শৈশবের বাবার স্মৃতিগুলো যেন এখনো অমলিন অভিনেতা মোশাররফ করিমের কাছে। বাড়িতে থাকলে বাবা যা করতেন, তিনিও তা-ই করতেন। বাজারে চা খেতে গেলে বাবা তাঁকেও সঙ্গে নিতেন। বাবা যেভাবে চা খেতেন, মোশাররফ করিমও খেতেন সেভাবে।জনপ্রিয় এ অভিনেতা প্রথম আলোর এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছিলেন, তাঁর ধারণা, বাবাকে অনুকরণ করতে গিয়েই অভিনয়ের সুপ্ত বীজ জেগে ওঠে। এ সময়ে তিনি অনুকরণ নিয়ে আরও বলেছিলেন, তাঁর বাবার কথা বলা, পড়া, চলা, হাঁটা এমনকি চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য তিনি শৈশবে বাবার কাছ থেকে পেয়েছেন।
কেমন ছিল বাবার সঙ্গে মোশাররফ করিমের সম্পর্ক? শৈশব থেকেই মোশাররফ বাবার নেওটা। বাবা যা যা করবেন, তাঁর যেন সেগুলোই করতে হবে। বাবার পেছনে পেছনে ঘোরা ছিল মোশাররফের অভ্যাস। এমনও হয়েছে, চাচাতো ভাই বা সহপাঠী বন্ধুদের সঙ্গে খেলছেন, হঠাৎ দেখলেন দূরে বাবা আসছে…ছুটে গিয়ে বাবাকে জড়িয়ে ধরতেন। ‘যত দিন জীবিত ছিলেন, তত দিন বাবা ছিলেন আমার সেরা বন্ধু,’ বলেন মোশাররফ করিম।
মোশাররফ করিম প্রথম আলোকে আরও বলেছিলেন, ‘আমার প্রায়ই মনে হয়, বাবা বেঁচে থাকলে তাঁকে শুটিংয়ে নিয়ে আসতাম। অন্য সবার মতো বাবা আমার শুটিং দেখে হেসে ফেলতেন। আমি ছুটে গিয়ে বাবাকে জড়িয়ে ধরতাম। বাবার সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক দেখে সবাই হেসে ফেলত।’
মোশাররফ করিমের বাবা খুব আধুনিক, একই সঙ্গে শৌখিন মানুষ ছিলেন। দামি ঘড়ি, দামি কলম পছন্দ করতেন। আফসোসের কথাও জানালেন মোশাররফ। তিনি বলেন, ‘কয়েক বছর আগে সস্ত্রীক কলকাতা যাই। যাদবপুর সুপার সিটি মল নামের একটি মার্কেটে হঠাৎ লক্ষ করি বাবার ব্যবহার করা একটি নামীদামি ব্যান্ডের কলম। আমার খুব ভালো লাগল। কিন্তু আমার কাছে কোনো রুপি ছিল না, শুধু ডলার। ডলার ভাঙাতে গেলে প্লেন মিস করব। কলমটি কিনতে খুব ইচ্ছা করছিল। অনেক অনুনয়-বিনয় করেও ডলার দিয়ে সেই কলমটি কিনতে পারলাম না। মনটা ভেঙে গিয়েছিল।’ বরিশালের গৌরনদী উপজেলার পিঙ্গলকাঠি গ্রামে শৈশবের কয়েকটি বছর কাটে এই অভিনেতার।