নিজস্ব প্রতিনিধি।। খাগড়াছড়ির মাটিরাঙ্গায় সীমান্ত সড়ক নির্মাণের নামে চলছে ব্যাপক পাহাড় কাটা, স্থানীয় বাসিন্দাদের ফসল ও বাগান-বাগিচা ধ্বংসের মহোৎসব। সরেজমিনে সড়ক নির্মাণ এলাকায় গিয়ে এ চিত্র দেখা গেছে।
গত বছর (২০২১) সেপ্টেম্বরে রামগড়ের পিলাকঘাট এলাকা থেকে এ সড়কটি নির্মাণ কাজ শুরু করা হয়। মাটিরাঙ্গার তবলছড়ি পর্যন্ত ৫৫ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যৈর এ সড়কটি নির্মাণ করছে সেনাবাহিনীর কনস্ট্রাকশন বিভাগের ২০ ইঞ্জিনিয়ার কনস্ট্রাকশন ব্যাটালিয়ন (ইসিবি)।
মাটিরাঙ্গা উপজেলার ৮নং ওয়ার্ডের চালতা ছড়া এলাকায় সড়ক নির্মাণ স্থানে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সড়কটি নির্মাণের জন্য আশে-পাশে ব্যাপকভাবে কাটা হচ্ছে পাহাড়, ধ্বংস করে দেওয়া হচ্ছে স্থানীয় বাসিন্দাদের বিভিন্ন ফসল ও বাগান-বাগিচা। এ যেন সড়ক নির্মাণের নামে পাহাড় কাটা ও স্থানীয়দের ফসল, বাগান-বাগিচা ধ্বংসের এক মহোৎসব চলছে। যার ফলে প্রাকৃতিক পরিবেশেরও ব্যাপক ক্ষতিকর প্রভাব পড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
পরিবেশ অধিদপ্তর কর্তৃক বিভিন্ন স্থানে পাহাড় কাটার দায়ে জরিমানা বা শাস্তি প্রদানের খবর আমরা পত্র-পত্রিকায় প্রায়ই দেখে থাকি। কিন্তু পার্বত্য চট্টগ্রামে সীমান্ত সড়কের নামে যে ব্যাপক পাহাড় কেটে পরিবেশের ক্ষতি করা হচ্ছে তা নিয়ে পরিবেশ অধিদপ্তর বা সরকারের কোন ভ্রুক্ষেপ নেই। পার্বত্য চট্টগ্রামে যেন পরিবেশ রক্ষার কোন দরকার নেই, তথাকথিত উন্নয়নই সবকিছু!
এদিকে, স্থানীয় এলাকাবাসী উন্নয়নের নামে এমন ধ্বংসাত্মক কার্যক্রমে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তারা আশঙ্কা প্রকাশ করে এ প্রতিবেদকে বলেন, বতর্মানে যে সীমান্ত সড়ক নির্মাণ কাজ চলছে তা আসলে উন্নয়নের নামে স্থানীয় পাহাড়ি বাসিন্দাদের বাস্তুভিটা থেকে উচ্ছেদের মাধ্যমে নিশ্চিহ্ন করে দেয়ার একটা চক্রান্ত। তারা বলেন, যে উন্নয়ন আমাদের ফসল-বাগান-বাগিচা ধ্বংস করে দেয়, আমাদের ভুমি-ভিটেমাটি কেড়ে নেয়, প্রাকৃতিক পরিবেশের ক্ষতি করে সে ধরনের উন্নয়নতো আমাদের দরকার নেই। আমরা এই এলাকায় নিজেদের বসতভিটা ও জায়গা-জমিতে নিরাপদে বসবাস করার নিশ্চয়তা চাই।
উল্লেখ্য, গত বছর জমির ফসল ও বাগান-বাগিচা ধ্বংস করে সড়কটি নির্মাণ কাজ শুরু করা হলে স্থানীয় পাহাড়ি বাসিন্দারা এর প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন। তারা সড়ক নির্মাণ কাজ বাতিলের দাবি জানিয়ে নির্মাণাধীন সড়কের পাশে গত বছর (১ অক্টোবর ২০২১) মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছিলেন।