বনভূমি ও বন্যপ্রাণী রক্ষার নামে বান্দরবানের আলীকদম ও থানচিতে ম্রো জনগোষ্ঠীকে উচ্ছেদের নীলনক্সা চালানো হচ্ছে বলে গুরুতর অভিযোগ উঠেছে শাহরিয়ার সিজার রহমান নামের এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে।
Longduksa Mougro M নামে এক ফেসবুক ব্যবহারকারী এই অভিযোগ করেছেন। নীচে ফেসবুকে দেওয়া তাঁর লেখাটি হুবহু দেওয়া হলো:
আলীকদম ও থানচিতে বনভূমি ও বন্যপ্রাণী রক্ষার নামে আদিবাসী উচ্ছেদ এর নীল নকশা চালিয়ে যাচ্ছে শাহরিয়ার রহমান সিজারঃ
ক্রিয়েটিভ কনজার্ভেটিভ এলাইয়েন্স (সিসিএ) নামে একটি সংগঠনের কারণে আজ দুই থেকে তিন বৎসর যাবৎ কষ্টে দিনানিপাত করছে পার্বত্য চট্টগ্রাম তথা বান্দরবান পার্বত্য জেলার আলীকদম উপজেলার কুরুক পাতা ইউনিয়নের দূর্গম পল্লীর কিছু সাধারণ পরিবারের অসহায় ম্রো জনগোষ্ঠীর মানুষ।
ঢাকার বাসিন্দা শাহরিয়ার সিজার রহমান নামে এক ব্যক্তি ২০১৫ সালে পর্যটন নগরী বান্দরবানে ঘুরতে যায়, থানচি উপজেলার রেমাক্রি ইউনিয়নের বড় মদক, ছোট মদক ও লেক্রি সীমানা পর্যন্ত। গহিন অরণ্যের বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে ফিরে চলে এসে ঢাকার বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে পড়ুয়া কিছু আদিবাসী শিক্ষার্থীকে ম্যানেজ করে পাড়ায় আসা-যাওয়ার মাধ্যমে শুরু করেন জায়গা দখলের পরিকল্পনা।
২০১৭- ১৮ সালে শাহরিয়ার সিজার তৈরী করেন পার্বত্য চট্টগ্রাম নিয়ে নতুন পরিকল্পনা। তন্মধ্যে উল্লেখযোগ্য একটি কচ্ছপ দিলে একটি মুরগী দেওয়ার কথা বলে এলাকার মানুষ থেকে বেশ কিছু কচ্ছপ ঢাকায় নিয়ে যায়। এলাকাবাসীর সাথে কথা বলে জানা যায়, পালে ম্রো পাড়া, দাকাটি পাড়া, আনুম পাড়া,আন্দালী পাড়াসহ আরো অনেক গ্রাম রয়েছে যেখানে শাহরিয়ার সিজার রহমান কোন উপায় না পেয়ে আলীকদম ম্রো গ্রামে গ্রামে গিয়ে কার্বারীদের অর্থের লোভ দেখিয়ে তাদের জায়গা জমিগুলোর কাগজ পত্র ও জমির চৌহদ্দি নিয়ে পাড়াগুলোতে অবৈধ সাইন বোর্ড টাঙ্গিয়ে দেন। তিনি আরো বলেন, এই এলাকায় কেউ প্রবেশ করতে পারবেন না। কিছু দিন অতিবাহিত হলে পুনঃরায় শুরু করেন অসহায় ম্রো সম্প্রদায়ের জমি দখল। ম্রো পল্লীর চার দিকে সাইন বোর্ড লাগিয়ে শুরু করেন অবৈধ নীল রঙের চাষ। কখনো সাঙ্গুর রির্জাব অঞ্চলে আবার কখনো মাতামুহুরি রির্জাব অঞ্চলে।
এদিকে বান্দরবানের থানচি উপজেলার সীমান্ত অঞ্চলের লাক পাইন ম্রো পাড়া, তাকোয়াইন ম্রো পাড়া, ত্রিপুরা পাড়া,পান ঝিরি ম্রো পাড়া,মালংঙ্গ মার্মা পাড়া,ও ম্রো পাড়া,লিক্রে ম্রো পাড়া,ত্রিপুরা পল্লী পাড়ায় তার নেতৃত্বীত্বে অবৈধ ভাবে জায়গা জমি দখল করা হয়েছে। তার কারণে অনেক আদিবাসী ম্রো ও ত্রিপুরা জনগোষ্ঠী দেশান্তরিত হয়েছে বলে জানা যায়।
অবৈধভাবে জায়গা দখল করে “নীল রঙের চাষ” “বন্য প্রাণী শিকার” সবই যেন নিত্য প্রয়োজনীয় হয়ে উঠেছে। শাহরিয়ার সিজার রহমান বিপদগামী কিছু ম্রো সম্প্রদায়ের ছেলে নিয়ে চলছে কচ্ছপ আহরনের নতুন কৌশল। স্থানীয়দের মতে, এখন বন্ধ না হলে আরো কঠিন অবস্থায় পড়তে পারে।
পার্বত্য বান্দরবানের সকল মানবাধিকার সংগঠনের সহযোগীতা চেয়ে ফোনে কথা বলেন অনেক ম্রো পাড়া কার্বারী। আলীকদম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সহযোগিতা চেয়ে ১৮ সালে ম্রো সম্প্রদায়ের লোকজন মিটিং করেছিল, বিনিময়ে উপকারের পরিবর্তে আরো ক্ষতি সাধিত হয়েছে বলে জানান।