নিজস্ব প্রতিবেদক।। সেনাবাহিনী ও আওয়ামী লীগ মদদপুষ্ট ইউপিডিএফ (গণতান্ত্রিক) সন্ত্রাসীরা সম্প্রতি বান্দরবান সদর উপজেলার টংকাবতী ইউনিয়ন এলাকা থেকে অপহৃত কার্বারি বিজয় হংস চাকমাকে (৫৮) ছেড়ে দিয়েছে, কিন্তু কার্বারির ভাইপো নরেন্দ্র চাকমাকে (৩৫) ধরে নিয়ে গিয়ে আটক করে রেখেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
সন্ত্রাসীরা বর্তমানে নরেন্দ্র চাকমাকে বান্দরবান সদর উপজেলার মেঘলা পর্যটন এলাকার চাকমা পাড়ার বৌদ্ধ বিহারের তাদের দখলকৃত জায়গায় আটকে রেখে নির্যাতন করছে বলে বিশ্বস্ত সূত্রে খবর পাওয়া গেছে।
উল্লেখ্য, গত ১৭ জুন ২০২২ বিকাল আনুমানিক ৩:০০ টার দিকে কার্বারি বিজয় হংস চাকমাকে তার নিজ বাড়ি থেকে অপহরণ করে ইউপিডিএফ (গণতান্ত্রিক) দলের বান্দরবান জেলা শাখার সভাপতি মংপু মারমা (হেডম্যান), প্রশাসনিক দায়িত্বে থাকা অনুপম চাকমা ও অনুমং মারমা’র নেতৃত্বে সন্ত্রাসীদের একটি সশস্ত্র দল। অপহরণের পর ১ লক্ষ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে সন্ত্রাসীরা। পরে অনলাইন গণমাধ্যম ‘হিল ভয়েস’সহ সামাজিক মাধ্যমে বিষয়টি প্রচার হওয়ার পর ৮ ঘন্টার ব্যবধানে ১৮ জুন ২০২২ সকাল ১১:০০ টার দিকে অপহৃত বিজয় হংস চাকমাকে ছেড়ে দেয় সন্ত্রাসীরা।
জানা গেছে, ১৮ জুন ২০২২ সন্ত্রাসীরা বিজয় হংস চাকমাকে ছেড়ে দেয়ার কথা বলে নরেন্দ্র চাকমাকে ডেকে এনে নরেন্দ্র চাকমার নিকট তার জেঠা (পিতার বড় ভাই) বিজয় হংস চাকমাকে হস্তান্তর করে। এর পরপরই নরেন্দ্র চাকমা তার জেঠা বিজয় হংস চাকমাকে নিয়ে বাড়ির উদ্দেশে রওনা দেন। কিন্তু পথে রেইছা সেনা ক্যাম্পের চেকপোস্টে পৌঁছার সাথে সাথে ক্যাম্পের সেনা সদস্যরা বিজয় হংস চাকমাকে ছেড়ে দিলেও নরেন্দ্র চাকমাকে আটক করে রাখে।
সেনা সদস্যরা নরেন্দ্র চাকমাকে আটক করে রাখার বিশ মিনিট পরই সেখানে এসে উপস্থিত হয় ইউপিডিএফ (গণতান্ত্রিক) সন্ত্রাসী দলের সদস্য অটল চাকমা, অনুপম চাকমা ও রাহুল চাকমা। এর পরপরই তারা মেঘলা পর্যটন এলাকার চাকমা পাড়াস্থ তাদের আস্তানায় নরেন্দ্র চাকমাকে ধরে নিয়ে যায়। এখনও পর্যন্ত নরেন্দ্র চাকমাকে সেখানে আটক করে রাখা হয়েছে এবং নির্যাতন করা হচ্ছে বলে খবর পাওয়া গেছে।
এদিকে এলাকাবাসী সবকিছু জানলেও কাউকে কোনো জানাতে ভয় পাচ্ছে বলে জানা গেছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় এক মুরুব্বি বলেন, ইউপিডিএফ (গণতান্ত্রিক) সন্ত্রাসী দলের সদস্যদের কর্তৃক সেনাবাহিনীর চেকপোস্ট থেকে নরেন্দ্র চাকমাকে ধরে নিয়ে যাওয়ার ঘটনা সুস্পষ্টভাবে প্রমাণ করে যে এতে সেনাবাহিনী ও সন্ত্রাসীদের যোগসাজস রয়েছে। সেনাবাহিনীর মদদে ও ষড়যন্ত্রেই এসব সন্ত্রাসীরা পরিচালিত হচ্ছে এবং যা কিছু সন্ত্রাসী কর্মকান্ড চালাচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, ইউপিডিএফ (গণতান্ত্রিক) সন্ত্রাসীদের কর্তৃক এভাবে কোনো মানুষকে আটকে রাখা ও নির্যাতন করা সম্পূর্ণভাবে বেআইনী এবং মানবাধিকার লংঘন।
আজ বিকাল বেলা পর্যন্ত নরেন্দ্র চাকমার সর্বশেষ খবর জানা যায়নি।