জুলাই অভ্যুত্থানের পর রাজনীতিতে কোনো পরিবর্তন হয়নি: সিপিবি সভাপতি মোহাম্মদ শাহ আলম

বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সভাপতি মোহাম্মদ শাহ আলম বলেছেন, জুলাই অভ্যুত্থানের পর দেশের রাজনীতিতে কোনো মৌলিক পরিবর্তন আসেনি। তিনি অভিযোগ করেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারের আমলে গুম-খুনের রাজনীতি প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, এবং বর্তমানে রাজনীতি শাসন করছে মব সন্ত্রাস ও বুলডোজারের রাজনীতি।

শুক্রবার বিকেলে রাজধানীর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে সিপিবি ঢাকা মহানগর উত্তর জেলা কমিটির দ্বিতীয় সম্মেলনে তিনি এই মন্তব্য করেন। সিপিবি সভাপতি আরও বলেন, ১৯৭১ ও ১৯৯০ সালের গণ-অভ্যুত্থানে যেসব ছাত্র নেতৃত্ব দিয়েছিল, তারা কখনো নতুন দল গঠন করেনি কিংবা ক্ষমতার অংশীদার হয়নি। তারা ছিলেন সাধারণ মানুষের চোখের মণি।

সিপিবি সভাপতির সমালোচনা

এছাড়া, সিপিবি সভাপতি সিপিবি’র পক্ষ থেকে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) নেতাদের সমালোচনা করে বলেন, তারা এখন ক্ষমতার অংশীদার হয়ে বিলাসবহুল জীবনযাপন করছেন, অথচ একই সঙ্গে বৈষম্যের বিরুদ্ধে কথা বলছেন। শাহ আলম আরও বলেন, “এত তামাশা আর না, এভাবে কথা বলা উচিত নয়।”

তিনি বলেন, ৫ আগস্টের আগে স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা গণতন্ত্রের শত্রু ছিলেন, আর ৫ আগস্টের পর যারা জাতীয় নির্বাচন বিলম্বিত করতে চাচ্ছেন, তারা এখন গণতন্ত্র ও জনগণের শত্রু। তার মতে, জুলাই অভ্যুত্থানের পর সাম্প্রদায়িক এবং সাম্রাজ্যবাদী শক্তি দেশের জনগণ এবং গণতন্ত্রের জন্য সবচেয়ে বড় হুমকি হয়ে উঠেছে।

বর্তমান পরিস্থিতি ও সরকারের ভূমিকা

মোহাম্মদ শাহ আলম বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে আইনের শাসন নেই এবং মব সন্ত্রাস চলছে, যা সরকারও যথাযথভাবে প্রতিরোধ করছে না। তিনি বলেন, সরকার এবং তাদের সমর্থকরা একটি ‘কিংস পার্টি’ গঠন করেছে, যার ফলে বর্তমান সরকারের নিরপেক্ষতা নিয়ে জনগণের মধ্যে সন্দেহ সৃষ্টি হয়েছে।

সিপিবির অন্যান্য নেতাদের বক্তব্য

সিপিবি কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য দিবালোক সিংহ বলেন, যারা ১৯৭১ সালে পরাজিত হয়েছিল, তারা এখন খেলাফত প্রতিষ্ঠা করতে চায়। তিনি পাকিস্তানের মন্ত্রীদের আগমন ও তাদের বক্তব্যের বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। সিপিবি ঢাকা মহানগর উত্তরের সভাপতি সাজেদুল হক, সাধারণ সম্পাদক লুনা নুর এবং অন্যান্য নেতারা রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও দেশের সাধারণ মানুষের অবস্থার পরিবর্তন না হওয়া নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন।

সম্মেলন ও সাংস্কৃতিক পরিবেশনা

সম্মেলন শেষে লাল পতাকা মিছিল বের হয়। অনুষ্ঠানে সাংস্কৃতিক সংগঠন বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী গীতি-আলেখ্য “জাগো বাহে কোনঠে সবায়” পরিবেশন করে। আগামীকাল শনিবার সকাল ৯টা থেকে সম্মেলনের সাংগঠনিক অধিবেশন অনুষ্ঠিত হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *