে।
উক্ত জায়গা বেদখলের প্রচেষ্টায জড়িত মেম্বার মোঃ নজরুল ইসলামের সহযোগী হিসেবে আরো যাদের পরিচয় পাওয়া গেছে, তারা হলেন- মোঃ কাউছার (২০), পিতা-মোশারফ হোসেন, ঠিকানা- পেটান্যামা ছড়া সেটেলার পাড়া, মোহাম্মদ হোসেন (২৭), পিতা-হরমজ আলী, ঠিকানা-ঐ, মোঃ শহীদ আলী (২৫), পিতা- অজ্ঞাত, ঠিকানা-ঐ এবং মোঃ আইয়ুব আলী ওরফে ল্যাংড়া (৪৫), পিতা-অজ্ঞাত, ঠিকানা-পুর্ব মহাজন পাড়া।
জানা গেছে, মেম্বার মোঃ নজরুল ইসলাম ওরফে সেন্টু এলাকায় মামলাবাজ হিসেবে পরিচিত এবং প্রতিবেশীদের সাথে অনেক ভূমি বিরোধের জড়িত। প্রায়ই তিনি ভূয়া দলিল দেখিয়ে এলাকার মানুষের সাথে ভূমি বিরোধ সৃষ্টি করে ঝামেলা বাধিয়ে থাকেন।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, মেম্বার মোঃ নজরুল ইসলাম ওরফে সেন্টু প্রায়ই বিভিন্ন সন্ত্রাসী গ্রুপ ও তার বেয়াই বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের লংগদু উপজেলা কমিটির সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান জনাব মোঃ আব্দুল বারেক সরকার এর ভয় দেখিয়ে তার স্বার্থ ও উদ্দেশ্য হাসিল করেন।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি লংগদু উপজেলার বিভিন্ন স্থানে সেটলাররা পাহাড়িদের জায়গা-জমি বেদখল শুরু করেছে। তার মধ্যে বগাচতর মৌজায় মো: আলী আহম্মদ চৌধুরী ও মো: আব্দুল আলীম সরকার কর্তৃক নবীনচান চাকমার বন্দোবস্তকৃত ৩ একর ভূমিসহ প্রায় ১২ একর জায়গা জবরদখল; ভাসন্যা আদাম ইউনিয়নের চাইল্যাতলী এলাকায় জুম্মদের কমপক্ষে ১৫ একর জায়গা মো: রফিক, মোঃ শাহ আলম, মোঃ বাবুল মিয়া, মোঃ ইউসুফ ও মোঃ নুর আলম কর্তৃক জবরদখল; খাগড়াছড়ি মৌজার খাগড়াছড়ি গ্রামে মুসলিম সেটেলার কর্তৃক জুম্ম গ্রামবাসীদের প্রায় ৫ একর পরিমাণ জায়গার ফলজ ও বনজ গাছপালা কেটে ধ্বংস ইত্যাদি অন্যতম।