নিজস্ব প্রতিনিধি।। খাগড়াছড়ির গুইমারা উপজেলার হাফছড়ি ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের কুকিছড়ায় মাটিরাঙ্গা জোনের সেনাসদস্য কর্তৃক জেতবন বৌদ্ধ বিহার ও বুদ্ধমূর্তি ভাঙচুরের চার বছর পূর্তি উপলক্ষে সংঘদান ও ধর্মীয় স্মরণসভা করেছে কুকিছড়া পাড়া এলাকাবাসী।
আজ রবিবার (২৩ অক্টোবর ২০২২) বিকালে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এতে এলাকার ভিক্ষু সংঘ ও জনসাধারণ অংশগ্রহণ করেন।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত জিনবংশ ভিক্ষু বলেন, বিগত ২০১৮ সালের ২২ অক্টোবর দিবাগত মধ্যরাত ১:০০টার সময় মাটিরাঙ্গা জোনের একদল সেনা সদস্য কুকিছড়া পাড়ায় এসে জেতবন বৌদ্ধ বিহার ও বিহারে নির্মিত ১২ ফুট উচ্চতার বুদ্ধমূর্তি ভেঙে গুড়িয়ে দেয়। এই ঘটনার প্রতিবাদে পরদিন ২৩ অক্টোবর ও তারপর দিন ২৪ অক্টোবর পর পর দুইদিন এলাকাবাসী ব্যাপক বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ করলে চাপের মুখে খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসন এলাকাবাসীর সাথে বৈঠকের আয়োজন করেন। উক্ত বৈঠকে জনগণের দাবির প্রেক্ষিতে তৎকালীন জেলা প্রশাসক উক্ত স্থানে নতুন করে বিহার নির্মাণ ও বুদ্ধমূর্তি পুনঃস্থাপন এবং জেতবন বৌদ্ধ বিহারের নামে পাঁচ একর ভূমি রেজিষ্ট্রি করে দেয়ার প্রতিশ্রতি দেন। পরে বুদ্ধমূর্তি ও কোন রকম একটি বিহার নির্মাণ করে দেয়া হলেও এখনো ভূমি রেজিষ্ট্রি করে দেওয়া হয়নি এবং বিহার উন্নয়নেও তেমন সহযোগিতা প্রদান করা হয়নি।
জিনবংস ভিক্ষু ভবিষ্যতে বাংলাদেশে এই রকম কোন ঘটনা যাতে আর না ঘটে তার জন্য সরকারের কাছে নিশ্চয়তা চান। তিনি বলেন, বাংলাদেশের বৌদ্ধ সম্প্রদায় ও পার্বত্য চট্টগ্রামে বসবাসরত জাতিসত্তাগুলোর ধর্ম পালনসহ মৌলিক অধিকার রক্ষা করার দায়িত্ব রাষ্ট্রের। কিন্তু রাষ্ট্র তা করে না। তাই মৌলিক অধিকার প্রতিষ্ঠা করার জন্য ন্যায়সঙ্গতভাবে আন্দোলন করতে হবে বলেও তিনি মন্তব্য করেন।
তিনি তৎকালীন জেলা প্রশাসকের জেতবন বৌদ্ধ বিহারের নামে জমি রেজিষ্ট্রি করে দেয়ার প্রতিশ্রতি অবিলম্বে বাস্তবায়নের দাবি জানান।
সভায় আরো বক্তব্য রাখেন অংগ্য কারবারি ও এলাকার মুরব্বি মংসা মারমা।
সংঘদান ও সভা শেষে সন্ধ্যায় হাজার বাতি প্রজ্বালন ও ফানুস উড়িয়ে এলাকাবাসী দিনটিকে স্মরণ করেন।