নিজস্ব প্রতিনিধি।। খাগড়াছড়ির দীঘিনালা উপজেলার বাবুছড়া ইউনিয়নের উল্টাছড়ি দজর পাড়ায় সেনাবাহিনী কর্তৃক একজন নিরীহ গ্রামবাসী বাড়ি তল্লাসী এবং নিরীহ দুইজন গ্রামবাসীকে আটক করে ক্যাম্পে নিয়ে যায় বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায় যে, আজ বুধবার (৯ ফেব্রুয়ারি) সকাল ৯:০০ টায় বাবুছড়া ইউনিয়নের উল্টাছড়ি দজর পাড়ায় দীঘিনালা জোন, বাবুছড়া সাব-জোন এবং জারুলছড়ি ক্যাম্প থেকে একদল সেনা সদস্য তল্লাসী অভিযান পরিচালনা করে। উক্ত অভিযানে সেনা সদস্যরা উক্ত গ্রামের কার্বারী অবনী চাকমার বাড়ি ঘেরাও করে তল্লাসী চালায় এবং জিনিষপত্র তছনছ করে।
সে সময় কার্বারী বাড়িতে ছিলেন না। সেনা সদস্যরা অবনী কার্বারীকে বাড়িতে না পেয়ে তার মেয়েকে অনেকক্ষণ বেঁধে রাখে। শুধু তাই নয়, অবনী চাকমার স্ত্রীকে তার মেয়েকে বাঁধতে বাধ্য করা হয় বলে জানা যায়।
এছাড়াও সেনা সদস্যরা বাবুছড়া ইউনিয়নের ধনপাতা থেকে ভান্তে (৩৮) নামে এক নিরীহ জুম্ম গ্রামবাসীকে ও ধীরেন পাড়া থেকে নিগিরা রঞ্জন চাকমা (৪০)-কে আটক করে জারুলছড়ি ক্যাম্পে নিয়ে যায়। পরে স্থানীয় মুরুব্বীরা জারুলছড়ি ক্যাম্পে গিয়ে অনেক আকুতি মিনতির পর তাদের দুইজনকে ছেড়ে দেওয়া হয় বলে জানা যায়।
উল্লেখ্য যে, গত ৪ ফেব্রুয়ারি ভোর ০৫:৩০ টায় বাবুছড়া ইউনিয়নের উল্টাছড়ির দজর পাড়ায় কথিত সন্ত্রাসীর লেবাস দিয়ে এক সাধারণ জুম্ম গ্রামবাসীর বাড়িকে লক্ষ্য করে সেনাবাহিনী অতর্কিতভাবে ১০-১৫ রাউন্ড গুলি ছুড়ে। গুলি ছোড়ার পর তারা উক্ত বাড়ির সমস্ত জিনিষপত্র তছনছ করে দেয় এবং অনেক জিনিসপত্র পুড়িয়ে দেয়।
শুধু তাই নয় উক্ত গ্রামের বাসিন্দা রিনা বাপ ওরফে রিপন চাকমা (৪৫) ও তার ছেলে কালায়্যা চাকমা (১৯)-কে সেনাবাহিনী কর্তৃক বেদম প্রহার করা হয়। গুরুতর আহত অবস্থায় ছেড়ে দেয়ার পর কালায়্যা চাকমা এখনো চিকিৎসাধীন রয়েছেন বলে জানা যায়।
তার একদিন পর উক্ত গ্রামের ইউপি মেম্বার ও কার্বারীকে ক্যাম্পে ডাকা হয়। এসময় তাদেরকে অনেক হয়রানিমূলক জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় বলে জানা যায়।
সেনাবাহিনীর এরূপ হিংস্র কর্মকাণ্ডের ফলে জনমনে আতঙ্ক বিরাজ করছে। অন্যদিকে সেনাবাহিনীর এরূপ হিংস্রতা পরিলক্ষিত হওয়ার কারণে মাইনী এলাকার লোকজন রাতের বেলায় ঘরে থাকতেও ভয় পাচ্ছে বলে জানা যায়।