খাগড়াছড়ির মানিকছড়িতে শহীদ মংশে মারমার ২১তম মৃত্যুবার্ষিকী পালন করেছে বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ(পিসিপি) মানিকছড়ি উপজেলা শাখা।
আজ ০৩ ডিসেম্বর ২০২০, বৃহস্পতিবার ভোর ৬ টার সময় শহীদ মংশে মারমার স্মরণে নির্মিত স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করা হয়।
এরপর সকাল ১০টায় ”শহীদের আত্মবলিদান বৃথা যাবে না, বীর শহীদের চেতনায় উজ্জীবিত হয়ে শাসক গোষ্ঠীর সকল ষড়যন্ত্র নস্যাৎ করে দিই” স্লোগানে শহীদ মংশে মারমার ২১তম মৃত্যু বার্ষিকী উপলক্ষে স্মরণসভা অনুষ্ঠিত হয়। স্মরণসভা শুরুতে মংশে মারমাসহ অধিকার আদায়ের আন্দোলনে আত্ববলিদানকারী শহীদদের স্মরণে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়।
পিসিপি’র মানিকছড়ি উপজেলা শাখার সভাপতি অংচাহ্লা মারমার সভাপতিত্বে ও পাইচিমং মারমার সঞ্চালনায় স্মরণসভায় বক্তব্য রাখেন,ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট(ইউপিডিএফ) এর মানিকছড়ি ইউনিটের সংগঠক ক্যহ্লাচিং মারমা, গণতান্ত্রিক যুব ফোরাম এর কেন্দ্রীয় সদস্য ক্যামরন চাকমা, বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ(পিসিপি) এর চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখার প্রতিনিধি সোহেল চাকমা, হিল উইমেন্স ফেডারেশন এর সদস্য রিতা চাকমা। এতে আরো উপস্থিত ছিলেন পিসিপির খাগড়াছড়ি জেলা শাখার অর্থ সম্পাদক শান্ত চাকমা।
স্মরণ সভায় বক্তারা বলেন, শহীদ মংশে মারমা একজন সৎ, নীতিবান, আদর্শিক নেতা ছিলেন। পার্বত্য চট্টগ্রামের অধিকারহারা জুম্ম জনগণকে সংগঠিত করে অধিকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে তিনি পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের পতাকাতলে এসে শাসকগোষ্ঠির সকল ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে আন্দোলনে সোচ্চার ভূমিকা পালন করেন।
বক্তারা আরও বলেন, খুন, গুম, নারী ধর্ষণ, ভুমি বেদখলসহ জুম্ম জাতিসত্তাগুলোকে ধ্বংস করার জন্য শাসকগোষ্ঠীর ষড়যন্ত্রের শেষ নেই। বান্দরবানে ম্রো জাতিসত্তাকে তাদের বাস্তভিটা থেকে উচ্ছেদ করে সিকদার গ্রুপ ও সেনা কল্যান ট্রাস্ট কর্তৃক পাঁচ তারকা হোটেল নির্মান বা পর্যটনের নামে ম্রোদের হাজার একর ভুমি বেদখল করার পাঁয়তারা চলছে। এদেশের রাষ্ট্রযন্ত্রই হচ্ছে এসবের ইন্ধনদাতা। এসব নিপীড়নের-নির্যাতনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে অনেককেই নিজের জীবনকে বলিদান দিতে হয়েছে। শহীদ মংশে মারমাও অধিকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে নিজের জীবন উৎসর্গ করেছিলেন।
বক্তারা শহীদ মংশে মারমা যে আদর্শ ও চেতনা ধারণ করে লড়াই সংগ্রাম করে গেছেন সে চেতনাকে আরো শাণিত করে পার্বত্য চট্টগ্রামের নিপীড়িত জনগণের মুক্তির লড়াই জোরদার করার জন্য ছাত্র-যুব-নারী সমাজসহ মুক্তিকামী জনগণের প্রতি আহ্বান জানান।
উল্লেখ্য,১৯৯৯ সালে ৩ ডিসেম্বর শাসকগোষ্ঠীর লেলিয়ে দেওয়া সশস্ত্র দুর্বৃত্তরা মংশে মারমাকে অপহরণের পর নির্মমভাবে হত্যা করে।