ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে উত্তেজনা: ইউরোপীয় দেশগুলোর নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহাল প্রক্রিয়া শুরু

ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে নতুন করে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ার পর ২০১৫ সালের চুক্তির অধীনে জাতিসংঘের প্রধান নিষেধাজ্ঞাগুলো পুনর্বহাল করার প্রক্রিয়া শুরু করেছে যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স ও জার্মানি। এই পদক্ষেপের মাধ্যমে কার্যকর হবে স্ন্যাপব্যাক মেকানিজম, যার ফলে ৩০ দিনের মধ্যে নিষেধাজ্ঞা আবার কার্যকর হয়ে যেতে পারে।

বৃহস্পতিবার (২৮ আগস্ট) এ খবর জানিয়েছে বিবিসি।

যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স ও জার্মানি (ই-৩) দুই সপ্তাহ আগে সতর্ক করেছিল যে, যদি ইরান আগস্টের শেষে ‘কূটনৈতিক সমাধানে’ রাজি না হয়, তবে তারা এই প্রক্রিয়া শুরু করবে।

ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে পারমাণবিক আলোচনা জুন থেকে স্থগিত রয়েছে, যখন মার্কিন বাহিনী ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা চালায় এবং ইরান জাতিসংঘের পরিদর্শকদের প্রবেশ নিষিদ্ধ করে।

২০১৫ সালের চুক্তিতে স্ন্যাপব্যাক ধারা অন্তর্ভুক্ত ছিল, যার মাধ্যমে কোনো পক্ষ ইরান তার অঙ্গীকার ভঙ্গ করলে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে জানিয়ে নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহাল করতে পারে।

ই-৩ নিরাপত্তা পরিষদে পাঠানো চিঠিতে বলেছে, ইরান তার অঙ্গীকার ভঙ্গ করেছে এবং এর ‘স্পষ্ট ও উদ্দেশ্যমূলক’ প্রমাণ রয়েছে। তারা অভিযোগ করেছে, ইরান অত্যন্ত সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম মজুদ করছে, যা সামরিক গ্রেডের কাছাকাছি এবং এর কোনো বেসামরিক ব্যাখ্যা নেই, যা আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তার জন্য ‘স্পষ্ট হুমকি’।

ই-৩ দেশগুলি জানিয়ে দিয়েছে, তারা পরবর্তী ৩০ দিন ইরানের সঙ্গে কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাবে। তবে ইরান সতর্ক করে জানিয়েছে, যদি স্ন্যাপব্যাক চালু করা হয়, তাহলে তাদের প্রতিক্রিয়া হবে।

২০১৫ সালের জাতিসংঘ-সমর্থিত চুক্তির অধীনে ইরানের ওপর কঠোর অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হয়েছিল, তবে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ২০১৮ সালে চুক্তি থেকে বের হয়ে নিষেধাজ্ঞা পুনরায় আরোপ করেন, যার ফলে ইরান তার পারমাণবিক কর্মসূচি সম্প্রসারিত করে।

পাশ্চাত্য শক্তি ও আন্তর্জাতিক পারমাণবিক শক্তি সংস্থা (আইএইএ) বলছে, তারা ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচির শান্তিপূর্ণ চরিত্র সম্পর্কে নিশ্চিত নয়, তবে ইরান দাবি করছে, তাদের কর্মসূচি শুধুমাত্র বেসামরিক উদ্দেশ্যে এবং তারা পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করতে চায় না।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *