রাঙামাটিতে সেটলার যুবক কর্তৃক ধর্ষণ চেষ্টার শিকার এক পাহাড়ি কলেজ ছাত্রী

ধর্ষণের চেষ্টার ঘটনায় জড়িত চিহ্নিত সেটলার যুবকরা। সংগৃহিত ছবি

নিজস্ব প্রতিনিধি।। রাঙামাটি শহরের সরকারি কলেজের পিছনে টিটিসি সংলগ্ন এলাকায় তিনজন বাঙালি (সেটলার) যুবক কর্তৃক এক পাহাড়ি কলেজ ছাত্রী (১৯) ধর্ষণ চেষ্টার শিকার হয়েছেন বলে খবর পাওয়া গেছে। পুলিশ অভিযুক্ত সেটলার যুবকদেরকে কাছে পেয়েও গ্রেফতার করেনি বলে অভিযোগ উঠেছে।

গতকাল মঙ্গলবার (১৯ জুলাই ২০২২) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার সময় এই ঘটনা ঘটে বলে জানা যায়।

অভিযুক্ত সেটলার যুবকদের নাম জানা যায়নি। তাদের মধ্যে দুইজন কলেজগেট এলাকায় এবং একজন বনরূপা এলাকায় থাকে বলে স্থানীয়রা জানান। নাম জানা না গেলেও মোবাইল ক্যামেরায় তোলা ছবিতে দুইজনকে স্পষ্টভাবে চেনা গেছে বলে জানান স্থানীয় লোকজন।

ভূক্তভোগী ছাত্রী রাঙামাটির একটি কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী। তার বাড়ি জুরাছড়ি এলাকায়। তবে বর্তমানে তিনি রাঙামাটি শহরে থেকে পড়াশুনা করেন বলে জানা গেছে।

স্থানীয় ও প্রত্যক্ষদর্শীদের সূত্রে জানা যায়, গতকাল বিকালের দিকে ওই ছাত্রী তার এক পাহাড়ি ছেলে বন্ধুকে নিয়ে রাঙামাটি সরকারি কলেজের পিছনে টিটিসি সংলগ্ন এলাকায় (যেখানে বর্তমানে ছাত্রী হোস্টেল নির্মাণ করা হচ্ছে) বেড়াতে যান। একপর্যায়ে, প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে তিনি একটু ঝোপের আড়ালে গেলে সেখানে ঘাপটি মেরে থাকা তিনজন বাঙালি সেটেলার যুবক তাকে ধরে জোরপূর্বক ধর্ষণের চেষ্টা করে। ধস্তাধস্তির পর সেখান থেকে কোনোরকমে পালিয়ে যান ওই ছাত্রী। ধস্তাধস্তির সময় তার পরনের প্যান্ট ও জামা ছিঁড়ে যায়।

এদিকে ছাত্রীর চিৎকার শুনে তার ছেলে বন্ধু সেদিকে এগিয়ে গেলে ওই সেটলার যুবকরা তাকেও মারধর করে। একপর্যায়ে, সেই ওই ছাত্রীর বন্ধুটি তার অন্যান্য বন্ধুদের মোবাইলে কল দিলে তাদের কয়েকজন ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয় এবং তাদের সাথেও তিন সেটেলার যুবকের ধস্তাধস্তি হয়। বিষয়টি তারা দ্রুত কলেজ প্রশাসনকে জানালে কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর তুষার কান্তি বড়ুয়া কোতোয়ালী থানা পুলিশকে খবর দেন।

এর পরপরই কোতোয়ালি থানার এসআই সাগর চৌধুরীর নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল এবং রাঙামাটি সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর তুষার কান্তি বড়ুয়াসহ কলেজ প্রশাসনের লোকজন ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন। তখনো পর্যন্ত ধর্ষণের চেষ্টাকারী বাঙালি সেটেলার যুবকরা সেখানে অবস্থান করছিল। কিন্তু সেখানে আগত লোকজনের অভিযোগ সত্ত্বেও পুলিশ ওই সেটেলার যুবকদের গ্রেফতার করার চেষ্টা করেনি বলে জানান প্রত্যক্ষদর্শীরা। অথচ পুলিশ ওই ছাত্রীর সাথে থাকা পাহাড়ি যুবকটিকে থানায় নিয়ে যায়। অবশ্য কিছুক্ষণ পর ছেড়ে দেয় বলে জানা গেছে।

প্রত্যক্ষদর্শীদের তথ্য মতে, ঘটনার সময় সেটেলার যুবকরা কিছুটা মাতাল অবস্থায় ছিল। পুলিশের সামনেই তারা ভুক্তভোগী ছাত্রীর বন্ধুদের ভবিষ্যতে দেখে নেবার হুমকি প্রদান করলেও পুলিশ তাদের কোন কিছুই করেনি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *