ভারত প্রত্যগত জুম্ম শরনার্থীদের স্বদেশে ফিরিয়া আনার লক্ষ্যে ২০দফা প্যাকেজ পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির অংশ হিসেবে ১৯৯৭ সালে ২৮ মার্চ প্রথম দফায় ৫ হাজার ভারত প্রত্যাগত জুম্ম শরণার্থী প্রত্যাবাসনের কাজ শুরু হয়। চুক্তি স্বাক্ষরের পর ১৯৯৮ সালে ২০ জানুয়ারী ভারত প্রত্যাগত জুম্ম শরণার্থী প্রত্যাবাসন ও পুর্নবাসন এবং অভ্যন্তরীণ উদ্বাস্তু নির্দিষ্টকরণ ও পুর্নবাসন টাস্কফোর্স গঠিত হয়। টাস্কফোর্স গঠনের পর ২০দফা প্যাকেজ চুক্তিতে বাস্তুভিটা ফেরতসহ বিভিন্ন সুবিধা প্রদানের প্রতিশ্রুতিতে ১২,২২২(বার হাজার দুই শত) পরিবারের ৬৪,৬১২ (চৌষত্তি হাজার ছয় শত বার) জুম্ম শরণার্থীকে দেশে ফেরত আনা হয়। ২০দফা প্যাকেজে জুম্ম শরণার্থীদের নিজ বাস্তুভিটায় পুর্নবাসন, রেশন সুবিধা, চাকুরী ফেরত ও যোগ্যতার ভিত্তিতে চাকুরী প্রদানের প্রতিশ্রুতি ছিল। কিন্তু দীর্ঘ ২৩ বছরেও জুম্ম শরণার্থীদের নিজ ভিটা জমি ফেরত না দিয়ে খন্ডখন্ড ভাবে সরকারি খাসভূমিতে সামান্য কিছু সংখ্যক জুম্ম শরণার্থীদের পুর্নবাসন করা হলেও আর্থিক সঙ্কটে অভাব অনটনে দীর্ঘ দুইযুগ ধরে দিনযাপনের সহায় সম্বলহীন ভারত প্রত্যাগত জুম্ম শরনার্থীরা এবং সরেজমিনে দেখা গেছে ভারত প্রত্যাগত জুম্ম শরনার্থীরা খুবই অসহায়ত্ব মধ্যে বেঁচে আছেন। শরনার্থী সন্তান আলো প্রদীপ চাকমা (৩১) বলেন যখনি তার পরিবার ভারত থেকে বাংলাদেশে ফিরছিলেন সবকিছু বলতে না পারলেও কিছু কিছু স্মৃতি স্মরণ করতে পারেন, ভারতের ত্রিপুরার থাকুমবাড়ি থেকে বাগানবাড়ি হয়ে বাংলাদেশের মাটিরাঙ্গা সীমান্তে প্রবেশ করেন। সেখান থেকে জীপগাড়ি যোগে গ্রামে ফিরে আসলে তাদেরকে সরকারি স্কুলে সাপ্তাহখানিক রাখা হয়। তারপর ছোট্ট একটি ঘর তুলে কোনমতে আশ্রয়স্থল হয়। সরকার থেকে বুগিয়ি টেঙা ফেলেও সেগুলো সংকুলান হয় অন্যদিকে বাপের ভিটামাটিতে যেতে তো পারেননি এখন সরকার থেকে রেশন ফেলেও সেগুলো দিয়ে চলতে পারেন না আর শরনার্থী নেতারা কোনদিন তো বলেনি মিটিং মিছিল হবে। এভাবে দীর্ঘ দুইযুগ কেটে গেল বাপ মা এখন বৃদ্ধ হয়েছে কোন পরিবর্তন আসলো না, বাপ মা মরে গেলে তাদের যে ভিটামিন ছিল আমাদের কাছে কোন প্রমাণ দলিল থাকবেনা, এখন বাপ মা বেঁচে তারাই দলিল। আমাদের মতন অধিকাংশ শরনার্থীরা দুঃখ ভরা নিয়ে বসবাস করছেন অনেক শরনার্থী সরকার থেকে যে রেশনকার্ড দেওয়া হয়েছিল বিক্রি করে খেয়ে ফেলেছে। যাদের হাতে আছে তারাও মহাজন থেকে অগ্রিম চাউল টাকা নিয়ে পরিবার চালাই নয়তো বন্ধকি দিয়ে কয়েকবছর মহাজনের কাছে রেশনকার্ড জিম্মায় থাকে। যারা রেশনকার্ড জমা রেখে চাউলের টাকা দেন তারাই শরনার্থী কমিটির লোকজনের সাথে জড়িত অথবা রেশন কমিটির লোকজন। তাই শরনার্থী কমিটির লোকজনের কিছু যায় আসে না মনে করে। এভাবে চলে শরনার্থীদের দিনকাল। এছাড়াও অনেক শরনার্থী দাবি জানিয়েছেন যে, পার্বত্য চট্টগ্রাম জুম্ম শরণার্থী কল্যাণ সমিতির অনেক দূর্বলতা থাকাতে কোনকিছু করতে পারছেন না। শুধু রেশন দিলে চাউল কেটে রাখে, কোনদিন শরনার্থীদের নিয়ে মিটিং করে না। শরনার্থী সমিতির কমিটি পরিবর্তন আসলে যদি কমিটি যদি মানুষ যদি শক্ত হয় সাধারণ শরনার্থীদের নিয়ে অনেক কিছু করে দেখাতে পারে। এতোদিন শরনার্থী শক্তি নিয়ে সরকারকে কোন মেসেজ দিতে পারে নি তাই সরকার ২০দফা প্যাকেজ চুক্তি বাস্তবায়ন থেকে বিরত থেকেছেন বলে মন্তব্য করেন। যেহেতু পার্বত্য চট্টগ্রাম জুম্ম শরণার্থী কল্যাণ সমিতির দূর্বলতা কারণে শরনার্থী পরিবারের তাৎপর্য কোন ভূমিকা নেই । যার কারণে দীর্ঘ ২৪ বছর ধরে রেশন থেকে কেটে রাখা হয় সেই চাউলের কোন হিসাব নেই, সমিতির নির্বাচন না দিয়ে রদবদল না করে রেশন বিতরণ আহ্বায়ক কমিটি পিতৃ সম্পত্তি হিসেবে পরিচালিত হয় বলে অভিযোগ।
পার্বত্য চট্টগ্রাম জুম্ম শরণার্থী কল্যাণ সমিতির বিরুদ্ধে চরম ও অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ
পার্বত্য চট্টগ্রাম জুম্ম শরণার্থী কল্যাণ সমিতির বিরুদ্ধে চরম ও অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ