রাঙামাটিতে পর্যটকদের ফেলা বর্জ্য এখন গলার কাঁটা

রাস্তার আশেপাশের বর্জ্য নিয়ে পাহাড়ের ঢালে কিংবা হ্রদের পাড়ে ফেলছে পর্যটন করপোরেশন। ছবি: সংগৃহীত

নিজস্ব প্রতিনিধি।।হ্রদ, পাহাড়ের সৌন্দর্য দেখতে প্রতিবছর লাখো পর্যটক যান রাঙামাটিতে। কিন্তু প্লাস্টিকসহ পর্যটকদের ফেলা বিভিন্ন বর্জ্যের কারণে পর্যটন গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিভিন্ন পর্যটন স্পটে হচ্ছে ভয়াবহ দূষণ, ফলে পরিবেশে দেখা দিচ্ছে বিরূপ প্রতিক্রিয়া।

জেলার বিভিন্ন পর্যটন স্পট ঘুরে দেখা যায়, ঝুলন্ত সেতু এলাকার আশেপাশে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে প্লাস্টিকের প্লেট, খাবার প্যাকেটসহ বিভিন্ন বর্জ্য। দেখে মনে হবে এটা হয়তো কোনো ডাম্পিং স্টেশন। শুধু তাই নয় কাপ্তাই হ্রদের নীল জলরাশিও রেহায় পায়নি এই অসচেতনতা থেকে। এসব আবর্জনা একদিকে যেমন দুর্গন্ধ ও সৌন্দর্যহানি করছে, তেমনি নষ্ট করছে প্রকৃতি ও প্রাকৃতিক পরিবেশ।

কয়েকজন পর্যটকের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, অসচেতনতা নয়; বরং ডাস্টবিন না থাকায় অনেকটাই বাধ্য হয়ে এসব বর্জ্য ফেলছেন তারা।

ময়লা ফেলার নির্দিষ্ট স্থান না থাকার বিষয়টি তুলে ধরে কাপ্তাই লেক বেড়াতে যাওয়া মাহমুদ নামে এক পর্যটক বলেন, তাহলে কোথায় ময়লা ফেলব সেই জায়গাটা একটু দেখিয়ে দিন। আসলে পর্যটকরা বাধ্য হয়েই যেখানে সেখানে ময়লা ফেলছে।  

 এ সময় তিনি পর্যটন এলাকায় পর্যাপ্ত ডাস্টবিন স্থাপনের পাশাপাশি ময়লা ফেলার নির্দিষ্ট জায়গা তৈরির দাবি জানান।

এ বিষয়ে পরিবেশকর্মী ফজলে এলাহী বলেন, পৃথিবীর কয়েকটি দেশ আমি ঘুরেছি, সবখানেই বর্জ্য ব্যবস্থাপনাকে অধিক গুরুত্ব দেয়া হয়। তবে আমাদের এখানে চিত্র সম্পূর্ণ ভিন্ন। এখানে বর্জ্য ব্যবস্থাপনাকে কোনো গুরত্বই দেয়া হয় না। ফলে এ অঞ্চলের পরিবেশ ভীষণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এ বিষয়ে পর্যটক ও কর্তৃপক্ষকে সচেতন হতে হবে।

যদিও পর্যটন কর্পোরেশনের দাবি, যথাযথভাবে অপসারণ করা হচ্ছে বর্জ্য। তবে পর্যটন কর্পোরেশন সঠিকভাবে বর্জ্য ব্যবস্থাপনার কথা দাবি করলেও প্রকৃতপক্ষে রাস্তার আশপাশ থেকে বর্জ্য নিয়ে সেগুলো ধ্বংস না করে ফেলা হচ্ছে পাহাড়ের ঢালে কিংবা হ্রদের পাড়ে। ফলে সেসব বর্জ্য পরিবেশেই থেকে যাচ্ছে এবং কোনো না কোনোভাবে দূষণ সৃষ্টি করছে।  

রাঙামাটি পর্যটন করপোরেশনের ব্যবস্থাপক সৃজন বিকাশ বড়ুয়া বলেন, আমরা আমাদের কর্মী দিয়ে প্রতিদিন আবর্জনা পরিষ্কার করি। আর প্লাস্টিক বর্জ্য আলাদা ভাবে ধ্বংস করা হয়।

যদিও এ সময় ঝুলন্ত সেতু এলাকায় বছরে ঠিক কী পরিমাণ বর্জ্য ফেলেন পর্যটকরা, জানতে চাইলে তার কোনো হিসাব দিতে পারেননি তিনি।

এদিকে পর্যটকদের ভ্রমণের ক্ষেত্রে আরো দায়িত্বশীল হওয়ার অনুরোধ জানিয়ে রাঙামাটি পৌর মেয়র আকবর হোসেন চৌধুরী বলেন, আগত পর্যটকরা যাতে সেখানে সেখানে বর্জ্য না ফেলে যেন নির্দিষ্ট স্থানে ফেলেন, তাতে আমার পরিচ্ছন্নকর্মীরা তা অপসারণ করতে পারবে।

সূত্র: সময় নিউজ

Leave a Reply

Your email address will not be published.