টেলিগ্রাম অ্যাপের মাধ্যমে অনলাইন বিনিয়োগের প্রলোভন দেখিয়ে কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়া প্রতারক চক্রের সক্রিয় সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে সিআইডির সাইবার পুলিশ সেন্টার (সিপিসি)। বৃহস্পতিবার রাজধানী থেকে নাদিম নামের ওই যুবককে গ্রেপ্তার করা হয়।
প্রাথমিক তদন্তের বরাত দিয়ে সিআইডি জানায়, একটি বেসরকারি ব্যাংকের একজন সিনিয়র প্রিন্সিপাল অফিসারের হোয়াটসঅ্যাপে অজ্ঞাত নম্বর থেকে একটি বার্তা আসে। বার্তা পাঠানো ব্যক্তি নিজেকে ‘নাজনীন’ নামে পরিচয় দিয়ে দাবি করেন, তিনি ফ্রিল্যান্সিং প্ল্যাটফর্ম ‘আপওয়ার্ক’ –এর প্রতিনিধি। বাসায় বসে খণ্ডকালীন কাজের মাধ্যমে আয় করার প্রলোভন দেখালে ভুক্তভোগী রাজি হন। ইউটিউব সাবস্ক্রিপশনসহ কয়েকটি ছোট অনলাইন টাস্ক করিয়ে ভুক্তভোগীকে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে প্রথমে ১৫০ টাকা এবং পরে ২ হাজার ১০০ টাকা দিয়ে আস্থা তৈরি করা হয়। এরপর তাকে একটি টেলিগ্রাম গ্রুপে যুক্ত করা হয়, যেখানে ভুয়া সদস্যরা দাবি করেন, তারা নিয়মিত কাজ করে বড় অঙ্কের অর্থ উপার্জন করছেন। এতে ভুক্তভোগীর বিশ্বাস বেড়ে যায়।
পরের ধাপে বড় টাস্কের কথা বলে প্রতারকরা ‘ক্রিপ্টো অ্যাকাউন্ট’ খুলতে ২ হাজার টাকা বিনিয়োগ করতে বলে। এরপর জানানো হয়, আরও ৩ হাজার টাকা বিনিয়োগ করলে তার ব্যালেন্স ৭ হাজার টাকা দেখাবে এবং তিনি অর্থ তুলতে পারবেন। ভুক্তভোগী টাকা পাঠানোর পর তাকে ‘ভিআইপি টাস্ক গ্রুপে’ যুক্ত করা হয়, যার অ্যাডমিন ছিলেন হামজা নামে একজন। গ্রুপে দেখানো হয় যে সবার অ্যাকাউন্টে ৭ হাজার টাকা জমা রয়েছে।
সিআইডি জানায়, টাকা তুলতে চাইলে ভুক্তভোগী ব্যক্তিকে জানানো হয়, ক্যাশ আউটের জন্য আরও ১৫ হাজার ৮০০ টাকা দিতে হবে। সরল বিশ্বাসে তিনি টাকা দেন। তবে ব্যালেন্স প্রদর্শনে অসঙ্গতি দেখে তিনি বিষয়টি জানতে চাইলে নতুন টাস্ক ও নতুন শর্ত আরোপ করা হয়। এভাবে একের পর এক টাস্ক, বড় লাভের প্রলোভন এবং ভুয়া হিসাব দেখিয়ে প্রতারক চক্রটি বিভিন্ন ব্যাংক ও মোবাইল ব্যাংকিং চ্যানেলের মাধ্যমে মোট ১ কোটি ১০ লাখ ৫৮ হাজার ৩০৫ টাকা হাতিয়ে নেয়। ঘটনার পর ভুক্তভোগী লালবাগ থানায় মামলা করেন। মামলাটির তদন্তভার নিয়ে সিআইডির সিপিসি ইউনিটের একটি দল প্রতারক চক্রের সদস্য নাদিমকে গ্রেপ্তার করে। এ সময় তার কাছ থেকে মোবাইল ফোন, এনআইডিসহ গুরুত্বপূর্ণ আলামত জব্দ করা হয়।