রাঙামাটির লংগদুতে কলেজ ছাত্রী ধর্ষণের অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক মোঃ আব্দুর রহিমের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে এবং বান্দরবানের চিম্বুক পাহাড়ে পর্যটন স্থাপনা নির্মাণের নামে পাহাড়ি উচ্ছেদসহ সারা দেশে অব্যাহত নারী নির্যাতনের বিরুদ্ধে চট্টগ্রাম নগরীতে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে গণতান্ত্রিক যুব ফোরাম, পার্বত্য চট্টগ্রাম নারী সংঘ ও পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ (পিসিপি)।
‘বার বার নারী ধর্ষণ কেন, শেখ হাসিনার জবাব চাই’ শ্লোগানে আজ শুক্রবার (০৯ অক্টোবর ২০২০) বিকাল সাড়ে ৩টায় নগরীর সিনেমা প্লেস থেকে একটি মিছিল বের করা হয়। মিছিলটি ডিসি হিল, প্রেসক্লাবসহ গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে চেরাগী পাহাড় মোড়ে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
যুব নেতা জিকো চাকমার সঞ্চালনায় উক্ত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের চট্টগ্রাম নগর শাখার সহ সভাপতি শুভ চাক, পিসিপি চট্টগ্রাম শাখার সভাপতি এলকো চাকমা এবং পিসিপি চ.বি শাখার নেতা রোনাল চাকমা । এতে সংহতি জানিয়ে আরও বক্তব্য রাখেন, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় পালি বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান প্রফেসর জিনবোধি ভিক্ষু, প্রগতিশীল চিকিৎসক ডাঃ সুশান্ত বড়ুয়া, ছাত্র ইউনিয়ন চট্টগ্রাম জেলা কমিটির নেতা সাইফুর রহমান প্রমুখ।
প্রফেসর জিনবোধি ভিক্ষু বলেন, স্বাধীনতার দীর্ঘ ৫০ বছর পরেও এদেশে প্রকৃত স্বাধীনতা অর্জিত হয়নি। উল্টো দেশ আজ ধর্ষকদের কবলে পরিণত হয়েছে। তিনি ধর্ষণকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেয়ার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।
পাহাড়ে চলমান ভূমি রক্ষার আন্দোলনের প্রতি সমর্থন ব্যক্ত করে তিনি আরও বলেন, সরকার চাইলেই এ ভূমি সমস্যার শান্তিপূর্ণ সমাধান করতে পারে। পাহাড় এবং সমতলে সকল ন্যায়সঙ্গত আন্দোলনের সাথে থাকবেন বলেও তিনি আশ্বস্ত করেন।
সমাবেশে অন্যান্য বক্তারা বলেন, সরকারের বিচারহীনতার সংষ্কৃতির কারণে নারীরা আজ ঘরে, বাইরে কোথাও নিরাপদ নয়। সরকার ধর্ষণকারীদের যথোপযুক্ত শাস্তি প্রদান করছে না। উল্টো ধর্ষণের বিচারের দাবিতে শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলনরত ছাত্র ও জনতার উপর স্টীম রোলার চালাচ্ছে।
বক্তারা আরও বলেন, সরকার পাহাড়ে পর্যটন স্থাপনা নির্মাণ, সামরিক ক্যাম্প স্থাপনসহ নানা জনস্বার্থবিরোধী প্রকল্পের নামে প্রতিনিয়ত পাহাড়িদের ভূমি বেদখল করছে। সর্বশেষ চিম্বুক পাহাড়ে সরকারের কু-নজর পড়েছে। এই চিম্বুক পাহাড় থেকে ইতিমধ্যে অনেক ম্রো জাতিসত্তার জনগণ উচ্ছেদের শিকার হয়েছেন। সেখানে আরো নতুন নতুন স্থাপনা নির্মাণ ও পর্যটন কেন্দ্র সম্প্রসারণ করা হলে স্থানীয় পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর জীবন চরম হুমকির মুখে পড়বে বলে তারা আশঙ্কা প্রকাশ করেন।
সমাবেশ থেকে বক্তারা অবিলম্বে পাহাড়ে ভূমি বেদখল বন্ধসহ সারা দেশে ধর্ষণের সাথে জড়িত ব্যক্তিদের দ্রুত বিচারের আওতায় এনে সর্বোচ্চ সাজা নিশ্চিত করার দাবি জানান।