রাঙামাটির নান্যাচরের বেতছড়িতে সেটলার কর্তৃক পাহাড়িদের ভূমি বেদখল ও হামলার প্রতিবাদে চট্টগ্রামে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে ইউপিডিএফভুক্ত তিন সংগঠন গণতান্ত্রিক যুব ফোরাম, পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ ও হিল উইমেন্স ফেডারেশন।
আজ মঙ্গলবার (১১ ফেব্রুয়ারি) বিকেল সাড়ে ৩টায় ডিসি হিল মোড় সামনে থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। মিছিলটি প্রেসক্লাব এলাকা প্রদক্ষিণ করে চেরাগী মোড় সামনে সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়।
সমাবেশে পিসিপি’র চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখা নেতা সোহেল চাকমা’র সঞ্চালনায় ও গণতান্ত্রিক যুব ফোরাম চট্টগ্রাম মহানগর শাখার সহ-সভাপতি শুভ চাক’র সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন, পিসিপি চবি শাখা সভাপতি, ত্রিরত্ন চাকমা, হিল উইমেন্স ফেডারেশন নগর শাখা সদস্য সচিব রিতা চাকমা ও বিএমএসসি চবি শাখা সাধারণ সম্পাদক রুইম্রোসাইং মারমা প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, সরকার উন্নয়নের নামে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে পাহাড়িদের নিজ ভূমি থেকে বিতারণের পাঁয়তারা করছে। নান্যাচরের বেতছড়িতেও ঠিক একই কায়দায় ষড়যন্ত্র করছে। শুধু বেতছড়িতে নয় বান্দরবান নাইক্ষ্যংছড়িসহ পার্বত্য চট্টগ্রামের পাহাড়িদের ভূমি বেদখলের ষড়যন্ত্র অব্যাহত রেখেছে।
বক্তারা আরো বলেন, সরকার পার্বত্য চট্টগ্রামের নিপীড়িত জনগণের রাজনৈতিক সমস্যা সমাধানের আন্তরিক নয়। বরং আন্দোলনকামী রাজনৈতিক কর্মীদের সন্ত্রাসী আখ্যা দিয়ে দমন পীড়ন জারি রেখেছে।
বক্তারা অনতিবিলম্বে পাহাড়িদের প্রথাগত ভূমি আইনের স্বীকৃতি ও সেটলারদের পার্বত্য চট্টগ্রামের বাইরে সমতলে সম্মানজনকভাবে পুনর্বাসনের দাবি জানান।
উল্লেখ্য, গত ২০১০ সালের ১৬ অক্টোবর রাঙামাটির বাসিন্দা মিন্টু চাকমা নান্যাচরের তৈচাকমা মৌজাধীন বেতছড়ি দ্বিচান পাড়ায় শিখা মার(সঞ্জিতা চাকমা) কাছ থেকে ১ লক্ষ ৭ হাজার ৫০০ টাকায় ২ একর ৫০ শতক জমি ক্রয় করেন। এই জমির আসল মালিক হলেন, সঞ্জিতা চাকমার পিতা রবিচন্দ্র চাকমা। কিন্তু গত ৫ ফেব্রুয়ারি হাবিব নামে জনৈক সেটেলার উক্ত জমিতে জোরপূর্বক একটি ঘর নির্মাণ করেন। এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ সত্ত্বেও তিনি গত ৭ ফেব্রুয়ারি আরো ১০ পরিবার সেটেলারসহ সেনাবাহিনীর সদস্যদের পাহাড়ায় আবার সেখানে বাড়ি নির্মাণ করে জমিটি দখলের চেষ্টা চালাচ্ছে।
এদিকে, উক্ত জমিটি বেদখলের উদ্দেশ্যে আজ সকালে সেটলাররা আবারো সংঘবদ্ধ হয়ে ঘর তৈরি করতে গেলে পাহাড়িরা বাধা দেয়। এতে সেটলারা উত্তেজিত হলে চরম উত্তেজনাকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়।
এ সময় সেটলাররা রাঙামাটি-খাগড়াছড়ি সড়কে পাহাড়ি যাত্রীদের ওপর চড়াও হয়। মোটর সাইকেলযোগে যাবার সময় বগাছড়িতে তাদের হামলায় শিকার হয়ে আনন্দ মোহন চাকমা (৬৫) ও সুফল চাকমা নামে দুই পাহাড়ি আহত হয়। এদের মধ্যে আনন্দ মোহন চাকমাকে গুরুতর আহত অবস্থায় রাঙামাটি মেডিকেল হাসপাতলে ভর্তি করা হয়েছে।