খাগড়াছড়ির মহালছড়িতে পাহাড়ি গ্রামে হামলার প্রতিবাদে ভারতের ত্রিপুরায় বিক্ষোভ

নিজস্ব প্রতিনিধি।। বাংলাদেশের পার্বত্য চট্টগ্রামের খাগড়াছড়ি জেলার মহালছড়িতে সেটলার বাঙালি কর্তৃক পাহাড়িদের ৩৭টি বাড়িতে অগ্নিসংযোগ, লুটপাটসহ বাংলাদেশে সংখ্যালঘু হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টানদের ওপর অব্যাহত হামলার প্রতিবাদে ভারতের ত্রিপুরায় বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।

গতকাল রবিবার (১৭ জুলাই ২০২২) দুপুর ১২টার সময় উত্তর ত্রিপুরা জেলার কাঞ্চনপুর সাবডিভিশন সদরে ‘ত্রিপুরা চাকমা স্টুডেন্টস এসোসিয়েশন’-এর কাঞ্চনপুর শাখার উদ্যোগে এই বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশের আয়োজন করা হয়।

প্রথমে বিভিন্ন শ্লোগান দিয়ে কাঞ্চনপুরের প্রধান সড়কে বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। এতে ‍“পাহাড়ি জনগণের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ষড়যন্ত্র মানি না, মানবো না; পার্বত্য চট্টগ্রাম থেকে সেনা ক্যাম্প তুলে নাও, নিতে হবে; পার্বত্য চট্টগ্রাম থেকে বাঙালি সেটেলারদের প্রত্যাহার কর, করতে হবে; মহালছড়িতে অগ্নিসংযোগকারীদের দৃষ্টান্তমূলকভাবে শাস্তি দাও, দিতে হবে; বাংলাদেশে কেন বারবার হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান ইত্যাদি সংখ্যালঘুর উপর আক্রমণ চলে শেখ হাসিনার জবাব চাই” ইত্যাদি শ্লোগান দেন মিছিলকারীরা। এছাড়া বিভিন্ন শ্লোগান লেখা প্ল্যাকার্ডও বহন করেন।

মিছিল শেষে কাঞ্চনপুর সুপার মার্কেটের সামনে তারা এক প্রতিবাদ সমাবেশ করেন। সমাবেশে ত্রিপুরা চাকমা স্টুডেন্টস এসোসিয়েশনের সাংগঠনিক সম্পাদক পান্থ চাকমার সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন ত্রিপুরা চাকমা স্টুডেন্টস এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক সুবল চাকমা, সাবেক সভাপতি প্রকৌশলী অনিরুদ্ধ চাকমা প্রমুখ।

বক্তারা বলেন, সম্প্রতি গত ৫ জুলাই সেটলার বাঙালি কর্তৃক পার্বত্য চট্টগ্রামে খাগড়াছড়ির মহালছড়িতে পাহাড়িদের ৩৭টি বাড়িতে অগ্নিসংযোগ, লুটপাট চালিয়ে তাদেরকে সর্বস্বান্ত করা হয়েছে। এ ধরনের ঘটনা সেখানে প্রত্যেক বছর প্রায়ই ঘটে চলেছে।

২০১৭ সালের ২ জুনেও লংগদুতে দুই শতাধিক পাহাড়ি গ্রামবাসীর বাড়ি ও বৌদ্ধ মন্দির পুড়িয়ে দেওয়া হয়। এসব হামলার পেছনে সেখানকার সেনাবাহিনী ও পুলিশ প্রশাসনের মদদ রয়েছে বলে বক্তারা অভিযোগ করেন।

তারা আরো বলেন, বাংলাদেশে প্রায়ই এখন হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান ইত্যাদি ধর্মীয় সংখ্যালঘু মানুষের উপর হামলা হচ্ছে। মা-বোনেরা নির্বিঘ্নে চলাফেরা করতে পারে না। প্রায়ই তাদেরকে অত্যাচারের সম্মুখীন হতে হচ্ছে। এসব সংখ্যালঘুদেরকে নিজেদের অধিকারের জন্য বারবার লড়াই করতে হচ্ছে।

বক্তারা সেটলার বাঙালি ও বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর এহেন ঘৃণ্য কর্মকান্ডের তীব্র নিন্দা জানান এবং সংঘটিত এসব ঘটনার বিচার ও হামলা বন্ধ না হলে শেখ হাসিনার সরকার ও বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে বৃহত্তর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন।

বক্তারা খাগড়াছড়ির মহালছড়িতে পাহাড়িদের ৩৭টি বাড়িতে অগ্নিসংযোগকারী সেটলার বাঙালিদের অনতিবিলম্বে গ্রেফতার করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ, বাংলাদেশের সংখ্যালঘু হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টানদের ওপর অব্যাহত হামলা বন্ধ করা এবং পার্বত্য চট্টগ্রাম থেকে সেটেলার বাঙালিদের সরিয়ে নেয়া ও বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে পার্বত্য চট্টগ্রাম থেকে প্রত্যাহা জন্য বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *