গুইমারায় অংথোয়াই মারমা’র হত্যাকারীদের বিচার দাবিতে প্রচারপত্র বিলি করেছে ইউপিডিএফ

নিজস্ব প্রতিনিধি।। খাগড়াছড়ির গুইমারায় অংথোয়াই মারমা (আগুন)-এর হত্যাকারী ও তাদের মদদদাতাদের বিচার দাবিতে প্রচারপত্র বিলি করেছে ইউপিডিএফ’র গুইমারা ইউনিট।

আজ বৃহস্পতিবার (১৫ সেপ্টেম্বর ২০২২) গুইমারা উপজেলার বাইল্যাছড়ি, তৈমাতাই, দেওয়ান পাড়া, বড়থলী, আমতলী, নতুন পাড়া, সাইংগুলি পাড়া, বরইতলী, কুকিছড়া, নাক্রাই, সিন্দুকছড়ি, তৈকর্মা, বড়পিলাক, জালিয়া পাড়া, মুসলিম পাড়া, ছোট পিলাক, পরশুরাম ঘাট, কবুতরছড়া, রেংখুং, গুইমারা বাজার ও রামসু বাজার এলাকায় এই প্রচারপত্র বিলি করা হয়। একই সাথে উক্ত প্রচারপত্রটি পোস্টরিংয়ের মতো করে বিভিন্ন স্থানেও লাগানো হয়।

গত ১২ সেপ্টেম্বর প্রকাশিত উক্ত প্রচারপত্রে বলা হয়, ইউপিডিএফ সংগঠক অংথোয়াই মারমা হত্যার মূল হোতা হলো গুইমারা ব্রিগেডের সেনা নায়করা। তারাই তাদের পোষ্য সন্ত্রাসীদের দিয়ে তাকে হত্যা করেছে। ঘটনার আগের রাতে সেনারা এমবুশের জন্য সন্ত্রাসীদেরকে দেওয়ান পাড়ায় নিয়ে যায় এবং ঘটনার পর আবার সেখান থেকে তুলে নিয়ে আসে। 

 প্রচারপত্রটিতে অংথোয়াই মারমা আগুনকে হত্যার ঘটনায় জড়িতদের মধ্যে ৬ জনের নাম উল্লেখ রয়েছে। এরা হলেন ১) নবীন দেওয়ান পিতা মৃত সমীর দেওয়ান, গ্রাম হাজাছড়ি, ২ নং দুল্যাতলী ইউনিয়ন, লক্ষ্মীছড়ি; ২) উত্তম মল্লিক পিতার নাম শ্যামল মল্লিক, গ্রাম বাজার পাড়া, ৭ নং ওয়ার্ড, ১ নং গুইমারা সদর ইউনিয়ন; ৩) সাগর চৌধুরী পিতা মৃত নিরঞ্জন চৌধুরী, মাতার নাম মায়ারাণী চৌধুরী, গ্রাম দার্জিলিং টিলা, ৭ নং ওয়ার্ড, গুইমারা সদর ইউনিয়ন; ৪) সাবেক জেএসএস সদস্য লিটন মাস্টার, তার বাড়ি বড়থলী পাড়া, গুইমারা; ৫) পরিমল ত্রিপুরা পিতার নাম বিশ্ব কুমার ত্রিপুরা, গ্রাম তারাচান পাড়া; ৬) কাদের পিতার নাম সোনা মিয়া, গ্রাম হাজিপাড়া, হাফছড়ি, গুইমারা।

এতে বলা হয়, হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী নবীন দেওয়ান। তাকে সাহায্য করে উত্তম মল্লিক ও সাগর চৌধুরী। সাগর চৌধুরী একজন সাবেক আওয়ামী লীগ সদস্য। সে পারিবারিক কলহের জেরে স্ত্রী হত্যার দায়ে কিছু সময় জেলে আটক ছিল। পরে জামিনে ছাড়া পেয়ে সে ভারতে চলে যায়। তবে গত ৩ মাস আগে সেখান থেকে ফিরে এসে সেনা-সৃষ্ট সন্ত্রাসী দলে যোগ দেয়। হামলার সাথে জড়িতদের মধ্যে পরিমল ত্রিপুরা (৫ নং) ঘটনার কয়েকদিন আগে থেকে ঘটনাস্থল রেকি করতে থাকে বলে জানা যায়। সেও ৩/৪ মাস আগে সন্ত্রাসী দলে যোগ দিয়েছিল। এছাড়া জেএসএসের সাবেক সদস্য লিটন মাস্টারকে (৪নং) হামলায় ব্যবহারের জন্য একটি বন্দুক ও একটি ওয়াকিটকি সেট দেয়া হয়।

প্রচারপত্রে ৩টি দাবি জানানো হয়েছে। দাবিগুলো হলো:

১। অবিলম্বে সন্ত্রাসী ঠ্যাঙারে বাহিনী লেলিয়ে দিয়ে ইউপিডিএফের নেতাকর্মী ও সমর্থকদের হত্যা, অপহরণ, গুম, চাঁদাবাজিসহ ত্রাসের রাজত্ব বন্ধ করুন।

২। অংথোয়াই মারমা আগুন হত্যার সাথে জড়িতদের গ্রেফতার পূর্বক আইনের আওতায় নিয়ে আসুন।

৩। ভবিষ্যতে যাতে আর এ ধরনের ঘটনা না ঘটে তার নিশ্চয়তা দিন এবং সন্ত্রাসীদের মদদদাতা ও পৃষ্ঠপোষকদের চিহ্নিত করে আইন মোতাবেক শাস্তির ব্যবস্থা করুন।

উল্লেখ্য, গত ২ সেপ্টেম্বর ২০২২ সকাল পৌনে ১০ টার সময় সাংগঠনিক কাজে যাবার পথে গুইমারার দেওয়ান পাড়ায় ওঁৎ পেতে থাকা সেনা মদদপুষ্ট নব্যমুখোশ বাহিনীর নবীনের নেতৃত্বে একদল সশস্ত্র সন্ত্রাসী ইউপিডিএফ সংগঠক অংথোয়াই মারমা (আগুন)-কে গুলি করে নৃশংসভাবে হত্যা করে।

পুরো প্রচারপত্রটি নীচে দেওয়া হলো:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *