শিক্ষা দিবস উপলক্ষে আজ ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২১, শুক্রবার রাঙামাটিতে বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ(পিসিপি)-এর রাঙামাটি জেলা শাখার উদ্যোগে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
পিসিপি’র রাঙামাটি জেলা শাখার সভাপতি নিকন চাকমার সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক তনুময় চাকমার সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন, গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের রাঙামাটি জেলা শাখার সভাপতি ললিত ধন চাকমা, পার্বত্য চট্টগ্রাম নারী সংঘের রাঙামাটি জেলা সভাপতি রিনা চাকমা ও হিল উইমেন্স ফেডারেশনের রাঙামাটি জেলা শাখার সদস্য রিমি চাকমা।
বক্তারা বলেন, ১৯৬২ সালের এই দিনে তৎকালীন পাকিস্তানের আইয়ুব খান সরকারের শরিফ শিক্ষা কমিশনের বাণিজ্যমুখী ও বৈষম্যমূলক শিক্ষানীতির বিরুদ্ধে ছাত্রসমাজের আন্দোলন দমন করতে আন্দোলনকারী ছাত্রদের উপর গুলি চালানো হয়েছিল। এতে অনেকে নিহত হন ও গ্রেফতার করা হয় অসংখ্য আন্দোলনকারীকে। পরবর্তীতে আইয়ুব খান সরকার শরিফ কমিশনের শিক্ষানীতি স্থগিত করতে বাধ্য হন।
বক্তারা বলেন, ’৬২ সালে ছাত্র সমাজ যে বৈষম্যমূলক শিক্ষানীতির বিরুদ্ধে আন্দোলন করেছিলেন বাংলাদেশ স্বাধীনতার পরও সে বৈষম্য দূর হয়নি। স্বাধীনতার পরেও বহুবার শিক্ষানীতি পরিবর্তন করা হয়েছে। যে সরকার ক্ষমতায় থাকে সে সরকার তার মতই শিক্ষানীতি প্রনয়ন করার ফলে দেশের শিক্ষা ব্যবস্থার তেমন কোন উন্নতি ঘটেনি। তারা পার্বত্য চট্টগ্রামসহ দেশের সংখ্যালঘু জাতিসত্তাগুলোর উচ্চ শিক্ষা গ্রহণের ক্ষেত্রে যে কোটা ব্যবস্থা ছিল তা বাতিল করার কথাও তুলে ধরেন।
বক্তারা পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের শিক্ষা সংক্রান্ত ৫ দফা বাস্তবায়নের দাবি জানিয়ে বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে জেলা পরিষদের মাধ্যমে শিক্ষা ব্যবস্থাকে ধ্বংস করে দেয়া হচ্ছে। লক্ষ লক্ষ টাকা ঘুষের বিনিময়ে অযোগ্য শিক্ষক নিয়োগ দিয়ে শিক্ষার মূল স্তর প্রাথমিক শিক্ষাকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। সরকার চাকমা, মারমা, ত্রিপুরাসহ কয়েকটি জাতিসত্তার মাতৃভাষায় প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষা প্রদানের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করলেও উপযুক্ত প্রশিক্ষণের অভাবে তা মুখ থুবড়ে পড়ে রয়েছে।
বক্তারা পার্বত্য চট্টগ্রামসহ সারাদেশে বৈষম্যমূলক শিক্ষানীতি বাতিলপূর্বক একটি গণমুখী শিক্ষা নীতি প্রণয়ন ও সকল জাতিসত্তার মাতৃভাষায় প্রাথমিক শিক্ষা নিশ্চিত করার দাবি জানান।