মহালছড়িতে পাহাড়িদের ঘর-বাড়িতে অগ্নিসংযোগের প্রতিবাদে পানছড়িতে বিক্ষোভ

নিজস্ব প্রতিনিধি।। খাগড়াছড়ির মহালছড়ি উপজেলার মাইসছড়ি ইউনিয়নের ৪নং ওর্য়াডের জয়সেন পাড়ায় নিরাপত্তা বাহিনীর উপস্হিতিতে সেটলার বাঙালি কর্তৃক পাহাড়িদের ঘর-বাড়িতে অগ্নিসংযোগ, ভাংচুর ও লুটপাটের প্রতিবাদে এবং দোষীদের শাস্তির দাবিতে পানছড়ি বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।

আজ ‍বৃহস্পতিবার (৭ জুলাই ২০২২) সকাল ৯ টায় ১নং লোগাং ইউনিয়ন এলাকায় এ বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করা হয়।

গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের পানছড়ি উপজেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক রিপন ত্রিপুরার সঞ্চালনায় ও পার্বত্য নারী সংঘের দপ্তর সম্পাদক সবিনা চাকমার সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের পানছড়ি উপজেলা সভাপতি এস মঙ্গল চাকমা, গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের কেন্দ্রীয় যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বরুণ চাকমা, বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ (পিসিপি)-এর পানছড়ি উপজেলা সভাপতি তৃঞ্চাঙ্কর চাকমা ও বিশিষ্ট মুরুব্বি তাপস চাকমা।

সমাবেশে এস মঙ্গল চাকমা বলেন, ৫ জুলাই মহালছড়ি জয়সেন পাড়ার ঘটনা অতীতের ঘটনার ধারাবাহক রূপ। অতীতে সংঘটিত ঘটনাবলীর বিচার করা হলে মাইসছড়ির ঘটনা ঘটতো না।

তিনি বলেন, সরকার পার্বত্য চট্টগ্রামে ১৯৭৮ সনে গোপন সরকারি স্থানান্তর কর্মসূচীর অধীনে ৪ লাখ সেটলার বাঙালি অনুপ্রবেশ ঘটিয়ে তাদেরকে রেশন সুবিধা দিয়ে ভূমি বেদখল ও পাহাড়িদের ওপর সাম্প্রদায়িক হামলা চালাচ্ছে। ১৯৯৭ সালে স্বাক্ষরিত পার্বত্য চুক্তির পর রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় সেটলারদের দৌরাত্ম্য আরো বৃদ্ধি পেয়েছে।

বরুণ চাকমা বলেন, মহালছড়ি মাইসছড়িতে যে ঘটনা ঘটেছে যা বর্ণনা দেয়ার মতো না। ঘটনার শিকার পরিবার গুলো ঝড়ে ভিজে বন জঙ্গলে মানবেতর জীবন কাটাচ্ছে। তিনি ঘটনার নিন্দা জানিয়ে অবিলম্বে ঘটনার শিকার ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারদের নিরাপত্তা নিশ্চিতসহ যথাযথ ক্ষতিপূরণ ও পুনর্বাসনের দাবি জানান।

সভাপতি সবিনা চাকমা বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে পাহাড়িরা কোথাও নিরাপদ নয়, যেখানে শান্তি শৃঙ্খলা রক্ষার নামে নিয়োজিত বাংলাদেশ নিরাপত্তা বাহিনীর প্রত্যক্ষ্য মদদে সেটলারার পাহাড়িদের ওপর হামলা চালায়, ভূমি কেড়ে নেয় সেখানে পাহাড়িরা কিভাবে নিরাপদে থাকবে?  তিনি কিছু দিন আগে সংঘটিত এক ঘটনার বর্ণনা দিয়ে বলেন, পানছড়ির ফাতেমা নগরে ছোট্ট এক বাঙালি শিশু পানিতে ডুবে মারা যায়। কিন্তু সেটলাররা ওই শিশুকে পাহাড়িরা গুম করেছে অপবাদ দিয়ে সেদিনও তাদের গ্রাম সেটলাররা ঘেরাও করে রাখে। এভাবে মিথ্যা গুজব ছড়িয়ে ’৯২ সালে লোগাং গণহত্যা চালানো হয়েছিল।  

সমাবেশ থেকে বক্তারা অবিলম্বে মহালছড়ির মাইসছড়িতে পাহাড়িদের ঘরবাড়িতে অগ্নিসংযোগ, ভাঙচুর ও লুটপাটে জড়িত সেটলার বাঙালিদের চিহ্নিত করে গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি এবং ক্ষতিগ্রস্তদের যথাযথ ক্ষতিপূরণ-পুনর্বাসনসহ নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবি জানান।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *