নিজস্ব প্রতিবেদক।। বান্দরবানে লামা উপজেলাধীন সরই ইউনিয়নে লামা রাবার ইন্ডাস্ট্রিজ কর্তৃক ডলুছড়ি ও সরই মৌজায় ত্রিপুরা ও ম্রো জাতিসত্তার ৪০০ একরের অধিক ভূমি জবরদখলের প্রতিবাদে ও ভূমি দস্যুদের গ্রেফতারের দাবিতে চট্টগ্রাম নগরীতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে পাহাড়ের তিন সংগঠন পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ, গণতান্ত্রিক যুব ফোরাম।
আজ সোমবার (১১ এপ্রিল ২০২২) বিকাল ৪ টায় নগরীর ডিসি হিলের সামনে থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। মিছিলটি চেরাগি পাহাড় মোড় ঘুরে প্রেস ক্লাবের সামনে সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়।
সমাবেশে পিসিপি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি মিটন চাকমার সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের নগর কমিটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি উচিংশৈ চাক(শুভ) ও পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের কেন্দ্রীয় দপ্তর সম্পাদক শুভাশীষ চাকমা।
বক্তারা বলেন, পাবর্ত্য চট্টগ্রামের প্রধান সামাজিক উৎসব বিঝু, বৈসুক, সাংগ্রাই, চাংক্রান, বিহু ঘনিয়ে এলে প্রশাসনের মদদে সাম্প্রদায়িক হামলা-মামলা ও ভূমি বেদখলের উস্কানি দেওয়া হয়। এতে পাহাড়ি জনগণের জাতীয় জীবনে ভীতি ও আতঙ্ক তৈরি হয়।
বক্তারা অবিলম্বে লামায় রাবার কোম্পানি কর্তৃক পাহাড়িদের ভূমি বেদখল বন্ধ করা, সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে ভূমিদস্যু ‘লামা রাবার ইন্ডাস্ট্রিজ” কোম্পানির বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ ও পার্বত্য চট্টগ্রামে জাতিসত্তাসমূহের ঐতিহ্যবাহী উৎসবের অধিকার নিশ্চিত করার আহ্বান জানান।
উল্লেখ্য, গত শনিবার (৯ এপ্রিল ২০২২) সকাল ৯টার দিকে বান্দরবানের লামা উপজেলা সরই ইউনিয়নের ডুলুছড়ি মৌজার ৪নং ওয়ার্ডের লাংকম ম্রো কার্বারি পাড়া, রেংয়েন ম্রো কার্বারি পাড়া ও জয়চন্দ্র ত্রিপুরা কার্বারি পাড়ায় পাহাড়িদের প্রায় ৪০০ একর ভূমি জোরপূর্বকভাবে বেদখলের জন্য ‘লামা রাবার ইন্ডাস্ট্রিজ’ কোম্পানির উপ-পরিচালক মো. কামাল উদ্দিন নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার বাইশারি ও কক্সবাজার এলাকা থেকে শ’খানেক বহিরাগত বাঙালি ও রোহিঙ্গাকে লাঠিসোটা ও ধারালো অস্ত্রসহ নিয়ে এসে পাহাড়িদের লাগানো গাছপালা কেটে দেয় ও জঙ্গল পরিষ্কার করে। এতে পাহাড়িরা বাধা দেওয়ার চেষ্টা করলে বহিরাগতরা তাদেরকে মেরে ফেলার হুমকি দেয় এবং একজন পাহাড়িকে মারতে পারলে তারা দশ লাখ টাকা পাবে বলেও উল্লেখ করে। এ ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি ভিডিও ভাইরাল হয়। এতে দেখা যায় বহিরাগতরা কেউ লাঠিসোটা দিয়ে পাহারা দিচ্ছে, আর কেউ জঙ্গল পরিষ্কার করার কাজ করছে। কিন্তু এত কিছু হবার পরেও প্রশাসন ভূমিদস্যুদের বিরুদ্ধে আইনগত কোন পদক্ষেপ নেয়নি।