নিজস্ব প্রতিনিধি।। রাঙামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলার বঙ্গলতলী ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের করেঙাতলী বড়ুয়া পাড়া এলাকায় পাহাড়ি কলেজ ছাত্রীকে গণধর্ষণের প্রতিবাদে গত ৫ আগস্ট যারা বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশে অংশগ্রহন করেছেন তাদেরকে এখন সেনাবাহিনী খোঁজাখুঁজি শুরু করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এতে জনমনে নানা প্রশ্ন ও উদ্বেগ দেখা দিয়েছে।
ভুক্তভোগী ওই ছাত্রীকে ধর্ষণের ঘটনায় জড়িত ৫ জনের মধ্যে যীশু চৌধুরী ও বিপ্লব বড়ুয়া বঙ্গলতলী ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক। ইতোমধ্যে তাদেরকে সংগঠন থেকে অব্যাহত দেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। আর অপর তিন জন মো. আরিফ, মো. রাসেল ও অমল বড়ুয়া তাদের সহযোগী।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত ৫ আগস্ট বঙ্গলতলী ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে উক্ত ধর্ষণের ঘটনা নিয়ে এক সালিশ বৈঠকের আয়োজন করা হয়। এতে চেয়ারম্যান জ্ঞান জ্যোতি চাকমাসহ স্থানীয় মুরুব্বীরা উপস্থিত ছিলেন। সালিশে ধর্ষণকারীদের হাজির করার জন্য স্থানীয় বাঙালি মুরুব্বীদেরকেও জানানো হয়।
কিন্তু সেদিন সেনাবাহিনী ধর্ষণকাণ্ডে জড়িতদেরকে করেঙাতলী ক্যাম্পে নিয়ে গেলেও পরে সেখান থেকে তাদেরকে ছেড়ে দিয়ে পালানোর সুযোগ করে দেয়।
ঐদিন স্থানীয় বাঙালি মুরুবিরা ক্যাম্পে গিয়ে ধর্ষণকারীদের খোঁজ করলে জনৈক সুবেদার ‘তাদেরকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে’ বলে জানান। সেনাদের এমন কথায় এক বাঙালি মুরুব্বি দায়িত্বরত ঐ সুবেদারের কাছ থেকে “অপরাধীদের কেন এভাবে ছেড়ে দেওয়া হলো” জানতে চাইলে বাঙালি মুরুব্বীদের সাথে সেনাদের বাক্-বিতণ্ডা হয় বলে জানা যায়।
উক্ত ধর্ষণ ঘটনায় ইতোমধ্যে ভিকটিম ছাত্রীর বাবা বাদী হয়ে থানায় মামলা দায়ের করেছেন। কিন্তু পুলিশ এখনো ধর্ষকদের গ্রেফতার করেনি। অপরদিকে সেনাবাহিনী ধর্ষণের ঘটনায় জড়িতদের ক্যাম্প থেকে ছেড়ে দিলেও এখন উল্টো ঘটনার প্রতিবাদীকারীদের খোঁজাখুঁজি করায় ধর্ষকদের শাস্তি হবে কিনা তা নিয়ে এলাকার জনমনে নানা প্রশ্ন, সন্দেহ ও উদ্বেগ দেখা দিয়েছে।
উল্লেখ্য, মামলার এজাহার অনুযায়ী গত ১৫ জুলাই বিপ্লব বড়ুয়ার ডাকে সাড়া দিতে গিয়ে ওই কলেজ ছাত্রী গণধর্ষণের শিকার হয়। কিন্তু ঘটনাটি এতদিন প্রকাশ না পেলেও পরে জানাজানি হলে ৫ আগস্ট পার্বত্য চট্টগ্রাম নারী সংঘসহ কয়েকটি সংগঠন করেঙাতলী ও সাজেকে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন এবং ঐদিনই ভিকটিম ছাত্রীর বাবা থানায় মামলা দায়ের করেন।