নিজস্ব প্রতিনিধি।। পার্বত্য চট্টগ্রামে মানবাধিকার লঙ্ঘন বন্ধের দাবিতে এবং জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার মিশেল ব্যাচলেটকে পার্বত্য চট্টগ্রামের প্রবেশের অনুমতি না দেয়ার প্রতিবাদে রাঙামাটির সাজেকে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে বৃহত্তর পার্বত্য চট্রগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ (পিসিপি), গণতান্ত্রিক যুব ফোরাম (ডিওয়াইএফ) ও পার্বত্য চট্টগ্রাম নারী সংঘ।
আজ সোমবার (১৫ আগস্ট ২০২২) সকাল ১০টায় সাজেক ইউনিয়নের বাঘাইহাট এলাকায় তিন সংগঠনের বাঘাইছড়ি উপজেলা শাখাসমুহের যৌথ উদ্যোগে এই বিক্ষোভের আয়োজন করা হয়।
মিছিল পরবর্তী সমাবেশে পিসিপির বাঘাইছড়ি উপজেলা সভাপতি লেলিন চাকমার সভাপতিত্বে ও সাধারন সম্পাদক নিউটন চাকমার সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন পার্বত্য চট্টগ্রাম নারী সংঘের কেন্দ্রীয় সদস্য ও বাঘাইছড়ি উপজেলা সভাপতি উর্মিলা চাকমা, ইউপিডিএফ সংগঠক আর্জেন্ট চাকমা ও গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের সাজেক থানা শাখার সভাপতি কালো বরণ চাকমা প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে রাষ্ট্রীয় বাহিনী কর্তৃক বিচারবহির্ভুত হত্যা, অন্যায় গ্রেফতার, মিথ্যা মামলায় জেলে প্রেরণ, ঘরবাড়ি তল্লাশি-হয়রানি, ভূমি বেদখল, নারী নির্যাতনের ঘটনা প্রতিনিয়ত ঘটেই চলেছে। দীর্ঘ যুগ যুগ ধরে সেনাশাসন জারি রেখে তারা অব্যাহতভাবে এসব মানবাধিকার লঙ্ঘন করে যাচ্ছে। কিন্তু এসব ঘটনার কোন বিচার হয় না। পার্বত্য চট্টগ্রামে সংঘটিত মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা আড়াল করতেই সরকার পরিকল্পিতভাবে জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশারকে পার্বত্য চট্টগ্রামে প্রবেশের অনুমতি দিচ্ছে না।
বক্তারা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম কি বাংলাদেশ থেকে আলাদা কোন অঞ্চল যে এখানে জাতিসংঘের প্রতিনিধিকে পর্যন্ত অনুমতি নিয়ে প্রবেশ করতে হবে? তবে জাতিসংঘের প্রতিনিধিকে প্রবেশ করতে না দেয়ার মাধ্যমেই কিন্তু পার্বত্য চট্টগ্রামে রাষ্ট্রীয় মানবাধিকার লঙ্ঘনের চিত্র আরো বেশি স্পষ্ট হয়েছে বলে বক্তারা উল্লেখ করেন।
বক্তারা সম্প্রতি জেএসএস সন্তু লার্মা গ্রুপকে দিয়ে ভ্রাতৃঘাতি সংঘাত জোরদার করতে রাষ্ট্রীয় বাহিনীর অপতৎপরতা সম্পর্কে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে বলেন, রাষ্ট্রীয় বাহিনী শুধু নিজেরা হত্যা, নির্যাতন, হয়রানি করেই ক্ষা্ন্ত হচ্ছে না। তারা নব্যমুখোশ ও জেএসএস সন্তু গ্রুপকে মদদ ও সহযোগিতা দিয়ে খুন-খারাবি, অপহরণসহ নানা সন্ত্রাসী কার্যকলাপে লিপ্ত রয়েছে। তাই সকলকে সজাগ ও সতর্ক থাকতে হবে।
সমাবেশ থেকে বক্তারা মানবাধিকার পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের জন্য জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনের প্রধানকে পার্বত্য চট্টগ্রামে প্রবেশের অনুমতি প্রদান করা এবং পার্বত্য চট্টগ্রামসহ সারাদেশে খুন, গুম, অপহরণ, অন্যায় আটক, হামলা, মামলা, নারী নির্যাতনসহ সকল ধরনের মানবাধিকার লঙ্ঘন বন্ধ করা ও পার্বত্য চট্টগ্রাম থেকে সেনাশাসন তুলে নিয়ে সম্পূর্ণ গণতান্ত্রিক পরিবেশ সৃষ্টির দাবি জানান।