সেনাবাহিনীর ও বাঙালির সেটলার দ্বারাই আদিবাসী জুম্ম গণহত্যা প্রকৃতভাবে উন্মোচন করা হোক।
পাকিস্তান যেভাবে পটন ঘটছে ঠিক সেইভাবে তিন পার্বত্য জেলায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর একদিন পটন ঘটবে।
পাকিস্তান যেভাবে পটন ঘটেছিল অনুরূপভাবে তিন পার্বত্য জেলার দায়িত্ব পালনরত সেনাবাহিনীর একইভাবে পটন ঘটবে।
সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে পাকিস্তানের হাইকমিশনার ইমরান আহমেদ সিদ্দিকী সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। এ সময় প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, 1971 সালে পাকিস্তান যে নৃসংসতা চালিয়েছিল, বাংলাদেশ তা ভুলে যেতে পারে না। একাত্তরের ঘটনাগুলো ভোলা যায় না। সেই ক্ষত চিরদিন রয়ে যাবে।
ডিসেম্বর মাসে পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর ঢাকায় আত্মসমর্পণ করেছিল, সেই ডিসেম্বরে প্রধানমন্ত্রী একাত্তরের তাদের গণহত্যা ও নৃশংসতার কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে ঐতিহাসিক সত্য তুলে ধরবেন। পাকিস্তান সরকার এই সত্য প্রকাশ করতে বারবার ভয় পাই। একাত্তরে বাংলাদেশে কী ভয়াবহ নৃশংসতার হত্যাকাণ্ড হয়েছিল। এখনো পাকিস্তানের সর্বজন সাধারণ সেখানকার সংখ্যাগরিষ্ঠতা মানুষ জানে না, একাত্তরের বাংলাদেশ কি ভয়াবহ নৃশংসতার হয়েছিল। পাকিস্তানি পাঠ্যপুস্তকে পাকিস্তানি সেনাদের নৃশংসতা ও বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সম্পর্কে কোন কথা নেই। পাকিস্তানের পাঠ্যপুস্তকে লেখা হয়, ভারতের ষড়যন্ত্র কারণে ঢাকার পটন ঘটেছে পাকিস্তানি দখলদার বাহিনীর। প্রকৃতপক্ষে পটন ঘটেছিল দখলদার পাকিস্তানি বাহিনীর দম্ভ ও অহংকার কারণে।
অনুরূপভাবে তিন পার্বত্য জেলার মধ্যে দায়িত্ব পালনরত বাংলাদেশের সেনাবাহিনীর জাত্যভিমান, দম্ভ ও অহমিকার ভেঙ্গে চুরে পর্যদুস্ত অবস্থায় ডাস্টবিনে ছুড়ে ফেলে দিব তিন পার্বত্য জেলার জুম্ম জাতির ন্যায্য অধিকার জুম্মল্যান্ড স্বাধীনতাকামী (জেএলএ)JLA জুম্ম রাজনৈতিক দলের বাহিনী কর্মী দ্বারাই।
সেনাবাহিনী ও বাঙ্গালীর সেটেলার মিলিয়ে তিন পার্বত্য জেলার জুম্ম জাতির উপর 21 বার জুম্ম গণহত্যা সংঘটিত নৃশংস জুম্ম গণহত্যা ঘটনা চালিয়ে ছিল।
সেনাবাহিনীর বাঙালি সেটলারের জুম্ম জাতির উপর এধরণের নৃশংসতার ভয়াবহ জুম্ম গণহত্যা তিন পার্বত্য জেলার আদিবাসী জুম্ম জনগণ কোনদিন ভুলবে না এবং কোনো দিন ভুলার মত নয়। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী জুম্ম জাতির গণহত্যার ক্ষত চিরদিন রয়ে যাবে।
তিন পার্বত্য জেলার একুশবারের(২১ বার) বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন জায়গায় জুম্ম গণহত্যা চালিয়েছিল।
জুম্ম গনহত্যার বিবরণ নিম্নে তুলে ধরা হলোঃ-
বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ও বাঙালি সেটেলাররা পাহাড়ের জুম্ম জনগণের উপর 21বার গোপন গণহত্যা চালিয়েছিলঃ-
নিরীহ পাহাড়ের জুম্ম জনগণের উপর গণহত্যার তারিখ ও সাল গুলো উল্লেখ করা হলোঃ- ধারাবাহিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে-
সিরিয়ালঃ- তালিকাঃ- জুম্ম গণহত্যা তারিখ ও সালঃ-
(১.) শুভলং পাহাড়ি জুম্ম আদিবাসী গণহত্যাঃ- রাঙ্গামাটি জেলায়, ৭ জানুয়ারি 1979, বাঙালি সেটেলাররা ও সেনাবাহিনীর মিলিয়ে ১৬ জনকে নির্মম ভাবে জুম্ম পাহাড়ি আদিবাসী গণহত্যা করেছিল, আহত হয়েছিল 12 জন, 300 এর অধিক বাড়িঘর আগুন জ্বালিয়ে পুড়িয়ে দিয়েছিল, ধন-সম্পদ, টাকা-পয়সা, সোনা-রূপা, সব বাঙ্গালীরা লুটপাট ও ডাকাতি করে এনেছিল। পাহাড়ের জুম্ম আদিবাসী 5000 এর অধিক ভারতে মিজোরামে শরণার্থী হিসেবে আশ্রয় গ্রহণ করতে বাধ্য হয়েছিল।
(২.) গুইমারা পাহাড়ি জুম্ম আদিবাসী গণহত্যাঃ- খাগড়াছড়ি জেলায়, 27 এপ্রিল 1979 স্থানের নাম গুইমারা, বাঙালি সেটেলার ও সেনাবাহিনী একত্রে মিলিয়ে পাহাড়ি জুম্ম গণহত্যা চালিয়েছিল, এই সময় নির্মমভাবে 27 জন জুম্ম পাহাড়িকে হত্যা করা হয়, জুম্ম পাহাড়ি আহত হয়েছিল 31 জন, সেটলার বাঙালি ও সেনাবাহিনীর মিলিয়ে তিনটি গ্রামে অগ্নিসংযোগ ঘটিয়েছিল, ঘরবাড়ি থেকে টাকা পয়সা, স্বর্ণ-রুপা, ধন সম্পদ, লুটপাঠ ও ডাকাতি করে এনেছিল। পাহাড়ের জুম্ম 400 জন ভারতের শরণার্থী হিসেবে আশ্রয় গ্রহণ করেছিল।
(৩.) কানুনগোপাড়া পাহাড়ি জুম্ম আদিবাসী গণহত্যাঃ- খাগড়াছড়ি জেলায়, 22 এপ্রিল 1979, বাঙালির সেটেলার ও সেনাবাহিনী একত্রে মিলিয়ে নিরহ পাহাড়ের জুম্ম আদিবাসী উপর ৫ জনকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। 120 টি বাড়িঘর আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে গিয়েছিল, ওই এলাকায় বাঙালির সেটলার ও সেনাবাহিনী মিলিয়ে বাড়িঘর লুটপাট করে টাকা-পয়সা, ধন-দৌলত, স্বর্ণ-রুপা, লুটপাট ও ডাকাতি করে এনেছিল। 2500 পাহাড়ি জুম্ম আদিবাসী ভারতের ত্রিপুরায় শরণার্থী হিসেবে আশ্রয় গ্রহণ করেছিল।
(৪.) রামগড় পাহাড়ি জুম্ম আদিবাসী গণহত্যাঃ- খাগড়াছড়ি জেলায়, 7 নভেম্বর 1979, বাঙালি সেটলার সেনাবাহিনী যৌথ দল বেঁধে মিলিয়ে পাহাড়ের জুম্ম আদিবাসীদের উপর গণহত্যা চালিয়েছিল, এতে প্রায় বন্দুকের বেয়নেট মাথা ছুরি দিয়ে নির্মমভাবে আঘাত করে মেরে ফেলা হয়েছিল। পাহাড়ের জুম্ম আদিবাসীর ১৮ জনকে গুরুতর অবস্থায় আহত করা হয়েছিল, বাঙালি সেটেলার ও সেনাবাহিনী মিলিয়ে 4 জন নারীকে ধর্ষণ করা হয়েছিল, এতে আদিবাসী জুম্ম পাহাড়ি ২০০০ জন অধিক ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের শরণার্থী হিসেবে আশ্রয় গ্রহণ করেছিল।
(৫.) কাউখালি পাহাড়ি জুম্ম আদিবাসী গণহত্যাঃ- রাঙ্গামাটি জেলায় কাউখালী ইউনিয়ন কমলপতি গ্রামে বাঙালি সেটলার ও সেনাবাহিনী যৌথ প্রচেষ্টায় মিলিয়ে পাহাড়ের জুম্ম আদিবাসী উপর গণহত্যা চালিয়েছিল 25 শে মার্চ 1980 সালে, তখনকার কর্তব্যরত জোন কমান্ডার পলিসি প্রয়োগ করে জুম্ম আদিবাসী পাহাড়িদেরকে শান্তির আলোচনা মিটিং এর নাম দোহাই দিয়ে জোন এলাকায় ডেকে নিয়ে এসেছিলেন, তারপর নারী-পুরুষ প্রায়ই 330 জন মিটিংয়ে উপস্থিত থাকতে গিয়েছিলেন, তখন পুরুষদেরকে সারিবদ্ধ ভাবে লাইনে দাঁড় করে সোজা দাঁড়িয়ে রেখেছিলেন, এবং নারীদেরকে আলাদা জায়গায় দাঁড়িয়ে রেখেছিলেন। তখন 300 জন পুরুষের উপর নির্মমভাবে গুলি করে হত্যা করা হয়। এবং 30 জন নারীকে ধর্ষণ করা হয়। বাঙালি সেটেলার ও সেনাবাহিনী মিলিয়ে পাহাড়ের জুম্ম আদিবাসী বাড়িঘর লুটপাট করে টাকা-পয়সা ধন-দৌলত স্বর্ণ-রুপা, এরপর বাড়িঘর পুড়িয়ে সাই করে দেয়া হয়, বৌদ্ধ মন্দিরের জায়গায়, এখন অনেকগুলো মসজিদ তৈরি করা হয়েছে। বাঙালি ও সেনাবাহিনীদের অত্যাচারে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যে 1000 জুম্ম পাহাড়ের আদিবাসী শরণার্থী হিসেবে আশ্রয় গ্রহণ করেছিলেন।
(৬.) তবলছড়ি মাটিরাঙ্গা পাহাড়ের জুম্ম আদিবাসী গণহত্যাঃ- খাগড়াছড়ি জেলার মাটিরাঙ্গা থানায় তখন 27 শে মে 1981 সাল, সেনাবাহিনী ও বাঙালির সেটেলার মিলিয়ে 146 জন নিরীহ পাহাড়ের জুম্ম আদিবাসী এর উপর নির্মমভাবে গণহত্যা করা হয়েছিল। নির্মমভাবে দা বতি দিয়ে আঘাত করতে থাকে এতে 58 জন আহত অবস্থায় পাওয়া গেছে। এখনো পাহাড়ি জুম্ম আদিবাসী 18 জন নিখোঁজ অবস্থায় কোন খোঁজ খবর পাওয়া যায়নি। ঐদিন ওই সময়ে বাঙালি সেটলার সেনাবাহিনী মিলিয়ে ঘরবাড়ি উপর অতর্কিত হামলা চালায়, হাজার হাজার পাহাড়ি ঘর বাড়ির উপর লুটপাট ডাকাতি করে, টাকা পয়সা, স্বর্ণ-রুপা, ধন-দৌলত লুটে নেই। এবং ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের পাহাড়ি জুম্ম আদিবাসী প্রায় 18000 হাজার ত্রিপুরা রাজ্যে শরণার্থী হিসেবে আশ্রয় গ্রহণ করতে বাধ্য হয়েছিলেন।
(৭.) বানরাইবারী বেলতলী বেলছড়ি পাহাড়ের জুম্ম আদিবাসী গণহত্যাঃ- খাগড়াছড়ি জেলার মাটিরাঙ্গা উপজেলায়, বাঙালি সেটেলার ও সেনাবাহিনী মিলিয়ে অতর্কিতে পাহাড়ে জুম্ম আদিবাসী উপর নির্মম ভাবে গণহত্যা চালিয়ে 200 জন পাহাড়ের জুম্ম আদিবাসীদের নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। তখনকার সময়ে 40 জন নিখোঁজ অবস্থায় রয়েছে। ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের 2000 জন পাহাড়ের জুম্ম আদিবাসী শরণার্থী হিসেবে আশ্রয় গ্রহণ করতে বাধ্য হয়েছিলেন। ওই এলাকায় বাড়িঘর পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল, বাঙালি সেটেলার ও সেনাবাহিনীরা, বাড়িঘর পুড়িয়ে দেওয়ার আগে স্বর্ণ-রুপা, টাকা-পয়সা, ধন-দৌলত সবকিছু লুটপাট ও ডাকাতি করে নিয়ে আসা হয়।
(৮.) তেপালং- আসালং- গৌরাঙ্গ পাড়া – তবলছড়ি- বরনাল- পাহাড়ের জুম্ম আদিবাসী গণহত্যাঃ- খাগড়াছড়ি জেলার মাটিরাঙ্গা থানায় বাঙালি সেটেলার ও সেনাবাহিনীর মিলিয়ে 18 সেপ্টেম্বর 1981 সালে, বাঙালি সেটেলার ও সেনাবাহিনীর মিলিয়ে নিরীহ পাহাড়ের জুম্ম আদিবাসী জনগণের ওপর নিষ্ঠুরভাবে হত্যা যজ্ঞ চালিয়েছিলেন, এই সময়ে নিরীহ পাহাড়ি জুম্ম আদিবাসী উপর 1000 জনকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। ঘর বাড়ির উপর অত্যাচার করে টাকা-পয়সা, সোনা-রূপা, ধন-দৌলত লুটপাট ও ডাকাতি করে নেই। তারপরে 35 টি বাড়িঘর পুড়িয়ে ছাই করে দেয়া হয়েছিল। ঐসময় অগণিত পাহাড়ের জুম্ম আদিবাসী ভারতের ত্রিপুরার রাজ্যের অগণিত পাহাড়ের জুম্ম আদিবাসী জগনগ আশ্রয় গ্রহণ করতে বাধ্য হয়েছিলেন।
(৯.) গোলকপতিমা ছড়া পাহাড়ের জুম্ম আদিবাসী গণহত্যা:-মাইচ্যেছড়া:
তারাবনছড়ি গনহত্যাঃ ১৯৮৩ সালের জুন মাসের ২৬ তারিখ জুলাই মাসের ১১, ২৬ ও ২৭ তারিখ এবং আগষ্ট মাসের ৯, ১০ ,১১ তারিখ সেনাবাহিনী ও সেটেলার বাঙ্গালীরা একত্রে গোলকপতিমাছড়া- মাইচ্যেছড়া – তারাবনছড়িতে পাহাড়ি-জুম্মদের গ্রামগুলোতে অগ্নি সংযোগ লুটতরাজ হত্যা ধর্ষণ , নারকীয়তা সৃষ্টি করেছিলো। এই গনহত্যায় ৮০০ জুম্ম নিহত হয়েছিল। নিহতদের সিংহ ভাগ বৃদ্ধ, নারী ও শিশু। গনহত্যার পর সরকার সেখানে বাঙ্গালী বসতি স্থাপন করে।
(১০) ভুষণছড়া পাহাড়ের জুম্ম আদিবাসী গনহত্যাঃ ৩১ মে ১৯৮৪ সালে ভুষণছড়া গনহত্যা সংঘটিত হয়েছিল। প্রথমে শান্তিবাহীনির সেনা ক্যাম্প আক্রমণের প্রতিশোধ হিসেবে বাঙালি সেনা সেটেলার হায়েনার দল ৩০৫ সেনা ব্রিগেড, ২৬ বেঙ্গল রেজিমেন্ট ও বি ডি আরের ১৭ নং ব্যাটালিয়ন মিলে নিরস্ত্র পাহাড়ি গ্রাম ( হাটবাড়িয়া, সুগুরী পাড়া, তেরেঙ্গা ঘাট, ভূষণছড়া, গোরস্তান, ভূষণবাঘ)৬ টি আদিবাসী গ্রাম জালিয়ে পুড়িয়ে দিয়েছিল। ৪০০ পাহাড়ি নিহত হয়েছিলো যার উল্লেখ যোগ্যা সংখ্যক ছিলো শিশু ও নারী। অনেক পাহাড়ি নারী সেনা দ্বারা গন ধর্ষনের পর হত্যা করা হয়েছিলো। আর ৭০০০ জুম্ম আদিবাসী পাহাড়ি শরনার্থী হিসেবে ভারতে ত্রিপুরা রাজ্যের আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়েছিল।
(১১) পানছড়ি পাহাড়ের জুম্ম আদিবাসী গনহত্যাঃ সেই দিন ছিল ১ মে ১৯৮৬ সাল এই গনহত্যা সংঘটিত হয় গোলক পদিমা ছড়া,কালানাল ছড়া,করমাপাড়া,শান্তিপুর,মির্জাবিল,হেদারাছড়া,পুঁজ গাঙ, হাতিমুক্তি পাড়া,মাতেশর পাড়া,নাবিদাপাড়া,ও দেওয়ান বাজারে গনহত্যা চালিয়েছিল। ২৯শে এপ্রিল শান্তিবাহীনি বি,ডি,আর ক্যাম্প আক্রমণ করেছিলো। তার ফলশ্রুতিতে সেনা আর সেটেলার বাঙ্গালীরা যৌথভাবে সেখানকার পাহাড়ি গ্রাম গুলোর মানুষজন কে ডেকে একটা মাঠে জড়ো করে নির্মমভাবে জবাই ও গুলি আর হত্যা। এতে ১০০ জনকে হত্যা করা হয় ও ২০০০০ জুম্ম পাহাড়ের আদিবাসী হাজারের অধিক ভারতের এিপুরা রাজ্যের শরণার্থী হিসেবে আশ্রয় গ্রহণ করে।
(১২) মাটিরাঙা পাহাড়ের জন্য আদিবাসী গনহত্যাঃ
পানছড়ির ঠিক একদিন পর ২রা মে ১৯৮৬ সালে মাটিরাঙা তে পাহাড়ি রিফিউজি যারা ভারতে পালাচ্ছিলো, সেই নিরস্ত্র দেশত্যাগী মানুষের উপর এলোপাথারি গুলি চালিয়েছিলো বর্বর নরপশু সেনাবাহিনীরা এতে ৭০ জন পাহাড়ি বৃদ্ধ,, শিশু, নারী, নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছিলো।
(১৩) কুমিল্লাটিলা-তাইন্দং, তবলছড়ি জুম্ম পাহাড়ি আদিবাসী গনহত্যাঃ- ১৮ মে ১৯৮৬ তে, আগের গনহত্যাগুলির ক্ষত না শুকাতেই মাটিরাঙা থেকে প্রায় ২০০ জন ত্রিপুরা নারী পুরুষের দল যারা বাঁচার আশায় শিলছড়ি থেকে ভারতীয় সীমান্তের দিকে পার হচ্ছিলো কিন্তু তাইদং , কুমিল্লাটিলা গ্রামের মাঝামাঝি এক সরু পাহাড়ি পথ পাড়ি দেবার সময় বাংলাদেশ বি ডি আর এর ৩১ ব্যাটালিয়নের নর পশু জোয়ানরা তাদের উপর হামলা চালায় যার ফলে প্রায় ১৬০ জনকে নৃশংস ভাবে হত্যা করা হয় , এমনকি বর্বর পশু জোয়ান বাহীনির গুলির হাত থেকে বেচে যাওয়া আহত দের কে সেটেলার বাঙাল এনে বেয়নেট খুচিয়ে ও দা দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। ঐ ঘটনার বেচে যাওয়া অল্প কিছু সাক্ষী আজো আছে।
(১৪) দিঘীনালা পাহাড়ের জুম্ম আদিবাসী গনহত্যা ঃ – খাগড়াছড়ি দিঘীনালা মেরুং -চংড়াছড়িতে ১৯ ডিসেম্বর ১৯৮৬ সালে নিরীহ আদিবাসী পাহাড়ি মানুষ জীবনের ভয়ে ভারতে পালানোর সময় সেনাবাহিনীরা পেছন থেকে গুলি করে নির্মম ও নিষ্ঠুরভাবে হত্যা করে ৩০ জনকে।
(১৫)হিরাচর, সারোয়াতলী খাগড়াছড়ি,পাবলাখালী পাহাড়ের জুম্ম আদিবাসী গনহত্যাঃ
৮, ৯, ১০ আগস্ট ১৯৮৮ সালে হিরাচর, সারোয়াতলী, খাগড়াছড়ি, পাবলাখালীতে ১০০ পাহাড়ি জুম্ম কে নির্মম ভাবে হত্যা করা হয়। অনেককে গুম করা হয়।গণধর্ষণ করা হয় পাহাড়ি নারীদেরকে।
(১৬)লংগদু পাহাড়ের জুম্ম আদিবাসী গনহত্যাঃ
৪ঠা মে, ১৯৮৯ সালে লংগদু তে ইউপি চেয়ারম্যান আবদুর রশিদ অজ্ঞাত নামা লোকের হাতে খুন হন। এর দায় চাপানো হয় শান্তিবাহীনির কাঁধে। এর জের ধরে সেনাবাহিনী সৃষ্ট ভি,ডি,পি ও সেটেলারদের ও সেনাবাহিনী একত্রে দলবেঁধে পাহাড়ী গ্রামে উপর হামলা করে। এতে নিহত হয় ৪০ জন আদীবাসি নারী পুরুষ শিশু। তাদের মৃতদেহ পর্যন্ত ফেরত দেয়া হয়নি। পুড়িয়ে দেয়া হয় বৌদ্ধ মন্দির। এমন কি তৎকালীন সাবেক চেয়ারম্যান অনিল বিকাশ চাকমার স্ত্রী , সন্তান ও নাতি কে পর্যন্ত নির্মম হত্যা যজ্ঞের শিকার হতে হয়। সেটেলার হায়েনারা আজো অনিল বিকাশ বাবুর সমস্ত জমি দখল করে রেখেছে।
(১৭) মাল্যে পাহাড়ের জুম্ম আদিবাসী গনহত্যাঃ
২রা ফেব্রুয়ারি, ১৯৯২ তে মাল্য গনহত্যা সংঘটিত হয়। ঐ দিন মারিস্যাতে রাঙ্গামাতটি গামী যাত্রীবাহী লঞ্চে এক বোমা বিস্ফোরনে এক যাত্রী ও চালক নিহত হন। বাংগালী অধ্যুষিত মাল্যেতে লঞ্চটে পৌছা মাত্র সেখানে ঔত পেতে বসে থাকা সশস্র সেটেলারা পাহাড়ের জুম্ম আদিবাসী যাত্রীদের উপর হামলা করে। এটে ৩০ জন জুম্ম নিহত হন যার মধ্যে ১৪ জনের লাশ উদ্ধার করা সম্ভব হয়। এটে অনেক যাত্রী রাংগামাটি হয়ে ঢাকা যাচ্ছিল। প্রতক্ষ্যদর্শীদের ভাষ্য থেকে জানা যায় যে এই ঘটনাটি আর্মিদের সাজানো পরিকল্পিত হত্যা কান্ড ঘটনা ঘটায় যাহা পরে গনমাধ্যমে শান্তিবাহিনীর উপর দোষ চাপানো হয়।
(১৮) লোগাং পাহাড়ের জুম্ম আদিবাসী গনহত্যাঃ
১০ই এপ্রিল, ১৯৯২ সালে লোগাং-এ পাহাড়ির জুম্ম জাতির বিরুদ্ধে নির্মম হত্যা যজ্ঞ চলে। সেই দিন এক পাহাড়ী মহিলা তার গাবাদি পশু চড়াতে গ্রামের অদূরে গিয়েছিলো সেখানে দুই জন সেটেলার বাঙাল দ্বারা সে ধর্ষিত হয়। এতে এক পাহাড়ি যুবক বাধা দিলে সেটেলাররা তাকে সেখানেই হত্যা করে, পরে এই ঘটনা শান্তিবাহীনির উপর চাপানো হয় এর জের ধরে সেনাবাহিনীও বাঙালি-সেটেলার দলবেঁধে ১৫০০ পাহাড়ি জুম্ম আদিবাসী জনসংখ্যা অধ্যুষিত গ্রামে হামলা চালিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করে ৪০০ জন পাহাড়ি জুম্ম আদিবাসী কে।এটে ৮০০ পাহাড়ি বাড়ি ঘরে, টাকা পয়সার স্বর্ণ-রুপা ধন-দৌলত লুটপাট ও ডাকাতি করে পরে অগ্নিসংযোগ করা হয়। পাশের গ্রামগুলো থেকে প্রায় ২০০০ জন পাহাড়িকে শরনার্থী হয়ে ভারতে ত্রিপুরা রাজ্যের গ্রহণ করতে বাধ্য হয়।
(১৯) ছোট ডুলু পাহাড়ের জুম্ম আদিবাসী গনহত্যা ঃ- রাঙ্গামাটি কাউখালীতে ছোট ডুলুতে সেনাবাহিনীরা আদিবাসী গনহত্যা সংঘটিত করেছে। ৩০মে ১৯৯২ সালে উক্ত গনহত্যায় ১২ জনকে হত্যা তাদের মধ্যে ৫ জনের লাশ পাওয়া যায়নি।৪০ টি মত ঘরবাড়ি টাকা-পয়সা স্বর্ণ-রুপা ধন দৌলত লুটপাট ও ডাকাতি করে নেই। এরপরে বাড়ীঘরগুলো অগ্নিসংযোগ ধ্বংসযজ্ঞ চালানো হয় ও ১ টি বৌদ্ধ মন্দির ধ্বংস করা হয়।
(২০) নানিয়াচর পাহাড়ের জুম্ম আদিবাসী গনহত্যাঃ ১৭ নভেম্বর ১৯৯৩ সালে নানিয়াচর বাজারে আদিবাসিদের শান্তিপুর্ন মিচ্ছিলে অতর্কিতে হামলা চালিয়ে বাঙ্গালি সেটেলারর-সেনাবাহিনীরা নিষ্ঠুর ও নির্মম ভাবে হত্যা করে নিরীহ জুম্ম আদিবাসী পাহাড়ীদেরকে। এর নেতৃত্বে ছিলো সেটেলারদের সংগঠন পার্বত্য গনপরিষদ যা নেতৃত্বে ছিলো মোঃ আয়ুব হোসাইন নামক হায়েনা নেতা এবং তৎকালীন বুড়িঘাট ইউ,পি চেয়ারম্যান আব্দুল লতিফ। এতে নিহত হয় ২৯ জন জুম্ম নাগরিক আহত হয় শতাধিক। এতে জুম্ম ছাত্ররা যখন প্রতিরোধ গড়ে তোলার চেষ্টা করে তখন সেনা ক্যাম্প হতে জুম্ম ছাত্রদের উপর উন্মুক্ত এলোপাথারি গুলি চালানো হয়।
(২১) তারাবনছড়ি পাহাড়ের জুম্মা আদিবাসী গনহত্যাঃ- তখন ছিল ১৯৮৩ সালে ২৬ জুন তারাবনছড়িতে আদিবাসী গনহত্যার সংঘটিত হয়। উক্ত গনহত্যায় ৮৭জনকে নিষ্ঠুর ও নির্মম ভাবে হত্যা ৪জন নারীকে ধর্ষণ ও অসংখ্যা বাড়ি ঘর লুটপাট অগ্নি সংযোগ করা হয়।
এছাড়াও, ১৯৯৫ সালে মার্চে বান্দরবান সদর, ২০০১ সালের আগষ্টে রামগড়, ২০০৩ সালের আগষ্টে মহালছড়ি, ২০০৬ সালে এপ্রিলে মাইসছড়িতে, ২০০৮ সালের ফেব্রুয়ারিতে বাঘাইহাটে, ২০১০ সালের ফেব্রুয়ারিতে বাঘাইহাট-খাগড়ছড়িতে এবং সর্বশেষ গুইমারা-মাটিরাঙ্গা-জালিয়াপাড়ায় গাড়ি থেকে নামিয়ে নিষ্ঠুর ও নির্মম ভাবে হত্যা করা হয়। এভাবে একের পর এক গনহত্যায় রক্তে রঞ্জিত হয়েছে পাহাড়ী মানুষের পার্বত্য চট্টগ্রাম। সেই গনহত্যারগুলির নিষ্ঠুর বর্বরতা এখনো জুম্মজাতিকে পিছু তাড়া করে বেড়ায়।
তিন পার্বত্য জেলায় 21 বার পাহাড়ের জুম্ম আদিবাসি গোপন গণহত্যা সংঘটিত ঘটনা গুলো কোন বাংলাদেশের জাতীয় দৈনিক পত্রিকায়, প্রিন্ট মিডিয়ায়, ইলেকট্রিক মিডিয়া, প্রকাশ করা হয়নি। তার কারণ বাংলাদেশ সরকারের পূর্ব পরিকল্পিত পাহাড়ীর জুম্ম আদিবাসী গণহত্যা বলেই। জুম্ম গণহত্যা করার পর পর শুরু হয়ে যায় বাংঙ্গীলির সেটলার বসতি স্থাপন।