পার্বত্য জেলা রাঙ্গামাটি, বান্দরবান ও খাগড়াছড়ি এবং পর্যটন শহর কক্সবাজারে আইন-শৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য দেশের অভিজাত বাহিনী খ্যাত ‘র্যাপিড একশন ব্যাটালিয়ন’ (র্যাব) এর একটি নতুন ব্যাটালিয়ন গঠন করতে ১৪টি বিভাগে মোট ৬৭৭টি পদ সৃষ্টি করা হবে।
সরকারী সূত্র অনুযায়ী, এইসব পদের মধ্যে রয়েছে, র্যাব -১৫ ইউনিটের পরিচালক পদ ১টি, ডেপুটি ডিরেক্টর (ডিডি)-র পদ ৬টি, সিনিয়র এসিস্ট্যান্ট ডিরেক্টর’র পদ ৩৫টি, ডেপুটি এসিস্ট্যান্ট ডিরেক্টর’র পদ ৫৪টি, ধর্মীয় শিক্ষকের পদ ১টি, সাব-ইন্সপেক্টর’র পদ ১৩০টি ও এসিস্ট্যান্ট সাব-ইন্সপেক্টর’র পদ ১৫২টি। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পাবলিক সেকিউরিটি ডিভিশন এ ব্যাপারে একটি প্রস্তাব প্রস্তুত করেছে এবং বৃহস্পতিবার প্রশাসনিক উন্নয়ন বিষয়ক সচিব কমিটির সভায় ইহা উপস্থাপন করা হবে।
সূত্র বলেছে, গত ২৫ নভেম্বর ২০১৮ মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ‘পার্বত্য ব্যাটালিয়ন’ নামে নতুন এই র্যাব-১৫ ইউনিট সম্প্রতি অস্থায়ী ভিত্তিতে কক্সবাজার এলাকায় ইহার কার্যক্রম শুরু করেছে। নতুন ব্যাটালিয়ন র্যাব-১৫, কক্সবাজারে থাকা বিরাট সংখ্যক রোহিঙ্গাদের কথা মনে রেখে, তিন পার্বত্য জেলা ও কক্সবাজারের জন্য কাজ করবে এবং তিন পার্বত্য জেলায় আইন ও শৃঙ্খলা বজায় রাখতে সাহায্য করবে। র্যাব গঠন করা হয় ২৬ মার্চ ২০০৪ পুলিশ, সেনাবাহিনী, নৌ বাহিনী, বিমান বাহিনী, বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ ও আনসার সদস্যদের নিয়ে।
আদিবাসী অধিকারকর্মীরা পার্বত্য চট্টগ্রামের তিন পার্বত্য জেলায় র্যাব মোতায়েনের বিষয়ে তাদের উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তারা বলেন যে, ইহা পার্বত্য চট্টগ্রামে আরও অধিকতর মানবাধিকার লংঘনের কারণ হবে, যা চলমান সামরিক নিপীড়নের কারণে ইতোমধ্যে মানবাধিকার লংঘনের সম্মুখীন।
পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদের এক সদস্য, যিনি তার নাম প্রকাশ করেননি, তিনি বলেন যে, পার্বত্য চট্টগ্রামে র্যাব ব্যাটালিয়ন গঠনের বিষয়ে পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদের সাথে পরামর্শ করা হয়নি, অথচ পার্বত্য চুক্তি অনুযায়ী প্রণীত পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ আইন ১৯৯৮ অনুসারে, ‘সাধারণ প্রশাসন’ এবং ‘আইন ও শৃঙ্খলা’ বিষয়সমূহ তত্ত্বাবধান ও সমন্বয় সাধনের জন্য পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদের এখতিয়ারের মধ্যে পড়ে। পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদের সদস্য বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ ও তিন পার্বত্য জেলা পরিষদের পরামর্শ ব্যতিরেকে পার্বত্য চট্টগ্রামে র্যাবের মোতায়েন হবে পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির সরাসরি লংঘন।
সূত্র: দি ইন্ডিপেন্ডেন্ট, ১০ অক্টোবর ২০১৯