কাউখালীতে সেনাবাহিনী কর্তৃক ৫ নিরীহ গ্রামবাসীকে আটক

প্রতীকী ছবি

রাঙামাটির কাউখালী উপজেলার ঘাগড়া ইউনিয়নের কজইছড়ি গ্রাম থেকে আজ রবিবার (৫ ডিসেম্বর ২০২১) ভোরে সেনাবাহিনী কর্তৃক ৫ জন নিরীহ গ্রামবাসীকে আটক করে স্থানীয় ঘাগড়ার চাম্পাতলী ক্যাম্পে নিয়ে যাওয়ার খবর পাওয়া গেছে।

আটককৃতরা হলেন- ১। নবীন সুন্দর চাকমা ওরফে শেফালী বাপ (৬৮), পিতা: মৃত- টওরোমুনি চাকমা ও তার দুই পুত্র ২। সুখেন চাকমা (৩৮), ৩। জ্ঞান জ্যোতি চাকমা এবং ৪। নিক্সন চাকমা (২৮), পিতা- চিগোন ধন চাকমা ৫। রিনয় চাকমা (৩৮), পিতা: মধুচন্দ্র চাকমা। তারা সকলে কজইছড়ি গ্রামের বাসিন্দা।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, আজ ভোর ৫টার দিকে ঘাগড়ার চম্পাতলী ক্যাম্প থেকে একদল সেনা সদস্য কজইছড়ি গ্রামে হানা দেয়। এ সময় সেনারা উক্ত গ্রামবাসীদের বাড়ি-ঘরে ব্যাপক তল্লাশি চালায় এবং তাদের স্ত্রী-পুত্র শিশু কন্যাদের সামনেই ব্যাপক মারধর করেছে বলে জানা গেছে। সেনারা অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে তাদের কাছ থেকে অবৈধ অস্ত্রের খোঁজ করছে। যদিও তল্লাশি করে তারা অবৈধ কোন কিছু উদ্ধার করতে পারেনি। নারীরা মারধরে বাধা দিতে গেলে তাদেরও হেনস্থা করে আটকিয়ে রাখা হয়। এছাড়া সেনারা একই গ্রামের ধন্যা মনি চাকমা, পিতা- বিরন্দ চাকমার বাড়িতেও তল্লাশি চালায়। পরে সেনা উক্ত ৫জন নিরীহ গ্রামবাসীকে আটক করে ক্যাম্পে নিয়ে যায়।

আটককৃতদের মধ্যে রিনয় চাকমা গতকাল রাতে সুখেন চাকমার বাড়িতে আয়োজিত “ধান তুলোনি খানা” (নবান্ন উৎসব) যোগ দিতে গিয়েছিলেন এবং সেখানেই রাতযাপন করেন। নবীন সুন্দর চাকমা এলাকার একজন বয়োজ্যেষ্ঠ মুরুব্বী।

সর্বশেষ (দুপুর ১২:৪০টা) প্রাপ্ত খবরে জানা গেছে, ঘাগড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জগদীশ চাকমা ও ৩ নং ওয়ার্ডের মেম্বার মন্টু চাকামসহ এলাকার মুরুব্বীরা আটক নিরীহ গ্রামবাসীদের ছাড়িয়ে আনার জন্য চাম্পাতলী ক্যাম্পে গেলে সেনারা আটককৃতদের মধ্যে সুখেন চাকমাকে ছেড়ে দিলেও বাকীদের ছেড়ে দেয়নি। তাদেরকে “অস্ত্র ও গাঁজা” গুজে দিয়ে ছবি তুলে পুলিশের নিকট সোপর্দ করার প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে জানা গেছে।

এদিকে, সেনাবাহিনী কর্তৃক নিরীহ লোকজনকে আটকের ঘটনায় এলাকায় তীব্র ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে।

অপরদিকে, বিলম্বে পাওয়া আরেক খবরে জানা গেছে, গতকাল (শনিবার) বেলা ৩টার দিকে সেনাবাহিনীর চিহ্নিত স্পাই মিল্টন তঞ্চঙ্গ্যা ২ জন ডিজিএফআই-র সদস্যকে সঙ্গে নিয়ে একই এলাকার কজইছড়ি নীচ পাড়ার বাসিন্দা সূর্য্যধর চাকমা (৪৮), পিতা- মৃত: নীরঞ্জন চাকমা বাড়িতে তল্লাশি করেছে। মো. তারেক নামে ডিজিএফআই-র সদস্যকে চেনা গেছে। মিল্টনসহ তাদের হাতে পিস্তল ছিল বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *