দোবাকাবা-নভাঙায় সেনা ক্যাম্প স্থাপন: জায়গা মালিক ও আন্দোলনকারীদের উপর চাপ

দোবাকাবা-নভাঙায় জমি দখল করে নির্মাণাধীন সেনা ক্যাম্প।

রাঙামাটির কাউখালি উপজেলার দোবাকাবা-নভাঙা এলাকায় সেনা ক্যাম্প স্থাপনের বিরুদ্ধে এলাকাবাসী গতকাল রাঙামাটি শহরে মানববন্ধন করার পর তাদের উপর একটি বিশেষ মহল থেকে চাপ দেয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

জানা গেছে, মানববন্ধনে বক্তব্য দেয়ার পর উষাতন চাকমাকে আজ মঙ্গলবার (১ ডিসেম্বর) রাঙামাটি ব্রিগেড অফিসে ডাকা হয়েছে। তার সাথে ফটিকছড়ি ইউনিয়নের ৭ নং ওয়ার্ডের মেম্বার অমল কান্তি তালুকদারকেও যেতে বলা হয়।

এ ছাড়া সাবেক মহিলা ইউপি সদস্য পাইক্রামা মারমাকেও গোয়েন্দা সংস্থার লোকজন ফোনে হুমকি দিচ্ছে বলে জানা গেছে। তিনিও গতকাল মানববন্ধনে বক্তব্য দেন।

দোবাকাবা গ্রামের একজন বাসিন্দা জানান, ক্যাম্প নির্মাণের জন্য জমির বেদখল নিয়ে সেখানে অবস্থান করা ক্যা্প্টেন স্থানীয় দোকানে লোকজনের সামনে জমির মালিক অরুণ চাকমাকে হুমকি দিয়ে বলেছেন – ‘যদি তুমি রাঙামাটি ব্রিগেড অফিসে না যাও তাহলে তোমাকে গ্রেফতার অথবা গুলি করা হবে।’

অরুণ চাকমা গতকাল মানববন্ধনে বক্তব্য দিয়েছিলেন। এজন্য তিনি ক্ষুদ্ধ হয়েছেন বলে ক্যা্প্টেন তাকে জানান।

উক্ত সেনা কমান্ডার আরও বলেন, ‘তোমাদের (এলাকার জনগণ) সাথে অনেক ভালো ব্যবহার করা হয়েছে। আর হবে না।’

ক্যাম্প স্থাপন বন্ধের দাবিতে গতকাল (সোমবার) রাঙামাটি শহরের ডিসি অফিসের সামনে মানববন্ধন করে এলাকাবাসী

এছাড়া আরও অভিযোগ রয়েছে, দলিলের মাধ্যমে ক্যাম্পের জন্য জমি দিতে জায়গার মালিকদের উপর চাপ দেয়া হচ্ছে। তাদেরকেও রাঙামাটি ব্রিগেড সদর দপ্তরে ডাকা হয়েছে।

তবে দোবাকাবা গ্রামের একজন এ প্রতিবেদককে বলেন, ‘সমস্যাটি কেবল জায়গার মালিক ও মেম্বার চেয়ারম্যানদের বিষয় নয়। এটা পুরো গ্রামবাসীর একটি জীবিকার সমস্যা। তাই তাদের উপর চাপ দিয়ে বা ষড়যন্ত্র করে আন্দোলন দমনের চেষ্টা করা হলেও বিষয়টি নিষ্পত্তি হয়ে যাবে না। কারণ আমরা অর্থাৎ এলাকার জনগণ তা মেনে নেব না।’

একজন সাবেক মেম্বার বলেন, ‘তারাই (আর্মিরা) বিনা কারণে অন্যের জমি জোরপূর্বক দখল করে ক্যাম্প দিয়ে সমস্যা সৃষ্টি করে, আর আমাদের হুমকি দেয়। তারা অন্যায় করে, জোরজুলুম করে, আর আমাদের মত নিরীহ লোকজনকে ভয় দেখায়। যেন আমরা কত অপরাধ করেছি।’

তিনি বলেন, ‘আমরা কি তাদেরকে বলেছি এখানে ক্যাম্প দিতে? আমরা কি বলেছি এখানে সন্ত্রাসী আছে, আমাদের নিরাপত্তা দিতে আসুন? আমরা তো সেসব বলিনি। তারাই এসে জমি বেদখল নিয়েছে ক্যাম্প দেয়ার জন্য। আর এতে করে তারা আমাদের জীবন জীবিকা হুমকির মুখে ফেলে দিয়েছে।’

তিনি জোর দিয়ে বলেন তারা তাদের এলাকায় ক্যাম্প চান না। তিনি তাদের এলাকা থেকে সেনাদের প্রত্যাহারের দাবি জানান।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *