বাঙালি মুসলিম সেটেলার মো: ইব্রাহীম গত ২৭ আগস্ট ২০১৯ ‘থ্রি ইন্ডিজেনাস ভিলেজেস ফেস ল্যান্ড গ্র্যাবিং’ শীর্ষক এক প্রতিবেদনে ‘আদিবাসী’ শব্দটি ব্যবহার করার জন্য দ্য ডেইলি স্টারের বান্দরবান প্রতিনিধি সঞ্জয় কুমার বড়ুয়াকে অভিযোগ করে বান্দরবানের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো: হাসানের আদালতে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের আওতায় আরেকটি মামলা দায়ের করেছে।
তবে জজ ‘আদিবাসী’ অভিধা ব্যবহার করার ক্ষেত্রে আইনগত কোন বাধা নেই বলে উল্লেখ করে মামলাটি খারিজ করে দেন। নির্দেশ প্রদানের সময় জজ বলেন, “বাংলাদেশ সরকার ‘আদিবাসী’ অভিধা ব্যবহারকরণকে নিরুৎসাহিত করে, তবে ইহা ‘ইন্ডিজেনাস’ ব্যবহারকরণকে নিরুৎসাহিত করে না”, এর সাথে যোগ করে আরও বলেন, দুটি শব্দ একই জিনিসকে বুঝায় না।
জজ বলেন, “অতএব, এটা সুস্পষ্ট নয় যে, অভিযুক্ত তার প্রতিবেদনে ‘আদিবাসী’ শব্দটি ব্যবহার করে একটি অপরাধ করেছেন।” “থ্রি ইন্ডিজেনাস ভিলেজেস ফেস ল্যান্ড গ্র্যাবিং” শীর্ষক প্রতিবেদনটি প্রকাশিত হয় দ্য ডেইলি স্টারে গত ২৮ জুলাই।
একটি প্রতিবেদনে ‘আদিবাসী’ শব্দ ব্যবহারের জন্য সঞ্জয় কুমার বড়ুয়ার বিরুদ্ধে দ্বিতীয় মামলাটি দায়ের করা হয় পার্বত্য চট্টগ্রামে বাঙালি সেটেলারদের একটি প্লাটফর্ম পার্বত্য বাঙালি ছাত্র পরিষদের সাবেক সহ-সভাপতি মোঃ ইব্রাহীম কর্তৃক বান্দরবান জেলা সেসন জজ আদালতে গত ১২ সেপ্টেম্বর। মামলার বিবরণে তিনি অভিযোগ করেন যে, সংবাদ প্রতিনিধি পাহাড়ে অরাজকতা সৃষ্টির চেষ্টায় দেশের সংবিধানের ধারা ২৩(ক) ও ৩৬(২) লংঘন করে শব্দটি ব্যবহার করেন। আদালতের বেঞ্চ সহকারী দেবাশীষ দেবনাথ বলেন, মামলাটি নথিভুক্ত করার পর, আদালত শুনানির জন্য ২ অক্টোবর নির্ধারণ করেন।
সর্বশেষ মামলার বিবরণে মোঃ ইব্রাহীম আরও অভিযোগ করেন যে, সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট হাসান মামলাটি একতরফাভাবে খারিজ করেন।
মামলাটি দায়ের করার ক্ষেত্রে তাকে কেউ প্রভাবিত করেছিলেন কিনা জিজ্ঞাসা করা হলে, মো: ইব্রাহীম বলেন, “পার্বত্য চট্টগ্রামের কিছু বাঙালি নেতা ও আমি গত ২০ আগস্ট একটি সভা করি এবং প্রতিবেদকের বিরুদ্ধে মামলাটি দায়ের করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করি, যেহেতু তিনি দীর্ঘ দিন ধরে পাহাড়ি (আদিবাসী জুম্ম) জনগণের অধিকারের জন্য কাজ করে আসছেন।”
গত ১৯ আগস্ট পার্বত্য অধিকার ফোরাম নামে বাঙালি সেটেলারদের আরেকটি ফোরামের সভাপতি মাসুম রানা একই কারণে সঞ্জয়ের বিরুদ্ধে আরেকটি মামলা দায়ের করেন।
বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরামের সাধারণ সম্পাদক সঞ্জীব দ্রং এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, “আদিবাসী অধিকারের জন্য কাজ করা এক সাংবাদিকের বিরুদ্ধে বহুবিধ মামলা দায়েরকে আমরা জোরালোভাবে প্রতিবাদ জানাই”, এবং আরও বলেন যে, এধরনের মামলা দায়েরকরণ দেশে সংবাদ মাধ্যমের স্বাধীনতার প্রতি হুমকি।