নিজস্ব প্রতিনিধি।। বান্দরবানের লামা উপজেলার সরই ইউনিয়নে লামা রাবার ইন্ডাস্ট্রিজ কর্তৃক ম্রো ও ত্রিপুরাদের ৪০০ একর ভূমি বেদখলের ষড়যন্ত্র বন্ধের দাবিতে এবং রেংয়েন কার্বারী পাড়াবাসীদের কলাবাগান ধ্বংস ও স্কুল নির্মাণে পুলিশের বাধাদানের প্রতিবাদে রাঙামাটির সাজেক ইউনিয়নের দুই স্থানে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ)।
আজ সোমবার (২৬ সেপ্টেম্বর ২০২২) ইউপিডিএফের সাজেক ইউনিটের উদ্যোগে মাচলঙে এবং বাঘাইছড়ি ইউনিটের উদ্যোগে বাঘাইহাট এলাকায় পৃথকভাবে এই বিক্ষোভ কর্মসূচির আয়োজন করা হয়।
এ সময় বিক্ষোভে অংশগ্রহণকারীরা “অবিলম্বে ভূমি কমিশন কার্যকর কর, অবিলম্বে ভূমি বেদখল বন্ধ কর, রাবার বাগানের নামে ভূমি বেদখল বন্ধ কর, পর্যটনের নামে ভূমি বেদখল বন্ধ কর, ভারত প্রত্যাগত শরণার্থীদের নিজ জমিতে পুনর্বাসন কর, উন্নয়নের নামে পাহাড়ে ভূমি বেদখল বন্ধ কর” ইত্যাদি দাবির শ্লোগান সম্বলিত প্ল্যাকার্ড প্রদর্শন করেন।
সকাল ১০টায় মাচলং এলাকায় বিক্ষোভ মিছিল পরবর্তী অনুষ্ঠিত সমাবেশে কিরণ চাকমার সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন ইউপিডিএফ’র সাজেক ইউনিটের সংগঠক সুমন চাকমা।
অপরদিকে দুপুর ১২টায় বাঘাইহাট এলাকায় মিছিল পরববর্তী অনুষ্ঠিত প্রতিবাদ সমাবেশে ইংগেছ চাকমার সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন ইউপিডিএফ সংগঠক আর্জেন্ট চাকমা ও গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের সাজেক থানা শাখার সভাপতি কালো বরন চাকমা ।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, বান্দরবানের লামা উপজেলার সরই ইউনিয়নে লামা রাবার ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড নামের রাবার কোম্পানি সেখানকার বসবাসকারী ম্রো ও ত্রিপুরাদের ৪০০ একর ভোগদখলীয় জুমভূমি বেদখলের জন্য নানা ষড়ন্ত্র অব্যাহত রেখেছে। তারই অংশ হিসেবে গত ২৪ সেপ্টেম্বর রেংয়ের ম্রো পাড়াবাসীর সৃজিত কলাবাগান কেটে ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে। একই দিন লামা থানা পুলিশের এসআই শামীমের নেতৃত্বে একদল পুলিশ এসে লাংকম ম্রো পাড়ায় নির্মাণাধীন স্কুলের কাজ বন্ধ করে দিয়েছে। তার আগে গত ৬ সেপ্টেম্বর রাবার কোম্পানির দুর্বৃত্তরা কলাইয়া ঝিরি নামে ম্রোদের পানির উৎসে বিষ ঢেলে দিয়ে তাদের হত্যার চেষ্টা চালিয়েছে। শুধু তাই নয়, ম্রোদের সেখান থেকে উচ্ছেদ করতে হামলা-মামলাসহ নানা হয়রানি করে যাচ্ছে।
বক্তারা আরো বলেন, বর্তমান ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকার কথিত উন্নয়নের নামে পাহাড়িদের ধ্বংস করার পাঁয়তারা চালাচ্ছে। লামা থেকে সাজেক পর্যন্ত প্রতিনিয়ত ভূমি জবরদখল চলছে। কখনো পর্যটন, কখনো সড়ক নির্মাণ, কখনো রাষ্ট্রীয় বাহিনীর ক্যাম্প স্থাপন, কখনো বিভিন্ন কোম্পানির নামে, কখনো সেটলার বাঙালিদের দিয়ে এই ভূমি আগ্রাসন চলছে। এই ভূমি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে জনগণের প্রতি আহ্বান জানান বক্তারা।
সমাবেশ থেকে বক্তারা অবিলম্বে লামা রাবার ইন্ডাস্ট্রিজ কর্তৃক ম্রো ও ত্রিপুরাদের ৪০০ একর ভূমি বেদখলের ষড়যন্ত্র বন্ধ করা, কলাবাগান ধ্বংসকারীদের আইনের আওতায় আনা, স্কুল নির্মাণের বাধা তুলে নেওয়া এবং ম্রো ও ত্রিপুরা গ্রামবাসীদের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মামলা প্রত্যাহার ও লামা রাবার ইন্ডাস্ট্রিজ’র সকল লিজ বাতিল করে কোম্পানির কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়ার দাবি জানান।