সোমবারের মধ্যে মানিকছড়ি থানা ওসিকে প্রত্যাহার না করলে মঙ্গলবার থানা ঘেরাও করার ঘোষণা
নিজস্ব প্রতিবেদক।। মানিকছড়ি উপজেলার বাটনাতলীর ডাইনছড়ি এলাকার নুর আলম নামে এক ব্যক্তির বাড়ি থেকে উদ্ধারকৃত শ্বেত পাথরের বুদ্ধমূর্তিটি ভিক্ষু সংঘের নিকট হস্তান্তর, মূর্তি পাচারকারী নূর আলমের উপযুক্ত শাস্তি ও মূর্তিটি উদ্ধারের প্রকৃত ঘটনা লুকিয়ে মূর্তি নূর আলমকে রক্ষায় মিথ্যার আশ্রয নেয়ার কারণে মানিকছড়ি থানার ওসি মো. শাহনুর আলমকে প্রত্যাহারের দাবিতে টানা দুই দিনের মানববন্ধন ও বিক্ষোভের মুখে পুলিশ বুদ্ধমূর্তিটি ভিক্ষুসংঘের নিকট হস্তান্তর করতে বাধ্য হয়েছে। এছাড়া গতকাল রাতে বুদ্ধমূর্তিটি পাচারের চেষ্টাকারী নূর আলমকেও পুলিশ আটক করেছে বলে জানা গেছে।
উক্ত দাবিতে গতকাল শনিবার (২ এপ্রিল ২০২২) বৌদ্ধ ভিক্ষুসহ বিভিন্ন ধর্মীয় ও সামাজিক সংগঠন মানিকছড়িতে মানববন্ধন, বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিল করেন। মানিকছড়ি ভিক্ষু সংঘের আয়োজিত এই মানবন্ধন ও বিক্ষোভেব এলাকার বৌদ্ধ ভিক্ষু ছাড়াও শত শত বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের জনসাধারণ অংশগ্রহণ করে দাবির প্রতি একাত্মতা প্রকাশ করেন।
একই দাবিতে তারা আজ রবিবার (৩ এপ্রিল) খাগড়াছড়ি জেলা সদরে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেছেন। এতেও ভিক্ষুসংঘসহ বিভিন্ন ধর্মীয় ও সামাজিক সংগঠন এবং বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের জনসাধারণ করেন।
টানা দুই দিনের বিক্ষোভের প্রেক্ষিতে মানিকছড়ি থানা পুলিশ বুদ্ধমূর্তিটি ভিক্ষু সংঘের নিকট হস্তান্তর করতে বাধ্য হয়। আজ খাগড়াছড়ি সদরে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচি শেষে পুলিশ আদালত থেকে বুদ্ধমূর্তিটি নিয়ে এসে ভিক্ষু সংঘের নিকট হস্তান্তর করে।
এদিকে বিক্ষোভকারীদের মূল দাবির মধ্যে আরেকটি দাবি হচ্ছে মানিকছড়ি থানার ওসি মো. শাহনুর আলমকে প্রত্যাহার করা। বুদ্ধমূর্তিটি উদ্ধারের ঘটনা ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার দায়ে বিক্ষোভকারীরা তার প্রত্যাহার দাবি করছেন। তারা আগামীকাল সোমবার (৪ এপ্রিল)-এর মধ্যে ওসিকে প্রত্যাহার করা না হলে মঙ্গলবার (৫ এপ্রিল) থানা ঘেরাওসহ সড়ক অবরোধ করা হবে বলে ঘোষণা দিয়েছেন।
উল্লেখ্য, গত ২১ মার্চ মানিকছড়ি উপজেলার ডাইনছড়ি পশ্চিম পাড়া (লালটিলা) এলাকার বাসিন্দা নূর আলমের বাড়ি থেকে স্থানীয় চেয়ারম্যান ও ইউপি সদস্যদর সহযোগিতায় একটি শ্বেতপাথরের বুদ্ধমূর্তি উদ্ধার করেন ভিক্ষুসংঘসহ স্থানীয়রা। পরে খবর পেয়ে মানিকিছড়ি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ঘটনাস্থলে গিয়ে হস্তক্ষেপ করলে চেয়ারম্যান বুদ্ধমূর্তিটি থানায় হস্তান্তর করেন।
পরে থানার ওসি বুদ্ধমূর্তি পাচারকারী নূর আলমকে রক্ষা করতে মিথ্যার আশ্রয় নেন। তিনি মূর্তিটি বাগান থেকে পরিত্যক্ত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে আর এ সময় পাচারকারীরা পালিযে গেছে বলে সাংবাদিকদের জানান। পরে তিনি মূর্তিটিকে খাগড়াছড়ি জেলা আদালতে পাঠিয়ে দেন।