কাউখালীতে সেনাবাহিনী কর্তৃক আবারো এক নিরীহ গ্রামবাসীকে আটক!

রাঙামাটির কাউখালী উপজেলার ঘাগড়া ইউনিয়নের ডেবাছড়ি গ্রাম থেকে সেনাবাহিনী কর্তৃক আবারো এক নিরীহ গ্রামবাসীকে আটক করার খবর পাওয়া গেছে। গতকাল শনিবার (১১ ডিসেম্বর ২০২১) দিবাগত মধ্যরাতে সেনাবাহিনী তাদের সৃষ্ট মুখোশ দুর্বৃত্তদের সাথে নিয়ে এ আটকের ঘটনা সংঘটিত করে।

আটক ব্যক্তির নাম ধন্যা মুনি চাকমা (৪২), পিতা-মৃত ঘাড়বেঙা চাকমা, গ্রাম- ডেবাছড়ি। তিনি পেশায় একজন ক্ষুদ্র দোকানদার। এর পাশাপাশি তিনি টুকটাক কৃষিকাজ করে কোনমতে জীবিকা নির্বাহ করে আসছেন বলে গ্রামবাসীরা জানিয়েছেন।

আটক ধন্যা মুনি চাকমার স্ত্রী কুসুম বালা চাকমা এ প্রতিবেদককে জানান, “গতকাল দিবাগত রাত ২ টায় চাকমা ভাষায় ‘ওদা ওদা এক্কা উত্।  আমারে উল্লো আদামঅ পথ্থান দেগে দেগই” (দাদা দাদা একটু ঘুম থেকে উঠুন। আমাদের উল্লো গ্রামের যাওয়ার রাস্তাটা দেখিয়ে দিন।) বলে একদল লোক আমাদের ঘুম থেকে জাগিয়ে তোলে। পরে বুঝতে পারি তারা সেনাবাহিনীর লোক। তখন আমার স্বামী ঘরের বাইরে গেলে সেনাবাহিনীর সদস্যরা তাকে আটক করে এবং তাকে সাথে নিয়ে বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালায়। পরে আজ ভোরে তাকে কিছু কাঁচা গাঁজা গাছ গছিয়ে দিয়ে নিয়ে যায়। আমার স্বামীকে ছাড়িয়ে আনার জন্য সেনাদের পিছু পিছু গিয়ে তাদের কাছে অনুনয়-বিনয় করেও তারা তাকে ছেড়ে দেইনি”।

তিনি আরো বলেন, আমার স্বামী কোন গাঁজা চাষ করেননি। তিনি নিরপরাধ। তারপরেও তাকে মিথ্যাভাবে আটক করা হলো। এখন তার অবর্তমানে আমাদের কী উপায় হবে!

সেনাদের সাথে স্পাই মিল্টন তঞ্চঙ্গ্যা ও এবঙ চাকমারা ছিল বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন।

উল্লেখ্য, গত ৯ ডিসেম্বর ২০২১ দিবাগত মধ্যরাতে একই কায়দায় সেনা-মুখোশরা ঘাগড়া ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে ঘরবাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে গ্রামবাসীদের নানা হয়রানি করে। এর আগে ৫ ডিসেম্বর সেনা-মুখোশরা মিলে একই ইউনিয়নের কজইছড়ি গ্রাম থেকে এক বয়োজ্যেষ্ট মুরুব্বীসহ ৪ নিরীহ গ্রামবাসীকে আটক করে মিথ্যা মামলা দিয়ে জেলে প্রেরণ করে।

এদিকে, সেনাবাহিনী কর্তৃক এভাবে মধ্যরাতে বার বার সাধারণ গ্রামবাসীদের আটক-হয়রানির ঘটনায় এলাকাবাসী উদ্বেগ ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তারা অবিলম্বে জনগণের ওপর এমন অন্যায়-অবিচার বন্ধের দাবি জানিয়েছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *