আন্তর্জাতিক নারী দিবসকে সামনে রেখে হিল উইমেন্স ফেডাশেন ও পার্বত্য চট্টগ্রাম নারী সংঘের যৌথ উদ্যোগে চট্টগ্রাম নগরীতে নারী নির্যাতন বিরোধী বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
আজ শুক্রবার (৬ মার্চ ২০২০) বিকালে অনুষ্ঠিত এ সমাবেশ থেকে পার্বত্য চট্টগ্রামসহ সারাদেশে নারী নির্যাতন বন্ধের দাবি জানানো হয়।
‘পাহাড়ে জাতিগত নিপীড়ন ও নারীর ওপর সহিংসতা, যৌন হয়রানি রুখে দাঁড়ান; পার্বত্য চট্টগ্রামসহ সারাদেশে নারী নির্যাতনের বিরুদ্ধে গণপ্রতিরোধ গড়ে তুলুন’ এই স্লোগানে বিকেল সাড়ে ৩টায় ডিসি হিল সামনে থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। মিছিলটি গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে প্রেসক্লাব এলাকা ঘুরে চেরাগী মোড় সামনে সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়।
সমাবেশে পার্বত্য চট্টগ্রাম নারী সংঘের নগর শাখার সভাপতি রেশমী মারমা’র সভাপতিত্বে ও সহ-সভাপতি পিংকী চাকমা সঞ্চালনায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, হিল উইমেন্স ফেডারেশন-এর কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক, মন্টি চাকমা, জাতীয় মুক্তি কাউন্সিল (পূর্ব -৩)এর চট্টগ্রাম মহানগর সদস্য সচিব এ্যাডভোকেট আমীর আব্বাস, বাংলাদেশ নারী মুক্তি কেন্দ্রের নগর শাখার নেত্রী,আসমা আক্তার, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের নগর শাখা সহ-সভাপতি দীপা মজুমদার, প্রগতিশীল চিকিৎসক ডাক্তার সুশান্ত বড়ুয়া, ছাত্র ইউনিয়নের নগর সহ-সম্পাদক, সাখাওয়াত রাফি, পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের নগর শাখা সম্পাদক অমিত চাকমা ও পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখা সভাপতি ত্রিরত্ন চাকমা প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, দেশে বিচারহীনতার সংস্কৃতির কারণে পার্বত্য চট্টগ্রামসহ সারাদেশে নারী ও শিশুর ওপর সহিংসতা, যৌন নির্যাতন ও ধর্ষণের পর হত্যার ঘটনা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। এর বিরুদ্ধে সচেতন নাগরিকসহ সকলকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে রুখে দাঁড়াতে হবে।
বক্তারা আরো বলেন, সরকার পার্বত্য চট্টগ্রামে বির্চারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের মাধ্যমে ফ্যাসিস্ট দমন-পীড়ন চালিয়ে জনগণের ন্যায্য আন্দোলনকে কন্ঠরোধ করতে চাচ্ছে। মিথ্যা প্রোপাগান্ডা চালিয়ে নিপীড়িত জনগণের লড়াকু গণতান্ত্রিক সংগঠন ইউপিডিএফ ও তার সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীদের সন্ত্রাসী হিসেবে চিত্রিত করার অপচেষ্টা চালাচ্ছে।
বক্তারা সরকারের উদ্দেশ্যে বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামের রাজনৈতিক সমস্যাকে প্রকৃত সমাধান করতে হলে দমন-পীড়নের পথ পরিহার করে সরকারকে আন্তরিকভাবে এগিয়ে আসতে হবে।
সমাবেশ থেকে বক্তারা অবিলম্বে পার্বত্য চট্টগ্রামসহ সারা দেশের নারী ও শিশুর ওপর সহিংসতা, যৌন নির্যাতন ও ধর্ষণের পর হত্যা বন্ধের দাবি জানান।
সমাবেশে নারী নির্যাতনের তথ্য তুলে ধরে বলা হয়, মানবিকার সংস্থা আইন ও শালিশ কেন্দ্র (আসক)-এর তথ্যমতে ২০১৮ সালে ৭৩২ জন ও ২০১৯ সালে ১৪১৩ জন নারী ও শিশু ধর্ষিত হয়। ডেইলি স্টার পত্রিকার তথ্যমতে গত ফেব্রুয়ারি মাসে ১১৪ জন নারী ও শিশু আশংকাজনকহারে ধর্ষিত হয়। এমনকি চলতি সপ্তাহে সারা দেশে ৮ জনের অধিক নারী ও শিশু ধর্ষণের শিকার হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়।