
নিজস্ব প্রতিনিধি।। বান্দরবানের লামা উপজেলার সরই ইউনিয়নের রেংয়েন ম্রো কার্বারী পাড়া এলাকায় লামা রাবার ইন্ডাস্ট্রিজ কর্তৃক ম্রো-ত্রিপুরাদের জুমভূমি জবরদখল করে জঙ্গল পরিষ্কার করার প্রতিবাদে রাঙামাটির কুদুকছড়িতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ (পিসিপি), গণতান্ত্রিক যুব ফোরাম, হিল উইমেন্স ফেডারেশন রাঙ্গামাটি জেলা শাখা।
আজ শুক্রবার (২৮ অক্টোবর ২০২২) বেলা ২ টার সময় বিক্ষোভ মিছিল পরববর্তী অনুষ্ঠিত সমাবেশে পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ রাঙামাটি জেলা সভাপতি নিকন চাকমার সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক তনুময় চাকমার সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন, ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ) সংগঠক নির্ণয় চাকমা, গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের কেন্দ্রীয় অর্থ সম্পাদক পায়ার্স চাকমা, হিল উইমেন্স ফেডারেশনের জেলা শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক নিশি চাকমা।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, দীর্ঘদিন যাবত লামা রাবার ইন্ডাস্ট্রিজ কর্তৃক সরই ইউনিয়নে ম্রো ও ত্রিপুরাদের ৪০০ একর জুমভূমি জবরদখল ও তাদেরকে নিজ ভূমি থেকে উচ্ছেদের ষড়যন্ত্র চলছে। তারই অংশ হিসেবে প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে গত ২৬ অক্টোবর ৬০ জনের অধিক শ্রমিক লাগিয়ে দিয়ে রেংয়েন ম্রো পাড়া এলাকায় ম্রো-ত্রিপুরাদের জুম ভূমিতে অবৈধভাবে প্রবেশ করে জোরপূর্বকভাবে জঙ্গল কেটে পরিষ্কার করা হয়েছে। স্থানীয় জনগণ, দেশের প্রগতিশীল বিভিন্ন সংগঠন ও নাগরিক সমাজের বিরোধিতা-আপত্তি সত্ত্বেও রাবার ইন্ডাস্ট্রিজ জোরজবরদস্তি কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে।

বক্তারা বলেন, ইতোপূর্বে রাবার কোম্পানি কর্তৃক ভূমি রক্ষা আন্দোলনের অন্যতম সংগঠক রংধজন ত্রিপুরার ওপর হামলা, বৌদ্ধ বিহার ভাঙচুর-বুদ্ধমূর্তি লুট, পানির উৎসে বিষ প্রয়োগ, কলা গাছ কর্তনসহ বিভিন্ন অমানবিক ঘটনার পরও কোম্পানির বিরুদ্ধে আইনগত কোন পদক্ষেপ না নেওয়ায় তারা ম্রো ও ত্রিপুরাদের উচ্ছেদে আরো বেশি বেপরোয়া হয়ে উঠেছে।
সরকার পার্বত্য চট্টগ্রাম থেকে পাহাড়িদের উচ্ছেদে নীল নক্সা বাস্তবায়ন করছে উল্লেখ করে বক্তারা বলেন, ভূমি বেদখল শুধু বান্দরবানে নয়, সমগ্র পার্বত্য চট্টগ্রাম জুড়ে এটা চলছে। কখনো উন্নয়নের নামে, কখনো পর্যটনের নামে, কখনো রাষ্ট্রীয় বাহিনীর ক্যাম্প স্থাপনের নামে এই ভূমি বেদখল ও পাহাড়ি উচ্ছেদ প্রক্রিয়া। তাই এই ভূমি বেদখলের বিরুদ্ধে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে প্রতিবাদ-প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানান বক্তারা।
সমাবেশ থেকে বক্তারা অবিলম্বে লামায় ম্রো ও ত্রিপুরাদের ৪০০ একর জুমভূমি বেদখল বন্ধ করা, ভূমিদস্যু লামা রাবার ইন্ডাস্ট্রিজের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ ও সকল লিজ চুক্তি বাতিল করা এবং পাহাড়িদের প্রথাগত ভূমি অধিকারের স্বীকৃতি দেয়ার দাবি জানান।