
নিজস্ব প্রতিবেদক।। খাগড়াড়ির পানছড়িতে জেএসএস-এর প্রতি ভ্রাতৃঘাতি সংঘাত বন্ধের আহ্বান জানিয়ে এবং পানছড়ি ও দীঘিনালায় জেএসএস কর্তৃক ইউপিডিএফের ওপর হামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে পানছড়ি ভ্রাতৃঘাতি সংঘাত প্রতিরোধ কমিটি।
আজ শনিবার (১১জুন ২০২২) বেলা ১.৩০টার সময় মনিপুর থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। মিছিলটি বড়কলক থেকে ঘুরে পুনরায় মনিপুর এলাকায় এসে সমাবেশ করেন।
সমাবেশে ভ্রাতৃঘাতি সংঘাত প্রতিরোধ কমিটির আহ্বায়ক উপজেলা চেয়ারম্যান শান্তি জীবন চাকমার সভাপতিত্বে ও কমিটির সদস্য সঞ্চয় চাকমার সঞ্চালনায় বক্তব্য রাাখেন পার্বত্য চট্টগ্রাম নারী সংঘের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক প্রনিতা চাকমা, ২নং চেংঙ্গী ইউনিয়ন সাবেক চেয়ারম্যান কালাচাঁদ চাকমা, ভ্রাতিঘাতি সংঘাত প্রতিরোধ কমিটির সদস্য ও ২নং চেংঙ্গী ইউনিয়ন সাবেক চেয়ারম্যান অনিল চন্দ্র চাকমা প্রমুখ।
বক্তারা আজ পানছড়ি ও দীঘিনালায় জেএসএস কর্তৃক ইউপিডিএফের ওপর সশস্ত্র হামলার ঘটনাকে দুঃখজনক উল্লেখ করে এর জন্য গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন এবং ঘটনার নিন্দা জানান।

উপজেলা চেয়ারম্যান শান্তি জীবন চাকমা বলেন, গত ৯ জুন আমাদের উপস্থিতিতেই মধ্যস্থতাকারীদের মাধ্যমে ইউপিডিএফ’র দাবিনামা সরকারের কাছে পেশ করা হয়েছে। আর এটা সহ্য করতে না পেরে জেএসএস হীন চক্রান্তের বশবর্তী হয়ে আজ ইউপিডিএফের উপর হামলা করেছে। শাসকগোষ্ঠীর ইন্ধনেই এই হামলা হয়েছে বলে তিনি অভিযোগ করেন।
তিনি বলেন, শাসকগোষ্ঠি একদিকে নিপীড়ন-নির্যাতন চালাচ্ছে, অপরদিকে ভাইয়ে ভাইয়ে ভ্রাতৃঘাতি সংঘাত লাগিয়ে দিয়ে আমাদেরকে ধ্বংস করার চক্রান্তে লিপ্ত রয়েছে।
তিনি আরো বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে বসবাসরত চাকমা, মারমা, ত্রিপুরা, খিয়াং, ম্রোসহ ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র জাতিগুলো আমরা সবাই শাসকগোষ্ঠী দ্বারা নিপীড়িত-নির্যাতিত। এই নিপীড়িত জাতির অধিকার আদায়ের জন্য আন্দোলন করতে হলে আমাদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়েই আন্দোলন করতে হবে। ভাইয়ে ভাইয়ে সংঘাত, হানাহানি করে কখনো অধিকার আদায় করা যাবে না।
কালাচাঁদ চাকমা বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে দীর্ঘ ভ্রাতৃঘাতি সংঘাতের ফলে আমরা অপূরণীয় ক্ষতির শিকার হয়েছি। অনেকে স্বামীহারা, অনেকে পুত্রহারা, অনেকে পিতাহারা হয়েছেন। অনেক সম্ভাবনাময় নেতাকে আমরা হারিয়েছি। তাই আমরা আর ভাইয়ে ভাইয়ে সংঘাত, হানাহানি, রক্তপাত চাই না। কারোর মায়ের বুক খালি হোক চাই না।
তিনি অবিলম্বে সংঘাত বন্ধের জন্য জনসংহতি সমিতির সভাপতি সন্তু লারমার প্রতি বিনীত আহ্বান জানান।

সমাবেশ উপস্থিত সবাই ভাইয়ে ভাইয়ে মারামারি, হানাহানি চাই না বলে হাত উঁচিয়ে শ্লোগান দেন। এছাড়া সমাবেশে “ভ্রাতৃঘাতি সংঘাত নয়, আন্দোলন চাই; সংঘাত নয় ঐক্য চাই; অবিলম্বে ভ্রাতৃঘাতি সংঘাত বন্ধ কর” ইত্যাদি দাবির শ্লোগান লেখা প্ল্যাকার্ড প্রদর্শন করেন।
সমাবেশ থেকে অবিলম্বে ভ্রাতৃঘাতি সংঘাত বন্ধ করে আলোচনার মাধ্যমে ঐক্যবদ্ধভাবে আন্দোলন গড়ে তোলার জন্য জেএসএস ও ইউপিডিএফের প্রতি আহ্বান জানানো হয়।