পানছড়িতে দুই নিরীহ গ্রামবাসীর বাড়িতে সেনা-মুখোশদের তল্লাশি!

খাগড়াছড়ির পানছড়ি উপজেলার ৪নং লতিবান ইউনিয়নের শুকনোছড়ি, ললিত মোহন পাড়া ও বাবুড়ো পাড়া এলাকায় সেনাবাহিনী ও তাদের সৃষ্ট মুখোশ সন্ত্রাসীদের একটি যৌথ দল গিয়ে অন্তত দুই গ্রামবাসীর বাড়িতে হয়রানিমূলক তল্লাশি চালিয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

আজ মঙ্গলবার (২৮ ডিসেম্বর ২০২১) বিকালে এ ঘটনা ঘটে।

যাদের বাড়িতে তল্লাশি চালানো হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে তারা হলেন, শুকনোছড়ির বাসিন্দা জাগরণ চাকমা(৪৪), পিতা- ত্রিদেশ্বর চাকমা ও বাবুড়ো পাড়ার বাসিন্দা প্রবিনেন্দু চাকমা (৪২), পিতা- জগৎ জ্যোতি চাকমা।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, আজ বিকাল ৩টার সময় সেনাবাহিনীর একটি দল এবং সেনা সৃষ্ট মুখোশ সন্ত্রাসীদের ১০/১২ জনের একটি সশস্ত্র দল ৫টি মাহেন্দ্র গাড়িযোগে শুকনোছড়ি, ললিত মোহন পাড়া ও বাবুড়ো পাড়া এলাকায় হানা দেয়। এ সময় সেনা ও মুখোশ দুর্বৃত্তরা মিলে জাগরণ চাকমা ও প্রবিনেন্দু চাকমার বাড়ি ঘেরাও করে বাড়িতে থাকা নারীদের বাইরে বের করে দিয়ে ব্যাপক তল্লাশি চালায়। এ সময় মিশর নামে এক মুখোশ সন্ত্রাসী জাগরণ চাকমার স্ত্রী শান্তি দেবী চাকমার কাছ থেকে মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নিয়ে যায়।

এ সময় সেনা-মুখোশরা শুকনোছড়ি গ্রামের বাসিন্দা বিরো কান্তি চাকমার ছেলে রুনেল চাকমা (১৬)-কে ধরে নিয়ে তাদের সাথে ঘুরতে ও জাগরণ চাকমা ও প্রবিনেন্দু চাকমার বাড়ি দেখিয়ে দিতে বাধ্য করে। মুখোশরা তার কাছ থেকে ইউপিডিএফ’র কাজের সাথে যুক্ত রয়েছে কিনা তাও জিজ্ঞাসা করে বলে সে জানায়। পরে অবশ্য তাকে ছেড়ে দেয়।

এলাকার বাসিন্দারা অভিযোগ করে বলেছেন, বেশ কয়েকদিন ধরে সেনাবাহিনী ওই এলাকায় জনগণের ওপর নানা নির্যাতন ও হয়রানিমূলক কার্যক্রম চালাচ্ছে। গত ১৬ ডিসেম্বর শুকনোছড়িতে গ্রামবাসীদের নির্মিত গণপাঠাগার উদ্বোধনের সময় সাংস্কৃতি অনুষ্ঠানে সেনাবাহিনী সদস্যরা বাধা প্রদান ও তল্লাশি করেছে, গত ২৬ ডিসেম্বর ভোররাতে শুকনোছড়ি গ্রামে হানা দিয়ে ঘরবাড়িতে তল্লাশি ও দু’জনকে আটক করে নিয়ে গিয়ে হয়রানির পর ছেড়ে দেওয়া হয়।

সেনাবাহিনীর এমন অন্যায় কর্মকাণ্ডের ফলে জনগণকে আতঙ্কে দিনযাপন করতে হচ্ছে বলে এলাকাবাসীরা জানান।

এলাকাবাসী বিস্ময় প্রকাশ করে বলেন, ‌সেনাবাহিনী গ্রামে গ্রামে এসে ঘরবাড়ি তল্লাশি করে ‘সন্ত্রাসী’ খুঁজে অথচ তাদের সাথেই থাকে একদল অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী! তাহলে সেনাবাহিনীর সদস্যদের সাথে এই অস্ত্রধারীরা কি সরকারের লাইসেন্সধারী? এমন প্রশ্ন এলাকার জনগণের।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *