সুপ্রিয় চাকমা
রাঙ্গামাটি সরকারি মহিলা কলেজের ছাত্রী পূর্ণিমা চাকমা।
মামাতো ভাই পলাশ চাকমা বলেন, ‘পূর্ণিমা আত্মহত্যা করার মতো মেয়ে না, তাকে হত্যা করা হয়েছে। যার কারণে ঘটনা চাপা দিতে বাড়ির মালিক টাকা দিতে চাচ্ছেন পূর্ণিমার বাবাকে। যদি আত্মহত্যা হয়, তাহলে বাড়ির মালিক লক্ষাধিক টাকার ক্ষতিপূরণের প্রস্তাব দিতেন না।’
রাঙ্গামাটির রাজবাড়ী এলাকা থেকে কলেজছাত্রীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধারের পর রহস্য দানা বাঁধছে। আলামত বিশ্লেষণে পুলিশ এটিকে আত্মহত্যা মনে করলেও, পূর্ণিমার স্বজনরা হত্যা বলে সন্দেহ করছেন। তবে মামলা ছাড়াই শনিবার তারা মরদেহ গ্রহণ করেছে।
রাঙ্গামাটির কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কবির হোসেন বলেন, ‘জিডির ভিত্তিতে ময়নাতদন্তের পর কলেজছাত্রীর মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। থানায় মামলা হয়নি। তবে তদন্ত চলছে। মেয়েটি আত্মহত্যা করেছে না খুন হয়েছে, তা তদন্তের পর জানা যাবে। প্রাথমিকভাবে ঘটনাটি রহস্যজনক।’
পূর্ণিমা চাকমা রাঙ্গামাটি সরকারি মহিলা কলেজে দ্বিতীয় বর্ষে পড়তেন। তার বাড়ি জুরাছড়ি উপজেলার ৪ নম্বর দুমদুম্যা ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের বগাহালি এলাকায়। বাবার নাম সাধন চাকমা।
লেখাপড়ার জন্য পূর্ণিমা রাঙ্গামাটি শহরের রাজবাড়ী এলাকার মল্লিকা দেওয়ানের বাড়িতে ভাড়া থাকতেন। শুক্রবার বেলা আড়াইটার দিকে এ বাসা থেকেই পূর্ণিমার মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
অভিযোগ উঠেছে, ঘটনা আড়াল করতে বাড়ির মালিক এক লাখ টাকা দিতে চেয়েছেন পূর্ণিমার বাবাকে। আর সমঝোতার কারণেই হত্যা মামলা হচ্ছে না।
মামাতো ভাই পলাশ চাকমা বলেন, ‘পূর্ণিমা আত্মহত্যা করার মতো মেয়ে না, তাকে হত্যা করা হয়েছে। যার কারণে ঘটনা চাপা দিতে বাড়ির মালিক টাকা দিতে চাচ্ছেন পূর্ণিমার বাবাকে। যদি আত্মহত্যা হয়, তাহলে বাড়ির মালিক লক্ষাধিক টাকার ক্ষতিপূরণের প্রস্তাব দিতেন না।’
পলাশ প্রশ্ন করেন, পূর্ণিমা আত্মহত্যা করলে তার হাত ভাঙা ছিল কেন?
ঘটনার পরপরই ওসি কবির হোসেন জানান, কলেজছাত্রী ব্যক্তিগত সমস্যার কারণে গলায় ফাঁস নিয়েছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। এক দিন পরই ওসি বিষয়টি ‘রহস্যজনক’ বলে উল্লেখ করেছেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে পূর্ণিমার কয়েকজন বান্ধবী নিউজবাংলাকে জানান, পূর্ণিমা প্রায়ই বাসা পাল্টানোর কথা বলতেন। বাড়ির মালিকের সঙ্গে ঝামেলার কারণে সে হয়তো এমনটা চেয়েছিল। তবে মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে ধারণা দিতে পারেননি বান্ধবীদের কেউই।
মেয়ের মৃত্যু মেনে নিতে পারছেন না সাধন চাকমা। তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘রোববার পূর্ণিমার সঙ্গে কথা হয়েছিল। তখন সমস্যার কথা বলেনি। সে আত্মহত্যা করতে পারে না। তাকে হত্যা করা হয়েছে।’
ক্ষতিপূরণ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘বিষয়টি ৪ নম্বর দুমদুম্যা ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান রাজিয়ে চাকমা দেখছেন। তিনি বিস্তারিত জানেন।’
এ বিষয়ে জানতে রাজিয়ে চাকমাকে কয়েকবার কল করা হলেও তার মোবাইল ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।