
নিজস্ব প্রতিনিধি।। রাষ্ট্রীয় গুমের শিকার ইউপিডিএফ নেতা মাইকেল চাকমার সন্ধান, পাহাড় ও সমতলে বিনা বিচারে হত্যা-গুম বন্ধ করা এবং রমেল, সৌরভ হত্যায় জড়িত সেনাদের গ্রেফতার ও বিচার দাবি করে গুইমারায় বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।
আজ বৃহস্পতিবার (৭ এপ্রিল ২০২২) ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট(ইউপিডিএফ), বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ (পিসিপি), গণতান্ত্রিক যুব ফোরাম (ডিওয়াইএফ) গুইমারা, মাটিরাঙ্গা উপজেলা শাখা যৌথভাবে এই বিক্ষোভের আয়োজন করে।
বিক্ষোভ মিছিলের পর অনুষ্ঠিত প্রতিবাদ সমাবেশে পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের মাটিরাঙ্গা উপজেলা শাখার সভাপতি অনিমেষ চাকমার সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ) এর মাটিরাঙ্গা-গুইমারা ইউনিটের সংগঠক ঝিমিত চাকমা ও গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের খাগড়াছড়ি জেলা শাখার সভাপতি ক্যামরন চাকমা।
বক্তারা বলেন, ২০১৯ সালের ৯ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জের কাঁচপুর এলাকা থেকে সাংগঠনিক কাজ শেষে ঢাকায় ফেরার পথে রাষ্ট্রীয় বাহিনী কর্তৃক ইউপিডিএফ নেতা মাইকেল চাকমাকে গুম করা হয়। সেই পর থেকে আজ তিন বছরেও আমরা তার হদিস পাওয়া যায়নি। সরকার মাইকেল চাকমার সন্ধান দিতে ব্যর্থ হয়েছে। আমরা অবিলম্বে মাইকেল চাকমার সন্ধান চাই। রাষ্ট্রকে অবশ্যই মাইকেল চাকমার সন্ধান ও তাকে সুস্থ শরীরে ফেরত দিতে হবে।
বক্তারা আরো বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে সেনাশাসন জারি রেখে বিচার প্রতিনিয়ত বহির্ভুত হত্যা, অন্যায়ভাবে গ্রেফতার, নিপীড়ন-নির্যাতন চালানো হচ্ছে। গত ১৫ মার্চ দীঘিনালায় ইউপিডিএফ সংগঠক নবায়ন চাকমা মিলন (সৌরভ)-কে সেনাবাহিনী গ্রেফতারের পর নির্যাতন চালিয়ে হত্যা করেছে। তার আগে ২০১৭ সালে নান্যাচরে প্রতিবন্ধী এইচএসসি পরীক্ষার্থী ও পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের সাধারণ সম্পাদক উপজেলা সাধারণ রমেল চাকমাকে একই কায়দায় নির্যাতন চালিয়ে হত্যা করা হয়েছে। সেনারা রমেলের লাশ পর্যন্ত পরিবারের কাছে হস্তান্তর করেনি, পেট্রোল ঢেলে তার লাশ পুড়িয়ে ফেলেছে। তারা বলেন, শুধু সৌরভ, রমেল নয়, সেনাবাহিনী এ পর্যন্ত আরো বহু নেতা-কর্মিকে বিচার বহির্ভুতভাবে হত্যা করেছে। ডজনের অধিক গণহত্যাসহ অসংখ্যা সাম্প্রদায়িক হামলা ও ভূমি বেদখলের ঘটনায় পার্বত্য চট্টগ্রামে নিয়োজিত সেনাবাহিনী জড়িত রয়েছে।
বক্তারা পার্বত্য চট্টগ্রামসহ সারা দেশে রাষ্ট্রীয় দমন-পীড়ন, খুন-গুমের বিরুদ্ধে পাহাড় ও সমতলে ঐক্যবদ্ধ সংগ্রাম গড়ে তোলার আহ্বান জানান।
সমাবেশ থেকে বক্তারা অবিলম্বে মাইকেল চাকমাকে সুস্থ শরীরে ফিরিয়ে দেয়া, পার্বত্য চট্টগ্রাম থেকে সেনাশাসন প্রত্যাহারপূর্বক দমন-পীড়ন বন্ধ করা, পাহাড় ও সমতলে বিনা বিচারে হত্যা-গুম বন্ধ করা এবং সৌরভ, রমেল হত্যায় জড়িত সেনাদের গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।